বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসছেন সেচমন্ত্রী। পাশে ডিএম। —নিজস্ব চিত্র
ছোট-বড় সেচ খাল, নদী বাঁধ, কালভার্ট তৈরি ও সংস্কারের জন্য ৬২ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দের ঘোষণা করলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজের দুই মন্ত্রী, জেলা পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও সেচ দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে রবিবার বোলপুরে বৈঠক করেন রাজীববাবু। বোলপুর মহকুমাশাসকের সভাগৃহে ঘণ্টা দু’য়েকের ওই বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের শুধু বীরভূমের জন্যে ওই ব্যয় বরাদ্দের কথা জানান।
সেচমন্ত্রীর কথায়, ‘‘বীরভূমের প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ নজর রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে, জেলার সেচ ব্যাবস্থাকে ঢেলে সাজাতে গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল থেকে ওই ৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে।’’ মন্ত্রী আরও জানান, জেলার ২৯ ছোট-বড় সেচ খাল, নদী বাঁধ, কালভার্ট তৈরি ও সংস্কারের জন্য জেলা প্রশাসন প্রস্তাব দিয়েছে। ৩২টি ছোট ও বড় সেতুতে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। এ ছাড়াও অজয়, ময়ূরাক্ষী, ব্রাহ্মণী, দ্বারকা, কোপাই প্রভৃতি নদীর চার কিলোমিটার বিপজ্জনক নদীবাঁধ সংস্কার হবে। সেই কাজ কী ভাবে করা হবে, অন্য আর কী কী করার প্রয়োজন, দ্রুত তা সমীক্ষা করে জানানোর জন্য আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন সেচমন্ত্রী।
জেলার মধ্যে লাভপুর বন্যাপ্রবণ হিসেবে পরিচিত। ফি বর্ষায় জলমগ্ন হয় এলাকা। বৈঠকে সে প্রসঙ্গ তোলেন লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। তিনি ঠিবা, কুর্ণাহার, জামনা এলাকায় নদীবাঁধ সংস্কার, ত্রাণকেন্দ্র তৈরির প্রস্তাব দেন। বর্ষার জলে ভেসে গেলেও গরমে জলকষ্ট থাকে এই ব্লকে। সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছেন বিধায়ক।
তবে, সদ্য শেষ হওয়া বিধানসভা ভোট ও তার পরেপরেই রাজ্যে বর্ষা ঢুকে পড়ায় দফতরের কাজে কিছুটা শিথিলতা এসেছিল বলে মেনে নিয়েছেন সেচমন্ত্রী। এ বার সেই ঘটতি পুষিয়ে নিতে দ্রুত লয়ে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, দ্রুত কাজ শেষ করতে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে দফতরের কর্মকর্তাদের বোঝাপড়ার উপরেও জোর দিচ্ছেন রাজীব। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘কাজে গতি ফেরাতে সব চেষ্টাই করা হচ্ছে। তার অঙ্গ হিসেবে বর্ষাতেও কাজ চলবে।’’
কোন কাজ পূর্ত দফতর করবে এবং কোনটা সেচ দফতর তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন সেচমন্ত্রী। তাঁর সাফ জবাব, বড় সেতু নির্মাণ ও সংস্কার করবে পূর্ত দফতর। আর ছোট সেতু যেমন সেচ সেতু, কালভার্ট, ক্যানাল সেতু সংস্কার এবং তৈরি করবে সেচ দফতর। এ দিনের বৈঠকে ছিলেন জেলার দুই বিধায়ক তথা মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী, জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার এবং রাজ্য এবং জেলা সেচ দফতরের কর্মকর্তারা।