মঞ্চে মহম্মদ সেলিম।—নিজস্ব চিত্র
সকাল দেখে বাকি দিনের আঁচ পাওয়ার প্রবাদটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে খাটে না। জনসভায় ভিড় দেখে ভোটের ফলাফল আগে থেকে ঠাহর করা মুশকিল। তবে ফলাফল যাই হোক, জোটের সভায় ভিড় বিধানসভা নির্বাচনের আগে পাড়া কেন্দ্রে দুই দলের নেতা কর্মীদের উদ্দীপনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই।
শনিবার পাড়া বিধানসভায় দুই ঘণ্টার ব্যবধানে তৃণমূল এবং জোটের আলাদা আলাদা সভা হয়েছে। এ দিন দুপুর দুটো নাগাদ পাড়ার সাঁওতালডিহির বীরসা চক ময়দানে সভা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই সভার পরেই পাড়ায় দুবড়ার ফুটবল ময়দানে সভা করেন সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য তথা রায়গঞ্জের সাংসদ মহম্মদ সেলিম। এলাকার অনেকেরই দাবি, ভিড়ে অভিষেকের সভাকে টেক্কা দিয়েছে সেলিমের সভা। এমনকী পুলিশের হিসাবও বলছে তা-ই। সেই হিসাব মতো, সাঁওতাডিহির তৃণমূলের সভায় ভিড় হয়েছিল প্রায় হাজার তিনেক মানুষের। অন্যদিকে দুবড়ায় জোটের সভায় ভিড় হয়েছিল প্রায় হাজার দশেক মানুষের।
সভায় ভিড় দেখে স্বভাবতই খুশি সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য দীননাথ লোধা এবং কংগ্রেসের জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বলরাম মাহাতোরা। তাঁদের কটাক্ষ,‘‘শাসকদলের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। নির্বাচনের ফল বেরোলে দেখা যাবে তৃণমূলে আর একটা লোকও নেই।” যদিও ভিড়ের হিসেবকে গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসকদল। পাড়ার বিদায়ী বিধায়ক তথা এ বারের তৃণমূল প্রার্থী উমাপদ বাউরি বলেন, ‘‘সাঁওতালডিহির শুধু রঘুনাথপুর ২ ব্লকের বাসিন্দারাই ছিলেন। আর সিপিএম গোটা বিধানসভা এলাকা থেকে লোক নিয়ে এসে সভা ভরিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, মঙ্গলবার পাড়ার গুড়গুড়িয়াতে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় সিপিএমের সভার কয়েক গুণ ভিড় হবে।
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে পাড়া কেন্দ্রে এগিয়ে ছিলেন বাম প্রার্থী। তার উপরে, এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে বাম এবং কংগ্রেসের জোট হওয়ায় শাসকদল এই কেন্দ্রটিতে কিছুটা হলেও বেকায়দায় পড়েছে বলে স্থানীয় অনেকেই মনে করছেন। পাড়ার দখলে ধরে রাখতে মরিয়া তৃণমূল। হেভিওয়েট নেতানেত্রীরা সভা করতে ঘনঘন আসছেন এই এলাকায়। পাল্টা হিসাবে সাংগঠনিক শক্তির স্বর্বস্ব দিয়ে ঝাঁপিয়েছে সিপিএমও। দুবড়ার ফুটবল ময়দানটি এমন অনেক প্রচার, পাল্টা প্রচারের সাক্ষী। কয়েক মাস আগেই এই মাঠে সভা করেছিলেন অভিষেক। পাল্টা সভা হয়েছিল সূর্যকান্ত মিশ্ররও। সেই থেকে ভিড় টানার লড়াই লেগেই রয়েছে। সব মিলিয়ে নির্বাচনী প্রচারে আপাতত সরগরম পাড়া।