দু’দিন পরেই চালু হচ্ছে জিএসটি, তার আগে নানা আশঙ্কা জেলার বণিক মহলে

নতুন বন্দোবস্ত ঠিক কেমন, ধোঁয়াশায় বাঁকুড়া

জিএসটি-র নিয়ম না মানলে মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানাই নয়, অনেক ক্ষেত্রে কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। এই দিকটিও ভাবাচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৭ ০২:২৭
Share:

নতুন কর ব্যবস্থায় কী ভাবে ব্যবসা সামাল দেবেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় বাঁকুড়ার ব্যবসায়ীরা।— প্রতীকী ছবি।

দু’দিন পরেই এক যোগে সারা দেশে চালু হচ্ছে পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি)। কিন্তু নতুন কর ব্যবস্থায় কী ভাবে ব্যবসা সামাল দেবেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় বাঁকুড়ার ব্যবসায়ীরা। জিএসটি নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বাজারে।

Advertisement

বাঁকুড়া চেম্বার অফ কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন দরিপা বলেই দিচ্ছেন, “জিএসটি-র সঙ্গে এখানকার ব্যবসায়ীদের মানিয়ে নেওয়া খুব একটা সহজ হবে না। জেলার সর্বত্র এখনও ইন্টারনেট পরিষেবাই সে ভাবে মেলে না। সারা বছরে দফায় দফায় আয়-ব্যয়ের হিসেব ও কর দাখিল করতে গেলে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা দেখবেন কখন?’’ প্রচলিত কর ব্যবস্থার সঙ্গে জিএসটি-র পদ্ধতি গত ফারাক কী? বণিক সভার কর্তারা জানাচ্ছেন, ভ্যাট পদ্ধতি তুলনায় সহজ। কিন্তু জিএসটি নিয়ে যা শোনা যাচ্ছে, ব্যাপারটা বেশ জটিল। পুরোটাই কম্পিউটারে অনলাইনে করতে হবে।

মধূসুদনবাবুর কথায়, “আয় ব্যয়ের হিসেব ও কর জমা করার পদ্ধতি অনেক ব্যবসায়ীই জানেন না। তাঁদের কর পরামর্শদাতাদের কাছেই ছুটতে হবে। এই পরিস্থিতিতে কিছু পরামর্শদাতা এই কাজের জন্য পারিশ্রমিক তিন-চার গুণ বাড়িয়ে দিচ্ছেন।” তাঁর মতে, ব্যবসায়ীদের নিজেদের জিএসটি সামলাতে গেলে কম্পিউটার ও বিশেষ সফটওয়্যার কিনতে হবে। যার দামও কম নয়।

Advertisement

বাঁকুড়ার নতুনগঞ্জের নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসায়ী সোমনাথ দরিপার কথায়, “সারা দেশে এক কর ব্যবস্থা চালু করাকে আমরা সমর্থন করি। কিন্তু জিএসটি-র নিয়ম কানুনে কিছুটা সরলীকরণ করা দরকার। না হলে আমাদের মানিয়ে নেওয়া মুশকিল।”

বাঁকুড়া চেম্বার অফ কমার্স অ্যন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি বিমল ধনুকার মুদিখানা দোকান রয়েছে নতুনগঞ্জে। তিনি বলেন, “৯০ শতাংশের বেশি ব্যবসায়ীর নিজস্ব কম্পিউটার নেই। তাঁরা কম্পিউটার ব্যবহার করতেও জানেন না। জিএসটির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটাই তাঁদের কাছে কঠিন ব্যাপার হতে চলেছে। আমরা এখনও জিএসটি-র জন্য প্রস্তুত নই।”

জিএসটি-র নিয়ম না মানলে মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানাই নয়, অনেক ক্ষেত্রে কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। এই দিকটিও ভাবাচ্ছে ব্যবসায়ীদের। বাঁকুড়ার গোলপার্কের রেডিমেড ব্যবসায়ী পার্থ গড়াই বলেন, “ব্যবসায়ীদের বেশির ভাগই ৪৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সী। তাঁদের পক্ষে এই নতুন নিয়মে অভ্যস্ত হতে সময় লাগবেই। অনেক অনিচ্ছাকৃত ভুল ত্রুটি হয়ে যেতেই পারে। তার জন্য জেল, জরিমানা হয়ে গেলে তো ভয়ে ব্যবসাই বন্ধ করে দেবেন বহু মানুষ।”

জিএসটি নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বস্ত্র ব্যবসায়ীদের মধ্যেও। বাঁকুড়ার ক্লথ অ্যান্ড গার্মেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রবি সুরেকার কথায়, “গোটা দেশে কাপড় ব্যবসায়ীরা কর বসানোর প্রতিবাদে বন্‌ধ ডেকেছেন। বাঁকুড়ায় আমরা জেলাশাসকের দফতরে স্মারকলিপি দিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন