দাসপাড়ায় মানবাজার-পুরুলিয়া রাস্তা অবরোধে সামিল এলাকার মহিলারাও। —নিজস্ব চিত্র।
পানীয় জলের দাবিতে শুক্রবার সকালে মানবাজারে দু’টি জায়গায় স্থানীয় বাসিন্দারা পথ অবরোধ করলেন। তার জেরে যানবাহন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। দেড় ঘণ্টা পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
মানবাজার-পুরুলিয়া রাস্তায় দাসপাড়ায় এ দিন সকালে প্রথমে অবরোধ শুরু হয়। এলাকার মহিলারা হাঁড়ি, বালতি, জলের পাত্র রাস্তায় নামিয়ে অবরোধে সামিল হয়েছিলেন। বাঁশ বেঁধে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। দাসপাড়ার বাসিন্দা সাধু কুণ্ড,ু রকেট মহিন্দররা বলেন, “বুধবার থেকে পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। খাবার জলের সংস্থান করতে বাড়ির মহিলারা হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন। অথচ প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। বাধ্য হয়ে আমরা অবরোধে নেমেছি।” দাসপাড়ায় অবরোধ শুরু হওয়ায় পুরুলিয়া ও বাঁকুড়াগামী বাসগুলিকে বাইপাসের রাস্তায় পোদ্দারপাড়া হয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। কিছুক্ষণ পরে পোদ্দারপাড়ার মোড়েও এলাকার বাসিন্দারা জলের দাবিতে বাঁশ বেঁধে অবরোধ শুরু করেন। দুই অবরোধের জেরে মানবাজারের ভিতর দিয়ে যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
পোদ্দারপাড়ার বাসিন্দা রাজা দত্ত, অরূপ গঁরাই, লাল্টু দত্তদের ক্ষোভ, “কয়েক মাস ধরে আমরা পানীয় জলের সমস্যায় ভুগছি। স্থানীয় হরিমন্দিরের নল থেকে দুর্গন্ধযুক্ত জল বের হওয়ায় আমরা কেউ ওই জল খাই না।” তাঁরা জানান, সংবাদমাধ্যমে এই নিয়ে খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে ব্লক প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিকরা পরীক্ষা করে বলেন নর্দমার জল পানীয় জলের পাইপে মিশে যাওয়ায় এই বিপত্তি ঘটছে। তাঁরা দাসপাড়া থেকে হরিমন্দির মোড় পর্যন্ত পাইপ বদলে দেওয়া হবে বলে আশ্বাসও দেন। যদিও এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই পাইপ বদলান নিয়েও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কারচুপি করেছেন। পাইপ বসানোর মাপ অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ গর্ত করা হয়নি। তা ছাড়া, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হরিমন্দির মোড় অবধি পাইপ লাইন নিয়ে যাওয়া হয়নি। কয়েক দিন আগে মহিলারা এই সব অভিযোগে ঠিকাদারকে ঘেরাও করেছিলেন। অন্য দিকে, দাসপাড়ার বাসিন্দারা জানান, ঢিমেতালে কাজ হওয়ার জন্য পানীয় জল সরবরাহে দেরি হচ্ছে। বুধবার থেকে কয়েকটি পাড়ার বাসিন্দারা একফোঁটা জল পাননি। বিডিও আশ্বাস দিয়েছিলেন জল সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ট্যাঙ্কারে করে জল দেওয়া হবে। সেটাও না হওয়ায় সকলে অবরোধে সামিল হয়েছেন। মানবাজারের বিডিও সায়ক দেব বলেন, “জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিকদের সাথে আমি কথা বলে দ্রুত জল সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।’ এ দিন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সৌহার্দ্য ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।