পুরুলিয়ায় ৭ জন ফড়ে গ্রেফতার

নানা পরিচয়ে মান্ডিতে একই লোক, সন্দেহ 

সরকারি ধান কেনার প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে মোট সাত জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

সরকারি ধান কেনার প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে মোট সাত জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুরুলিয়ার জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘ধৃতদের মধ্যে ফড়েদের সংগঠন ‘জেলা ধান্য ব্যবসায়ী সমিতি’র সভাপতি নিত্যানন্দ গোস্বামীও রয়েছেন।’’ শুক্রবার ওই সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল খাদ্য দফতর। ওই দিনই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তদের। শনিবার আদালতে সবার জেল হাজতের নির্দেশ হয়েছে।

Advertisement

কাশীপুর থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে ওই থানা এলাকার ঘাটরাঙামাটি গ্রামের বাসিন্দা নিত্যানন্দ গোস্বামীকে। অন্য ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে পুরুলিয়া মফস্সল থানার পুলিশ। তাঁদের মধ্যে মিতন দুয়ারি, জয়ন্ত দুয়ারি, রাখহরি দুয়ারি ও ধনঞ্জয় দুয়ারির বাড়ি ওই থানা এলাকার রামডি গ্রামে। ধৃত সহর আলি আনসারি মফস্সল থানার বাঁধগড় গ্রামের বাসিন্দা। অন্য জনের নাম মুরলী গড়াই। বাড়ি মফস্সল থানারই ভাংরা গ্রামে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি কিসান মান্ডির পার্চেস অফিসারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে ওই সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে মান্ডিতে চাষিদের ন্যায্য দামে ধান বিক্রিতে বাধা দেওয়ার। বিভিন্ন চাষির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ধৃতেরা ফড়ে হয়ে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করছিলেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। পুরুলিয়া জেলার খাদ্য নিয়ামক বাপ্পাদিত্য চন্দ্র বলেন, ‘‘বিভিন্ন কেন্দ্রে কয়েকটি চেনা মুখকে ঘুরে ফিরে ধান নিয়ে আসতে দেখে আমাদের সন্দেহ হয়েছিল। তার পরেই নজরদারি চালাতে এই কারবার ধরা পড়ে।’’

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি কেন্দ্রগুলিতে ধান বিক্রি করে কুইন্টাল পিছু চাষিরা ১৭৫০ টাকা দাম পান। মান্ডিতে বিক্রি করলে উৎসাহ ভাতা হিসেবে মেলে আরও কুড়ি টাকা। জেলার সেই রকমের ১২টি মান্ডিতে খাদ্য দফতর সরাসরি ধান কিনছে। তার জন্য ব্যাঙ্কের পাস বইয়ের প্রতিলিপি, পরিচয়পত্রের প্রতিলিপি আর ছবি নিয়ে চাষিকে আবেদন করতে হয়। প্রত্যেক চাষি এই মরসুমে ৯০ কুইন্টাল করে ধান বিক্রি করতে পারবেন। যাতে প্রথম দফায় প্রত্যেকেই ধান বিক্রি করার সুযোগ পান, তাই পুরুলিয়ায় প্রশাসন ঠিক করেছে গোড়ায় এক জনের থেকে ৩০ কুইন্টাল পর্যন্ত ধান নেওয়া হবে।

খাদ্য দফতর সূত্রের দাবি, ধৃতেরা চাষিদের প্রভাবিত করে মান্ডিতে আসতে দিচ্ছিলেন না। তাঁদের পরিচয়পত্র ও নথি নিয়ে কারচুপি করছিলেন। প্রশাসনের একটি সূত্রে দাবি, বিভিন্ন এলাকার চাষিদের থেকে থেকে কুইন্টাল পিছু ১,৪০০ টাকারও কম দামে ধান কিনে ওই ফড়েরা সরকারকে বিক্রি করার চেষ্টা করছিলেন। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, ‘‘ধান কেনার প্রক্রিয়ায় ফড়েরা বাধা দিচ্ছে কি না, সেই ব্যাপারে আমরা নজরদারি চালাচ্ছি।’’ এ দিন চেষ্টা করেও পুরুলিয়ার ধান্য ব্যবসায়ী সমিতির কারও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। জেলাশাসক বলেন, ‘‘চাষিদের বঞ্চিত করে কোনও কারচুপি প্রশাসন বরদাস্ত করবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন