পুরুলিয়ার সেচে রাজ্যের নজর

হাল ফেরাতে তিরিশ কোটি

দোরগোড়ায় গ্রীষ্ম। তার উপরে ক’দিন বাদেই জেলা সফরে আসতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময়ে সেচ নিয়ে কথা ওঠার সম্ভাবনা প্রবল। এই পরিস্থিতিতে পুরুলিয়া জেলায় ঘুরে গেলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আদ্রা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৭ ০১:০৯
Share:

বিকল্প: পুকুর শুকোচ্ছে। বাঁকুড়ায় সেচের ভরসা পাম্প। নিজস্ব চিত্র।

দোরগোড়ায় গ্রীষ্ম। তার উপরে ক’দিন বাদেই জেলা সফরে আসতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময়ে সেচ নিয়ে কথা ওঠার সম্ভাবনা প্রবল। এই পরিস্থিতিতে পুরুলিয়া জেলায় ঘুরে গেলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন কাজ খতিয়ে দেখার পাশাপাশি জোর দিয়ে গেলেন আগামী দিনের পরিকল্পনাতেও।

Advertisement

একাধিক প্রকল্প নিয়ে পুরুলিয়ায় সেচ সেবিত জমির পরিমাণ বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে সেচ দফতর। রাজ্যের জলতীর্থ ও কেন্দ্রের রাষ্ট্রীয় কিসান বিকাশ যোজনা (আরকেবিওয়াই)— এই দুই প্রকল্পে ইতিমধ্যেই পুরুলিয়ার কুড়িটি ব্লকে ১১৯টি চেকড্যাম তৈরি হয়েছে। এখন জলতীর্থ প্রকল্পে তৈরি হচ্ছে আরও আটটি। রাজ্যের তহবিল থেকে পাওয়া তিরিশ কোটি টাকা দিয়ে জেলায় দশটি সেচ প্রকল্পের আমূল সংস্কারের উদ্যোগ শুরু হয়েছে।

দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে জেলার ২৯ হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় ছিল। রাজ্যের জলতীর্থ প্রকল্পে ৮৯টি চেকড্যাম তৈরি হওয়ার পরে আরও ৩১০০ হেক্টর জমি সেচের আওতায় এসেছে। পাশাপাশি, কেন্দ্রর আরকেবিওয়াই প্রকল্পে ৩০টি চেকড্যাম তৈরি করে আরও ৮০০ হেক্টর জমি সেচের আওতায় আনা হয়েছে। সেচ দফতরের দাবি, বর্তমানে জলতীর্থ প্রকল্পে যে আটটি চেকড্যামের কাজ চলছে সেগুলি তৈরি হয়ে গেলে আরও আড়াইশো হেক্টর জমি সেচের আওতায় আসবে। এর পাশাপাশি জলাধার এবং ক্যানাল সংস্কার করে আরও ৯০০ হেক্টর জমিকে সেচের আওতায় আনা হবে। তবে সেই কাজ শেষ হতে আরও দু’বছর লেগে যাবে বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

দফতর সূত্রের খবর, সেচমন্ত্রী দফতরের আধিকারিকদের কাছে প্রতিটি প্রকল্পের বিষয়ে বিশদে খোঁজ নিয়েছেন। নিজে দু’টি চেকড্যাম পরিদর্শন করেছেন। বস্তুত প্রতিটি জেলা সফরের সময়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেচ দফতরের কাছে বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তার ফলে জেলায় সেচ দফতরের কাজে অনেকটাই গতি এসেছে বলে অনেকের মত।

সেচ দফতরের পুরুলিয়ার এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার কৌস্তভজ্যোতি পাল জানান, রাজ্য থেকে পাওয়া তিরিশ কোটি টাকায় পুরুলিয়া ২ ব্লকের গোলামারা, কাশীপুরের বেকো ও ডাংরা, রঘুনাথপুরের ২ ব্লকের মৌতোড়, আড়শার বান্দু, বান্দোয়ানের টটকো, বাগমুণ্ডি, পুরুলিয়া ২ ব্লকের টুরগা, কয়রাবেড়া, কুলাবেড়া ও পাতলই সেচ প্রকল্পের সংস্কার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গোলামারা, বেকোর জন্য দশ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেচ দফতরের নিজস্ব এই সমস্ত জলাধারগুলি থেকে ক্যানালের মাধ্যমে জল পাঠিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকায় সেচ হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে সংস্কারের অভাবে ওই প্রকল্পগুলি থেকে প্রত্যাশিত সেচ হচ্ছে না। দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, অনেক ক্যানাল সংস্কারের অভাবে বুজে যাচ্ছে। খারিফ ও রবি মরসুমে চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জল প্রকল্পগুলি থেকে পাচ্ছে না চাষিরা।

কৌস্তভজ্যোতিবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যর সেচ দফতর বাজেটে তিরিশ কোটি টাকা বরাদ্দ করার পরে আমরা দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছি। আগামী দুই বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে এই প্রকল্পগুলি সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন