পাণ্ডুরাজা প্রত্ন গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে রবিবার ইলামবাজারের জয়দেবে হল সহজ উৎসব। ওই কেন্দ্রের নিয়ম মেনে এ বারও আয়োজন ছিল সংবর্ধনার। সম্মাননা জানানো হয় শিল্পী, পড়ুয়াদেরও। এ দিন সহজ সেবা ও সংস্কৃতি সংস্থার প্রকাশনায় ‘ইতিহাসের বর্ধমান’ ও ‘বর্ধমানের ইতিহাস’ নিয়ে ২৫ জন গবেষকের দুটি গবেষণাধর্মী বই প্রকাশ করেন যথাক্রমে কবি সৈয়েদ কওসর জামাল এবং সাহিত্যিক ঘনশ্যাম চৌধুরী।
অজয় নদ লাগোয়া এলাকায় তথা বর্ধমানের আউশগ্রাম থানা এলাকায় পাণ্ডুরাজার ঢিবির হদিস মেলে ষাটের দশকে। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে তৎকালীন উপ-অধিকর্তা পরেশচন্দ্র দাশগুপ্তের নেতৃত্বে ১৯৬৩ সালে প্রথম খনন শুরু হয়। ১৯৬৬ সালের মধ্যে বার চারেক খনন কাজ চলে। তারপর বন্ধ ছিল। পরে শিক্ষাবিদ, বিদ্দ্বজনের আর্জিতে ১৯৮৫ সালে খনন কাজ শুরু হয় তারপরেও অবশ্য ছেদ পড়ে কাজে। পাণ্ডুরাজা প্রত্ন গবেষণা কেন্দ্রের সভাপতি আদিত্য মুখোপাধ্যায় জানান, বর্ধমানের আউশগ্রাম থানার পাণ্ডুগ্রামে সাড়ে চার হাজার বছরের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন মিলেছে। সেখানকার বহু প্রত্নসামগ্রী দেশের একাধিক প্রদর্শশালা, যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। আদিত্যবাবুর মতে, ‘‘অবিলম্বে এলাকায় খনন কাজ ফের শুরু হলে গবেষক, শিক্ষাবিদদের একটি নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। শুধু তাই নয়, সাড়ে চার হাজার বছরের একটি ইতিহাসও সবিস্তারে জানা যাবে।’’ এই দাবি সংগঠনের তরফে বিভিন্ন সময়ে নানা মহলে জানানো হয়েছে। সংগঠনের সম্পাদক রাধামাধব মণ্ডল জানান, প্রত্নতত্ত্ব নিয়ে এলাকায় সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি মাটির কাছাকাছি থাক শিল্পীদের সম্মান দেয় সংগঠন। তা ছাড়াও সার্বিক ভাবে সাফল্যের জন্যে পড়ুয়াদের সম্মাননা জানানো হয়েছে।
এ বছর অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল জয়দেবের ভক্তিভবনে। ওই অনুষ্ঠানে পাণ্ডুরাজা প্রত্ন গবেষণা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাঢ় বাংলার শ্রেষ্ঠ বাউল শিল্পী হিসেবে সম্মানিত করা হয় কার্তিক দাস বাউলতে। কৌতুক শিল্পী অতনু বর্মণকে পাণ্ডুরাজা স্মৃতি পুরষ্কার দেওয়া হয়। রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী হিমাদ্রি মণ্ডল, নৃত্যশিল্পী স্নিগ্ধা দে, লোকনৃত্য শিল্পী সোমাশ্রী দত্ত ও জয়শ্রী কর্মকারকেও সংবর্ধনা দেওয়া হয়।