চলছেই যন্ত্রে বালি তোলা

প্রশাসন বারবার জানাচ্ছে, যন্ত্র দিয়ে নদী থেকে বালি কাটা যাবে না। কিন্তু শুনছে ক’জন? দ্বারকেশ্বর নদ থেকে এ ভাবেই দিনে-রাতে বেশ কয়েকটি করে যন্ত্র নামিয়ে বালি তোলা চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৭ ০১:১৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রশাসন বারবার জানাচ্ছে, যন্ত্র দিয়ে নদী থেকে বালি কাটা যাবে না। কিন্তু শুনছে ক’জন? দ্বারকেশ্বর নদ থেকে এ ভাবেই দিনে-রাতে বেশ কয়েকটি করে যন্ত্র নামিয়ে বালি তোলা চলছে। ফলে নদীর বুকে যত্রতত্র গভীর গর্ত তৈরি হওয়ায় বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। বালি তোলার তীব্র শব্দ ও কম্পনে নদী পাড়ের বাসিন্দাদের ঘরে থাকাও দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।

Advertisement

বিষ্ণুপুর ব্লকের দ্বারকেশ্বর নদ লাগোয়া দ্বারিকা গোঁসাইপুর পঞ্চায়েতের চাকদহ, মধুবন, দেউলি, সুভাষপল্লি, ডিহর, লয়ার, ভাটরা, শান্তিপুর, বসন্তপুর গ্রামে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে যন্ত্র দিয়ে বালি কাটা চলছে বলে অভিযোগ। বাসিন্দারা সম্প্রতি লাগামহীন বালি তোলার জন্য নদীর পাড়ে এ বার ভাঙনের আশঙ্কা করছেন। সুভাষপল্লির বাসিন্দারা সম্প্রতি বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসককে স্মারকলিপি দিয়ে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। বিষ্ণুপুর মহকুমাশাসক ময়ূরী ভাসু বলেন, ‘‘ওঁদের অভিযোগ পেয়েছি। দেখছি কী করা যায়।’’

সুভাষপল্লি গ্রামের জিতেন বারুই, নরেন ভদ্র, স্বপন রায়, বিপুল মণ্ডল অভিযোগ করেন, ‘‘দিন-রাত ছয় থেকে সাতটা যন্ত্র দিয়ে বালি তোলা চলছে। রাতে ভুমিকম্পের মতো ক্রমাগত আওয়াজে ঘুম উড়ে যায়। নদীর জলের তলায় কোথায় বালি তোলায় ৫০-৬০ ফুট গভীর গর্ত হয়েছে, ঠাহর করা যাচ্ছে না। তাই ডুবে মরার ভয়ে অনেকে নদীতে আর স্নান করতে যাচ্ছেন না।’’

Advertisement

নদী তীরের গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন, অপরিকল্পিত ভাবে বালি তোলায় নদীর পাড়ে ভাঙন হচ্ছে। গত ক’বছরে এ ভাবে অনেকের জমি নদীর গ্রাসে চলে গিয়েছে। বিঘের পর বিঘে জমি হারিয়ে অনেকে প্রায় সহায় সম্বলহীন অবস্থায় রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে স্মারকলিপি দিতে যাওয়া পঞ্চায়েত সদস্য রেখা মণ্ডলের দাবি, ‘‘সবার ঘরেই কমবেশি টানাপড়েন চলছে। কিন্তু বালি তোলার নামে যে অন্যায় এখানে চলছে, প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় জানিয়েও তা বন্ধ করা যায়নি।’’

প্রতিবাদ করতে গিয়ে হিতে বিপরীত হয়েছে। সুভাষপল্লির বাসিন্দা আইনজীবী অশোক ডাকুয়ার দাবি, বছর চারেক আগে গ্রামের ছেলেরা যথেচ্ছ বালি কাটার প্রতিবাদ করতে গিয়েছিল। উল্টে মিথ্যা মামলায় তাদের ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়। দেউলি ও সুভাষপল্লির বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়েকদিন ধরে দুই পাড়ের যাতায়াতের জন্য নদীর উপরে তৈরি অস্থায়ী রাস্তার ধার ঘেঁষেই বড় গর্ত করে বালি কাটা হচ্ছিল। সবাই প্রতিবাদ করায় মারধরের হুমকি দেয়।

বিষ্ণুপুর মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক কিঙ্করনাথ চট্টপাধ্যায় বলেন, ‘‘নদীর পাড় ঘেঁষে বা যাতায়াতের অস্থায়ী রাস্তার ধারে ওই ভাবে যন্ত্র দিয়ে মোটেই বালি তোলা যায় না। ওই ইজারাদারের বিরুদ্ধে বেশি বালি পাঠানোর অভিযোগ পেয়ে একবার আমরা সতর্ক করেছি। এ বারও খোঁজ নিচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন