School Reopening

School Outside: খুদেদের পড়ায় ফেরাতে স্কুলের বাইরে ‘ক্লাস’

অভিভাবকদের একাংশ জানান, প্রায় দু’বছর ধরে স্কুলের দরজা বন্ধ। মি-ডে মিল দিতে মাসে এক বার স্কুল খোলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আড়শা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:৩৮
Share:

আড়শার বেলডি প্রাথমিক স্কুলের সামনে। নিজস্ব চিত্র

প্রাথমিকের পড়ুয়াদের জন্য সরকারি ভাবে এখনও স্কুলের দরজা খোলেনি। তার মধ্যে স্কুলের বাইরে শুরু হল ক্লাস। ঘটনাস্থল, পুরুলিয়ার আড়শা ব্লকের বেলডি প্রাথমিক বিদ্যালয়। গত শুক্রবার থেকে স্কুলের বাইরে মাঠে পড়াশোনা শুরু হয়েছে। অভিভাবকদের একাংশের বক্তব্য, স্কুল খোলার আগে, এ ভাবে পড়া চলুক, চান তাঁরা। পড়াশোনা করতে পেরে খুশি পড়ুয়ারাও। আড়শা ২ চক্রের অবর স্কুল পরিদর্শক শান্তনু পড়িয়া বলেন, “পঠনপাঠন শুরু হয়েছে, এমন কোনও খবর নেই। স্কুল তো বন্ধই রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেব।”

Advertisement

অভিভাবকদের একাংশ জানান, প্রায় দু’বছর ধরে স্কুলের দরজা বন্ধ। মি-ডে মিল দিতে মাসে এক বার স্কুল খোলে। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া কার্যত হচ্ছে না। অভিভাবক শ্বেতবন্ধু গড়াইয়ের কথায়, “স্কুল যখন বন্ধ হয়েছিল, মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। এখনও চতুর্থ শ্রেণি। স্কুলে যাওয়ার অভ্যাসটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ইংরেজি ভাল করে পড়তে পারছে না। অনেক অঙ্ক ভুলে গিয়েছে।” পেশায় দিনমজুর গৌর সহিসও বলেন, ”আমাদের পক্ষে ছেলেমেয়েদের অনলাইনে লেখাপড়া করানো সম্ভব নয়। আর অনলাইন পড়াশোনার বিষয়ে কিছু জানাও নেই। আমরা অনেকে স্কুলের মাস্টারমশাইকে বাচ্চাদের পড়ানোর ব্যবস্থা করতে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। যে ভাবে হোক, পড়াশোনাটা চলুক।”

স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা তথা প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক অধরচন্দ্র গড়াই বলেন, “আমরা অভিভাবক ও গ্রামের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলেছি—দূরত্ববিধি মেনে মাঠে ক্লাস শুরু করে দেখাই যাক না। সে ভাবনা থেকে পড়াশোনা শুরু হয়েছে। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এক জন শিক্ষক আমাদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছেন।”

Advertisement

সেই শিক্ষক অভিযান ভট্টাচার্যের কথায়, “স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৩৭১ হলেও, দু’-তিন দিন ক্লাস হয়েছে। কম-বেশি শতাধিক পড়ুয়া প্রতিদিন হাজির হচ্ছে। নিজের ইচ্ছেয় যারা আসছে, ক্লাস করছে। মাস্ক পরে ও দূরত্ববিধি মেনে স্কুলের বাইরের মাঠে ক্লাস হচ্ছে। শুধু পড়ুয়ারা নয়, স্কুলের অনেক প্রাক্তন পড়ুয়া, যারা একটু উঁচু ক্লাসে উঠেছে, তারাও ক্লাস নিচ্ছে।”

পড়তে এসে খুশি বুদ্ধেশ্বর গড়াই, স্বর্ণালি রায়, অর্পিতা মাহাতো, মতিউল খাতুনেরাও। তারা জানায়, যত দিন না স্কুল খোলে, এমন করে স্কুলের বাইরে স্কুল চলুক। ‘‘অনেক দিন পরে আজ অঙ্ক করেছি’’, হাসিমুখ চতুর্থ শ্রেণির সুজিত পরামানিকের।

কিন্তু সরকারি নির্দেশে তো এখনও স্কুল বন্ধ। অভিযান বলেন, “সেটা জানি। আর স্কুল তো বন্ধই রয়েছে। স্কুল খোলা নিয়ে দফতরের যা নির্দেশ, তা আমিও মেনে চলব। কিন্তু যাদের নিয়ে স্কুল, তারা ও অভিভাবকেরা চাইলে, মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন