Shantiniketan

রাস্তার নতুন নাম  নিয়েও নানা মত 

বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তার নামকরণ নিয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক।

Advertisement

সৌরভ চক্রবর্তী

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৪৭
Share:

এই নামকরণ নিয়েই বেধেছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।

বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তার নামকরণ নিয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। তবে বিশ্বভারতী যে নামকরণ নিয়ে পিছিয়ে আসছে না তা স্পষ্ট হয়েছে উপাচার্যের বক্তব্যে।

Advertisement

মেলার মাঠ ঘেরার কাজ শুরুর পরেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এবং আন্তর্জাতিক অতিথি নিবাসের সামনে দুটি প্রবেশদ্বার নির্মাণের কাজ শুরু হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত কাব্যগ্রন্থের নামেই দ্বার দুটির নাম দেওয়া হয় যথাক্রমে ‘বলাকা’ ও ‘পূরবী’। এই বলাকা দ্বার থেকে শুরু হওয়া বিশ্বভারতীর নিজস্ব রাস্তাটির নামকরণ করা হয় ‘বিবেকানন্দ সরণি’। আপত্তি এই নামকরণ নিয়েই। পড়ুয়াদের একাংশের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে খুশি করতেই তড়িঘড়ি এই নতুন নামের সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে রাস্তা জুড়ে।

অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ফাল্গুনী পানের মত, “যেহেতু স্বামী বিবেকানন্দকে বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে, তাই উপাচার্য তাদের খুশি করতেই রাস্তার এমন নামকরণ করেছেন।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও বলেছেন, “আমি মনে করি রবীন্দ্রনাথের জায়গায় বিবেকানন্দের নামে রাস্তা হতে পারে না। এতেই বোঝা যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথকে কী ভাবে এখান থেকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।” নামকরণের বিরোধিতা করেছেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ছাত্র সুপ্রিয় পাত্রও। তিনি বলেন, “বিশ্বভারতীতে স্থান নামের ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের সময় থেকেই প্রাধান্য পেয়ে এসেছে প্রকৃতি। যেমন, আম্রকুঞ্জ, শালবীথি, বকুলবীথি প্রভৃতি। এখন হঠাৎ করে কেন এক জন ভিন্ন আদর্শের মহামানবকে এই পরিসরে টেনে আনা হল, তা কিছুতেই বোধগম্য হচ্ছে না।”

Advertisement

বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন বলছেন, “আমি বিবেকানন্দের অন্ধভক্ত। তবুও আমি মনে করি শান্তিনিকেতনের আদর্শের সঙ্গে এই নামকরণ সাযুয্যপূর্ণ নয়। ১৯০৫ সালে মহর্ষির প্রয়াণের পরে ১৯৪১ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ এখানেই ছিলেন। তিনি তো চাইলেই রাস্তার নাম ‘দেবেন্দ্র সরণি’, ‘মহর্ষি সরণি’ রাখতেই পারতেন, কিন্তু তিনি তা করেননি। ‘সরণি’ কালচারটাই এখানে কোনও দিন ছিল না।”

এই বিতর্কে উপাচার্যের বক্তব্য হিসেবে এ দিন একটি ভিডিয়ো ছড়ায়। এটি বুধবার সকালে ছাতিমতলায় বিশেষ উপাসনার সময়ের বলেই জানাচ্ছেন উপস্থিত ব্যক্তিদের অনেকেই। আনন্দবাজার ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। উপাচার্যকে বলতে শোনা যায়, ‘‘মহর্ষি তথা ঠাকুর পরিবারের সঙ্গে বিবেকানন্দের আত্মিক যোগাযোগ ছিল। আমরা খুব খুশি যে আমরা তাঁর নামে একটা রাস্তার নামকরণ করতে পেরেছি। ১২ জানুয়ারি ধুমধাম করে বিবেকানন্দের জন্মদিনও পালন করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন