ফি বছর গরম পড়তেই রাজগ্রাম এলাকায় জলস্তর নীচে নেমে যায়। কিন্তু এবার গরমে পানীয় জলের সঙ্কট তীব্র আকার ধারন করেছে। পরিস্থিতি এমনই পানীয় জলের যোগান অভাবে রাজগ্রাম রেলগেট সংলগ্ন বাজারে কয়েকটি দোকানই বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা! বিকোচ্ছে জল!
রাজগ্রাম পূর্ববাজার, পশ্চিম বাজার, রাজগ্রাম গ্রামের ভিতর এলাকা থেকে শুরু করে আম্বুয়া, গোঁড়শা বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পানীয় জলের জন্য চরম অসুবিধায় পড়েছেন বাসিন্দারা। এলাকাবাসীর দাবি, পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহের জন্য ১৯৮৪ সালে রাজগ্রামে যে রিজার্ভার নির্মাণ করা হয়েছিল, সেই রিজার্ভারে প্রথম থেকেই পাইপ লাইনে ত্রুটি রয়েছে। ফলে বেশি জল উঠতে পারে না। এতে এলাকায় জলের যোগানও কম থাকে। বার বার সংশ্লিষ্ট দফতরে অভিযোগ জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।
রাজগ্রাম এলাকার বাসিন্দা গোবিন্দ বিশ্বাস, শিষ মহম্মদরা জানান, রাজগ্রাম এলাকায় পরিশ্রুত পানীয় জল প্রকল্পে কখনো লো ভোল্টেজ সমস্যা, কখনও জলের উৎস স্থান থেকে পাইপ লাইনে ফুটো করে চাষের কাজে জল ব্যবহার করার জন্য রিজার্ভারে খুব কম জল মজুত হয়। এই সমস্ত সমস্যার কথা প্রশাসনের সর্বস্তরের লোকজন জানেন। একাধিক বার জেলা প্রশাসন থেকে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতর, মুরারই ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে লিখিত ভাবে সমস্যার কথা জানান হয়েছে। তা সত্ত্বেও প্রকল্পের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী। পানীয় জলের জল সরবরাহ ব্যবস্থায় ত্রুটি থাকার জন্য রাজগ্রাম এলাকায় দুটি সরকারি কুয়ো করা হয়।
কিন্তু কুয়োর জলস্তর নীচে নেমে যাওয়ার জন্য কুয়োগুলি প্রায় অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। আবার সরকারি নলকূপও বেশিরভাগই খারাপ। সেক্ষেত্রে এলাকার কার্গিল পাড়ার বাসিন্দাদের কয়েকজনের বাড়িতে অগভীর নলকূপ থেকেই জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে এলাকার মানুষকে।
পরিস্থিতি এমনই জলের যোগান অভাবে রাজগ্রাম রেলগেট সংলগ্ন বাজারে মিষ্টির দোকান বন্ধ করে দিয়েছেন বাবু লালা। বাসিন্দারা জানান, জল সঙ্কটের চাহিদা মেটাতে এলাকায় জল কিনে খেতে হচ্ছে। টিন প্রতি কুড়ি টাকা দিয়ে জলবাহকদের কাছ থেকে জল কিনে খেতে হচ্ছে। এলাকায় হাইস্কুলে পানীয় জলের একমাত্র উৎস একটি নলকূপ সেটিও খারাপ হয়ে যাওয়ার জন্য পড়ুয়ারা জল পাচ্ছেন না। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাংসদ শতাব্দী রায় রাজগ্রাম এলাকায় সাংসদ উন্নয়ন খাতে তিনটি জায়গায় ছোট ছোট রিজার্ভার করে দেন। তাতে ট্যাপ বসানো হয়। কিন্তু দু’ বছর যাবৎ ওই সমস্ত রিজার্ভারগুলিতে পানীয় জলের সংযোগ না দেওয়ার জন্য সেগুলি কোনও কাজে লাগছে না। সাংসদ শতাব্দী রায়ের সঙ্গে এ ব্যাপারে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
মুরারই ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের ধীমান কুমার সাহা বলেন, ‘‘শুধু রাজগ্রাম কেন গরমে মুরারইয়ের অনেক এলাকায় জলস্তর নীচে নেমে যায়। রাজগ্রাম এলাকায় অনেক জায়গায় অনেকগুলো রিগ বোরিং নলকূপ বসানো হয়েছে। পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা চালু আছে। তবুও জলকষ্টের জন্য এলাকায় তিনটি ট্যাঙ্কার খুব শীঘ্রই পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।’’