সামনে পড়ে যাওয়া এক ব্যক্তিকে শুঁড়ে জড়িয়ে আছড়ে মারল হাতি। শনিবার রাতে বিষ্ণুপুরের বাঁকাদহ জঙ্গলে ঢোকার মুখে চিতরং গ্রামের একটি ক্লাবের সামনে হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে সুনীল সর্দার (৪৫) নামে ওই ব্যক্তির। বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহ খানেক আগে বিষ্ণুপুর থেকে ধাদিকা হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার দিকে চলে গিয়েছিল ২০টি হাতির একটি দল। কিন্তু পিছনে পড়ে ছিল দলের আরও কিছু হাতি। তাদের টানেই শনিবার দলটি ফিরে আসছিল। দলপতি হাতিটি কিছুটা এগিয়ে ছিল। তারই সামনে পড়ে যান সুনীল।
সুনীলের ভাইপো পঞ্চানন সর্দার বলেন, ‘‘কাকা খেত মজুরি করতেন। কাজ শেষে বাঁকাদহ থেকে বাজার করে রাত প্রায় সাড়ে ৮টা নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় হাতিটি তাঁকে আছড়ে, পা দিয়ে থেঁতলে দেয়। তিনি জানান, সুনীলের আর্তনাদ শুনে একজন ছুটে এসে গ্রামে খবর দেন। গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই হাতিটি চলে গিয়েছিল।
সুনীলের স্ত্রী এবং এক সন্তান রয়েছে। রাতেই স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে ঘন ঘন মূর্ছা যাচ্ছেন সুনীলবাবুর স্ত্রী উত্থলাদেবী। নবম শ্রেণী পড়ুয়া কৌশিকও বাবার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে। গ্রামবাসীরা জানান, বছর কয়েক আগে গ্রামের ফুটবল মাঠে এক জনকে পিষে মেরেছিল একটি হাতি। এ দিনের ঘটনার পরে এলাকায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ডিএফও (বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত) অয়ন ঘোষ বলেন, ‘‘রাতে হাতির দলটি পশ্চিম মেদিনীপুরের দিক থেকে এসে ওই গ্রামে ঢুকেছে। মূল দল অনেক পিছনে ছিল। সামনে থাকা দলপতির মুখোমুখি পড়ে সুনীলবাবুর মৃত্যু হয়েছে।’’ বন দফতরের নিয়ম মাফিক মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। দ্বারকেশ্বর নদের চরে আটকে থাকা হাতির দলটিও জঙ্গলে ফিরেছে জানিয়ে ডিএফও বলেন, ‘‘জয়পুর, বিষ্ণুপুর ও বাঁকাদহ রেঞ্জ এলাকায় বিচ্ছিন্ন হয়ে বেশ কিছু হাতি ছড়িয়ে রয়েছে। কম লোকবল নিয়ে তাদের সামলাতে আমরা হিমসিম খাচ্ছি।’’