মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকের পরেই আধুনিক মানের বাসস্ট্যান্ড তৈরির জন্য জমির খোঁজ শুরু করেছিল রঘুনাথপুর মহকুমা প্রশাসন। অবশেষে পুরনো বাসস্ট্যান্ডের কাছেই সেই জমির খোঁজও মিলেছে। কিন্তু জমির মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতা থাকায় উপায় খুঁজতে জেলাশাসককে চিঠি দিলেন রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসক। তবে রঘুনাথপুরে বাসস্ট্যান্ড তৈরিতে জমির মালিকানা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়।
চলতি মাসের প্রথম দিকে পুরুলিয়ায় এসে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব মলয়কুমার দে। সেখানেই বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি, রঘুনাথপুরে বাসস্ট্যান্ড তৈরির বিষয়টি আলোচনায় ওঠে। বর্তমানে পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের পাশেই বাস থামে। সেটাই এত দিন বাসস্ট্যান্ড বলে পরিচিত। কিন্তু রাস্তার উপরেই বাসে ওঠানামা করার জন্য দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে। তার উপরে ওই বৈঠকে আলোচিত হয়েছে, পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সডক সম্প্রসারিত করা হতে পারে। তাই ওই এলাকায় একটি উন্নত পরিকাঠামোর বাসস্ট্যান্ডের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সে কারণেই উপযুক্ত জমি খোঁজার জন্য জেলাপ্রশাসনকে উদ্যোগী হতে নির্দেশ দিয়ে যান মুখ্যসচিব। তারপরেই তড়িঘড়ি জমি খুঁজতে মাঠে নামে মহকুমা প্রশাসন।
প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছিল, রঘুনাথপুর শহর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে রঘুনাথপুর চেলিয়ামা রাস্তার পাশে বাসস্ট্যান্ড হবে। কিন্তু ওই এলাকা শহর থেকে অনেকটাই দূরে। সেখানে বাসস্ট্যান্ড করা কতটা যুক্তিযুক্ত হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল প্রশাসনের অন্দরেই।
প্রশাসন সূত্রের খবর, সম্প্রতি বর্তমান বাসস্ট্যান্ডের কাছেই জমি পাওয়া গিয়েছে। রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মী আবাসনের পাশে প্রায় দুই একর ফাঁকা জমি রয়েছে। সেই জমিতেই বাসস্ট্যান্ড করতে উদ্যোগী হয়েছে মহকুমা প্রশাসন।
কিন্তু ওই জমি স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে থাকায় সমস্যা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, বাসস্ট্যান্ড তৈরি করতে গেলে পরিবহণ দফতরের নামে জমি থাকা প্রয়োজন। রঘুনাথপুরের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত বাসস্ট্যান্ডের জমি স্বাস্থ্য দফতরের হাতে থাকায় তাই প্রাথমিক ভাবে কিছুটা সমস্যা রয়েছে। সে কথা জানিয়ে জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছেন মহকুমাশাসক দেবময় চট্টোপাধ্যায়।
হাসপাতালের কর্মী আবাসনের পাশের ওই জমিতে বাসস্ট্যান্ড-সহ যাত্রী প্রতীক্ষালয়, শৌচালয়, পানীয় জলের ব্যবস্থা তৈরি করে পূর্ণাঙ্গ বাসস্ট্যান্ড করার ভাবনা রয়েছে মহকুমা প্রশাসনের। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মী আবাসনের পাশে দীর্ঘদিন ধরে কমবেশি দুই একর জমি ফাঁকা পড়ে আছে। সেখানে বাসস্ট্যান্ড হলে যোগাযোগ-সহ সব ক্ষেত্রেই সুবিধা পাবেন যাত্রীরা। কিন্তু ওই জমি স্বাস্থ্য দফতরের নামে থাকায় সমস্যার কথা জেলাশাসককে জানিয়েছি।”
তবে জেলাশাসক জানাচ্ছেন, রঘুনাথপুরে হাসপাতালের আবাসনের পাশের জমি তিনি নিজে দেখেছেন। এলাকার অবস্থান সব দিক দিয়েই সুবিধাজনক। জমির মালিকানা হস্তান্তরে কোন সমস্যা হবে না দাবি করে জেলাশাসক বলেন, ‘‘রঘুনাথপুরের প্রস্তাবিত বাসস্ট্যান্ডের জমির বিশদ বিবরণ ও তথ্য দিয়ে রাজ্যে পরিবহণ দফতরের কাছে পাঠানো হবে। তাঁরা পরিকল্পনার ডিপিআর তৈরি করে দিলেই জমি হস্তান্তরের পক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।’’