স্কুল পরিদর্শনে ‘মুগ্ধ’

বরাবাজারের লাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন কর্ম-কাণ্ড দেখে তাজ্জব বরাবাজারের ৩ নম্বর চক্রের শিক্ষকেরা।

Advertisement

সমীর দত্ত

বরাবাজার শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:০২
Share:

লাকা প্রাথমিক স্কুলে। নিজস্ব চিত্র

ছাদের উপরে লতানো লাউয়ের ডগা। ঝুলছে লাউ। গাছ ভর্তি সবুজ ও লালচে টোম্যাটো। ছাদে ফলছে মিড-ডে মিলের এমনই সব আনাজপাতি। আবার পড়ুয়াদের হাত ধোয়া জল, বাসন ধোয়া জল পরিশোধনের করে ফের তা ব্যবহার করা হচ্ছে। স্কুলের এক প্রান্তে বাগানে পড়ুয়ারা দু’টি আলাদা ‘ডাস্টবিন’ তৈরি করেছে। যেখানে পচনশীল ও অপচনশীল দু’ধরনের বর্জ্য ফেলে সারে পরিণত করা হচ্ছে। বরাবাজারের লাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন কর্ম-কাণ্ড দেখে তাজ্জব বরাবাজারের ৩ নম্বর চক্রের শিক্ষকেরা। মঙ্গলবার তাঁরা লাকা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসেছিলেন।

Advertisement

বরাবাজার ৩ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক কৌশিক কুণ্ডু বলেন, ‘‘আমাদের চক্রে ৫৬টি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। সেই সব স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে লাকা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করতে যাই।’’ ওই দলে বাঁশবেড়া, তুমড়াশোল ও বেড়াদা পঞ্চায়েতের

শিক্ষকেরা ছিলেন।

Advertisement

হঠাৎ লাকা প্রাথমিক স্কুলে পরিদর্শন কেন? কৌশিকবাবু জানান, তিনি আগে লাকা প্রাথমিক স্কুলে এসেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘এই স্কুলে এসে আমার মনে হয়েছিল স্কুল উন্নয়নে এখানে এমন কিছু উদ্ভাবনী কৌশল প্রয়োগ করা হয়েছে, যা অন্য স্কুলের শিক্ষকদের অনুপ্রাণিত করতে পারে। স্কুলের উন্নয়নে শিক্ষকদের উদ্ভাবনী কৌশল আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমার মনে হয় শিক্ষকেরা এখান থেকে অনেক নতুন ধারণা নিয়ে যেতে পারবেন।’’

সুরাইডি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ত্রিলোচন মাহাতো, হুল্লুং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শান্তনু ঘোষ বলেন, ‘‘এখানে না এলে বুঝতেই পারতাম না একটা স্কুল এত সুন্দর ভাবে সাজানো যায়। স্কুলের শিক্ষকদের চেষ্টায় এটি যেন বিদ্যামন্দিরে পরিণত হয়েছে। বেশ কিছু নতুন বিষয় শিখলাম। আমাদের স্কুলেও প্রয়োগ করার চেষ্টা করব।’’

শিক্ষকদের একাংশ জানান, সিঁড়িতে ওঠার সময় ধাপে ধাপে বাংলা ও ইংরেজি মাসের নাম লেখা। তা দেখে সহজে পড়ুয়ারা ওই সব মাস মুখস্ত করে ফেলছে। আবার সংখ্যা চেনাতে ছিপের ডগায় কাঁটার বদলে চুম্বক দিয়ে মাছের আকৃতির সংখ্যা তোলানো হয়। খেলার ছলে পড়ানোর এই কৌশল সব স্কুলের পড়ুয়াদেরই আকর্ষিত করবে।

লাকা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শরৎ পরামাণিক ২০১২ সালে জাতীয় শিক্ষকের সম্মান পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের উন্নয়নে সহ-শিক্ষক, শিক্ষিকা ও স্থানীয় বাসিন্দারা আমার পাশে রয়েছেন। আমার সহকর্মীরা স্কুল পরিদর্শনে এসেছেন, এটাই বড় পাওনা।’’

সমগ্র শিক্ষা মিশনের জেলা শিক্ষা আধিকারিক বিকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘ওই অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক ভাল উদ্যোগ নিয়েছেন। এমন অনেক শিক্ষক রয়েছেন, যাঁরা স্কুলের জন্য কিছু করতে চান। আমার ধারণা শরৎবাবুর স্কুল তাঁদের উৎসাহ দেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন