স্কুল ছাত্রের প্রাণ কাড়লো জাতীয় সড়ক, ক্ষোভে পথ অবরোধ পুরুলিয়ায়

ফুল বেচতে গিয়ে বাসের ধাক্কা, মৃত্যু

সাত সকালে বাজারে ফুল পৌঁছে দিতে সাইকেল নিয়ে বেরিয়েছিল ছেলেটি। কিন্তু সংকীর্ণ রাস্তায় একটি সরকারি বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হল সেই স্কুল ছাত্রের। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ পুরুলিয়া শহরের নডিহায় ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কে এই দুর্ঘটনার জেরে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ছড়ায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৭ ০২:১২
Share:

ক্ষোভ: নডিহায় রাস্তায় পড়ে স্কুল ছাত্রের দেহ। ছবি: সুজিত মাহাতো

সাত সকালে বাজারে ফুল পৌঁছে দিতে সাইকেল নিয়ে বেরিয়েছিল ছেলেটি। কিন্তু সংকীর্ণ রাস্তায় একটি সরকারি বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হল সেই স্কুল ছাত্রের। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ পুরুলিয়া শহরের নডিহায় ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কে এই দুর্ঘটনার জেরে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ছড়ায়। উত্তেজিত জনতা ক্ষতিপূরণের দাবিতে ও এই সড়কে ভারী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারির দাবিতে দীর্ঘক্ষণ ঘটনাস্থলে অবরোধ শুরু করেন। পুলিশ ছাত্রের দেহ তুলতে গেলে জনতা তাদের বাধা দেয়। পরে মহকুমাশাসক (পুরুলিয়া সদর) ইন্দ্রদেব ভট্টাচার্য ঘটনাস্থলে গিয়ে দাবিগুলি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত কিশোর দীপক বাউরির (১২) বাড়ি পুরুলিয়া সদর থানার দুলমি দাসপাড়া এলাকায়। সে স্থানীয় নেতাজি বিদ্যাপীঠে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। তার বাবা পেশায় রিকশা চালক। বাবাকে সাহায্য করতে দীপক বাড়ির কাছের পুকুর থেকে পদ্মফুল সংগ্রহ করে শহরের চকবাজার কালীমেলায় ফুল বাজারে বিক্রি করতে যেত।

এ দিন নডিহা এলাকায় বাঘমুণ্ডি-কলকাতা রুটের একটি সরকারি বাস এই কিশোরকে কোনও ভাবে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এরপরেই উত্তেজিত জনতা কিশোরের দেহ ফেলে রেখে ওই সড়কে অবরোধ শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দা প্রত্যক্ষদর্শী তারকেশ পালিতের কথায়, ‘‘বাসের ধাক্কায় সাইকেল থেকে ছেলেটা ছিটকে পড়ল। কাছে গিয়ে দেখি মাথা রক্তে ভেসে যাচ্ছে।’’ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সাইকেলের ক্যারিয়ার থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়েছে ফুল। কয়েকশো মানুষ রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন।

Advertisement

তাঁদের দাবি, রাস্তার দু’পাশে বসতি থাকা সত্ত্বেও প্রচণ্ড গতিতে যানবাহন চলে। তাঁরা অবিলম্বে এই রাস্তায় ভারী গাড়ি চলাচল বন্ধের দাবি তোলেন। অন্যান্য যানবাহনও যাতে নিয়ন্ত্রিত গতিতে যাতায়াত করে, সে দাবি তুলেছেন তাঁরা। এলাকার তিনি তৃণমূল কাউন্সিলর মৌসুমী ঘোষ, বিভাস দাস ও প্রদীপ দাগাও অবরোধে সামিল হন।

পুরুলিয়ার সিআই দেবাশিস পাহাড়ি, সদর থানার ওসি দীপঙ্কর সরকার তাঁদের বুঝিয়েও দেহ তুলতে পারেননি। দু’ঘণ্টা অবরোধ চলার পরে মহকুমাশাসক অবরোধ তোলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত কিশোরের বাবা হারাধন বাউরির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ একটি মামলা দায়ের করেছে। ঘটনার পরে বাস নিয়ে চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলেও পরে পুরুলিয়া শহরের সরকারি বাসের বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসটি আটক করা হয়। তবে চালক পালিয়েছে।

এ দিন কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না দীপকের বাড়ির লোকজন। তার জেঠতুতো দাদা কিষান বাউরি বলেন, ‘‘ওই রাস্তা দিয়ে রোজ ও বাজারে যেত। কিন্তু এমনটা যে ঘটতে পারে, কোনও দিনও কেউ ভাবিনি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement