ছাদ চুঁইয়ে জল ক্লাসে, ক্ষোভ স্কুলে

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩৯০ জন ছাত্রী রয়েছে। প্রধান শিক্ষিকাকে নিয়ে পড়ান মোট আট জন। মূল সমস্যা হল, স্কুলের পুরানো ভবন নিয়ে। যে অংশটা বেহাল হয়ে পড়েছে। একটি হলঘর রয়েছে, যেখানে আগে দশম শ্রেণির ছাত্রীরা ক্লাস করত। ছাদ থেকে চাঙড় খসে পড়ত বলে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের নতুন বিল্ডিংয়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৭ ০২:৫৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

শ্রেণিকক্ষের দেওয়ালে ড্যাম ধরেছে। ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। শিক্ষিকা হাতে গোনা। ক্লাসে ছাত্রীদের বসার পর্যাপ্ত জায়গা নেই। খোলা আকাশের নীচে খেতে হয় মিড-ডে মিল। পরিকাঠামো নিয়ে এমনই নানা সমস্যায় জেরবার ৫০ পেরোনো দুবরাজপুরের হেতমপুর রাজ উচ্চবালিকা বিদ্যালয়।

Advertisement

স্কুলের সহ শিক্ষিকাদের দাবি, অসুস্থতার জন্য গত তিন মাস ছুটিতে আছেন প্রধান শিক্ষিকা। তাঁর ‘নিষ্ক্রিয়তার’ জন্যই পরিকাঠামোগত উন্নয়ন সে ভাবে হয়নি। যার ফল ভুগতে হচ্ছে ছাত্রী, শিক্ষিকা সকলকেই। বর্ষায় সমস্যা আরও বেড়েছে। যদিও শিক্ষিকাদের এই অভিযোগ মৌখিক। সাম্প্রতিক অতীতে প্রশাসনের কাছে এ নিয়ে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে সমস্যা যে রয়েছে, তা স্কুলে গেলেই বোঝা যায়।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩৯০ জন ছাত্রী রয়েছে। প্রধান শিক্ষিকাকে নিয়ে পড়ান মোট আট জন। মূল সমস্যা হল, স্কুলের পুরানো ভবন নিয়ে। যে অংশটা বেহাল হয়ে পড়েছে। একটি হলঘর রয়েছে, যেখানে আগে দশম শ্রেণির ছাত্রীরা ক্লাস করত। ছাদ থেকে চাঙড় খসে পড়ত বলে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের নতুন বিল্ডিংয়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে বসার পর্যাপ্ত জায়গা হয় না। পুরানো বিল্ডিংয়ের একটি অংশে ষষ্ঠ শ্রেণির ক্লাস এখনও হয়। সেটির হালও করুণ। এত দিন ধরে মিড–ডে মিল চললেও স্কুলে এখনও ছাত্রীদের বসে খাওয়ার কোনও জায়গা নেই। স্কুলের সীমানা প্রাচীর ভেঙে পড়লেও সারানোর উদ্যোগ নেই।

Advertisement

প্রধান শিক্ষিকার অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব সামলানো শিক্ষিকা মধুমিতা ঘোষ, গৌতমী মুখোপাধ্যায়রা এর জন্য দায়ী করেছেন প্রধান শিক্ষিকা সন্ধ্যা দাসকেই। তাঁদের কথায়, ‘‘উনি ভাল শিক্ষিকা হলেও ততটা ভাল প্রশাসক নন। সেই কারণেই এমন হাল।’’ শিক্ষিকাদের অনেকেরই অভিযোগ, স্কুলের বয়স পঞ্চাশ পেরোলেও কোনও অনু্ষ্ঠান পর্যন্ত হয়নি। ফোনে যোগাযোগ করা হলে স্কুলের পরিকাঠামোগত বেহাল দশার কথা মেনে নেন প্রধান শিক্ষিকা। সন্ধ্যা দাস বলেন, ‘‘বছরে স্কুল ভবন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে টাকা মেলে, তা দিয়েই যতটা সম্ভব করি। কিন্তু অন্য কোনও ফান্ড সংগ্রহ করা স্কুলের জন্য সম্ভব হয়নি। স্বল্প সংখ্যক শিক্ষিকাদের নিয়ে ছাত্রীদের পড়াশোনা ঠিক রাখাই আমার কাছে বেশি প্রাধান্য পায়।’’

সহ শিক্ষিকাদের অভিযোগ প্রসঙ্গে সন্ধ্যাদেবীর বক্তব্য, ‘‘আমার একটা অপারেশন হয়েছে। তারপর থেকে অসুস্থতার জন্য দীর্ঘ দিন স্কুলে যেতে পারিনি। সেই কারণে ভুল বোঝাবুঝি থেকেই হয়তো ওঁরা এটা বলছেন। স্কুলে গেলে সমস্যা মিটে যাবে।’’ জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রেজাউল হক বলেন, ‘ওই স্কুল নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও তরফেই অভিযোগ পাইনি। তবে চর্চায় যখন এসেছে, তখন ওই স্কুলে যাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন