ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চলছে স্মরণ। — নিজস্ব চিত্র
নানা সামাজিক কাজে এগিয়ে আসতেন তিনি। ঝাঁপিয়ে পড়তেন পরোপকারে। সেই যুবক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে আজ থেকে ১৩ বছর আগে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে মারা যান। ময়ূরেশ্বরের মল্লারপুরের বাসিন্দা সেই আভাস রায়ের ১৩ তম মৃত্যু দিবসে পরিবারের তরফে জনসাধারণের জন্য উৎসর্গ করা হল নবনির্মিত শৌচালয় ও পানীয় জলের জলাধার। আভাসের পরিবার তো বটেই তার সাক্ষী থাকলেন মন্ত্রী, জেলা সভাধিপতি, বিধায়ক, মল্লারপুরবাসী থেকে সংলগ্ন ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দারাও।
ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সোমবার সকালে ওই অনুষ্ঠান হয়। বক্তব্য রাখতে গিয়ে ময়ূরেশ্বর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ধীরেন্দ্রমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আভাসের আকস্মিক মৃত্যুতে ওঁর পরিজনেরা আর পাঁচ জনের জন্যে কিছু একটা করতে চেয়েছিলেন। সেই মতো নানা বাধা বিপত্তি পেরিয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা পঞ্চায়েত সমিতিকে দান করেন আভাসের পরিবার। জেলাশাসক পি মোহন গাঁধীর প্রচেষ্টায় সভাধিপতি, মন্ত্রী, বিডিও-র সহযোগিতায় সেই টাকায় ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শৌচালয় এবং পানীয় জলের জলাধার তৈরি করা হয়। এমন জলাধার এবং শৌচালয় পেয়ে খুশি হাসপাতালে আসার রোগীর পরিজনেরা। স্বাগত জানিয়েছেন ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিএমওএইচ হীরেন্দ্রনাথ দাস। তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতালের ভিতর জলের সংযোগ, শৌচালয় আছে। কিন্তু রোগী এবং রোগীর পরিজনদের জন্য হাসপাতাল চত্বরে পৃথক ব্যবস্থা চালু হওয়ায় অনেকেরই উপকার হবে।’’ ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের বিডিও সুশান্ত বসু মনে করেন, সব সময় সব কাজ সরকারি সাহায্যে গড়ে তোলা যায় না। উদ্যোগী মানুষের সাহায্য পেলে ভাল কাজ করা যায়। এই প্রকল্প টাও তারই নজির।
এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় আভাসের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। সভাধিপতি বিকাশরায় চৌধুরী বলেন, ‘‘আভাসের সঙ্গে আমার, অনুব্রত মণ্ডলের বরাবরের ভাল সম্পর্ক ছিল। এ রকম একটা অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে ভাল লাগছে।’’ পরিবারের পক্ষে দাদা প্রভাস রায়, বৌদি ছবি রায়ের কথায়, ‘‘আভাস সবসময় লোকের কী ভাবে ভাল হয়, সেটাই ভাবত। আজ ওর স্মৃতিতে তৈরি হওয়া শৌচালয় এবং পানীয় জলের জলাধার তৈরী হয়েছে। মানুষ সেগুলো ব্যবহার করছে এটা দেখতে পেয়ে আমরা খুশি।’’