কথায় নারাজ পডু়য়ারা, দাবি
Visva Bharati University

Visva Bharati university: আন্দোলন চলছেই, ‘গৃহবন্দি’ উপাচার্য

শেষ পর্যন্ত সেই গেটের সামনেই কাঠের চৌকি ও বাঁশ লাগিয়ে ব্যানার লাগান পড়ুয়ারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২১ ০৮:৩০
Share:

উপাচার্যের বাংলোর গেটে ব্যানার টাঙানো নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীদের বচসা ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

লাগাতার বৃষ্টি এবং কর্তৃপক্ষের অনড় মনোভাবকে উপেক্ষা করেই সোমবার চতুর্থ দিনে পা দিল বিশ্বভারতীর ছাত্র-আন্দোলন। আর এ দিনই বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাসভবন পূর্বিতার মূল গেটে ব্যানার লাগানোকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হল।

Advertisement

শেষ পর্যন্ত সেই গেটের সামনেই কাঠের চৌকি ও বাঁশ লাগিয়ে ব্যানার লাগান পড়ুয়ারা। ব্যানারে লেখা, ‘দানবের সাথে যারা সংগ্রামের তরে প্রস্তুত হতেছে ঘরে ঘরে’। তারই মাঝে এ দিন দু’টি পৃথক নির্দেশিকা জারি করে বিশ্বভারতীর বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগে পর্যন্ত বর্তমান পড়ুয়াদের পরীক্ষার ফলাফল এবং নতুন আবেদনকারীদের ভর্তি প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার ঘোষণা করেছেন কর্তৃপক্ষ। স্পষ্টতই ঘেরাও আন্দোলনের ৭০ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও নিজেদের অনমনীয় মনোভাব বজায় রেখেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

বিশ্বভারতীর তিন পড়ুয়াকে ‘অনৈতিক ভাবে’ বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শুক্রবার রাত থেকে উপাচার্যকে তাঁর বাসভবনেই ঘেরাও করে রেখেছেন পড়ুয়াদের একাংশ। তাঁদের সমর্থনে একে একে এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন ছাত্র ও অধ্যাপক সংগঠন, ব্যবসায়ী সমিতি, আলাপিনী মহিলা সমিতিও।

Advertisement

সোমবার পড়ুয়াদের সমর্থনে মিছিল আয়োজন করে বোলপুরের নাগরিক সমিতি। বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ও বর্তমান পড়ুয়া, কর্মী-অধ্যাপক এবং স্থানীয় রবীন্দ্রপ্রেমীদের একাংশ সেই মিছিলে শামিল হন। সকাল ১০টা নাগাদ শান্তিনিকেতন বকুলতলা থেকে শুরু হয়ে সেই মিছিল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ঘুরে এসে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এসে শেষ হয়। প্রায় ১৫০ মানুষের সেই মিছিল অবস্থান মঞ্চের সামনে এসে উপস্থিত হতেই মুহুর্মুহু উপাচার্য বিরোধী স্লোগান উঠতে থাকে।

এর পরেই এক দল পড়ুয়া উপাচার্যের বাসভবনের মূল লোহার গেটে দু’টি ব্যানার লাগাতে যায়। নিরাপত্তাকর্মীরা বাধা দিতেই বচসা বাধে। পরে তা ধ্বস্তাধস্তির রূপ নেয়। কয়েক জন পড়ুয়া চেয়ারে উঠে দরজায় মাথায় ব্যানার বাঁধতে গেলে উপস্থিত নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হয়।

প্রায় আধ ঘণ্টা এ রকম চলার পরে গেটের উপরে এবং সামনে ব্যানার লাগানো হয়। তবে ছাত্রীদের তরফ থেকে অভিযোগ তোলা হয়, ব্যানার লাগানোর সময় কয়েক জন নিরাপত্তারক্ষী তাঁদের গায়ে হাত দিয়েছেন।

এ দিন বিকেলে হঠাৎই জনা পঞ্চাশেক অধ্যাপক উপাচার্যের বাড়ির সামনে জড়ো হন। তাঁরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলারও চেষ্টা করেন। তবে পড়ুয়াদের লাগাতার স্লোগানে কিছুক্ষণ পরেই ফিরে যান।

এর পরেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার। বৈঠকে সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের অধ্যাপক বিপ্লব লোহচৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম আলোচনার মাধ্যমে সমাধানসূত্রে পৌঁছতে। তাই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পড়ুয়ারা যে ধরনের ব্যবহার করল, সেভাবে পরিস্থিতির সমাধান সম্ভব নয়।’’ যদিও পড়ুয়াদের দাবি, একই সময়ে ৩৫০ জনের জমায়েত স্বতঃস্ফূর্ত হতে পারে না। সবটাই উপাচার্যের নির্দেশেই করা হচ্ছে।

অবস্থানে থাকা পড়ুয়াদের জন্য রাতে খাবার পৌঁছে দেন বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যেরা। আজ, মঙ্গলবার বৃহৎ জমায়েতের ডাক দিয়েছে এসএফআই। সেখানে উপস্থিত থাকার কথা ঐশী ঘোষ, সৃজন ভট্টাচার্য, বাদশা মৈত্রের। অশান্তির আশঙ্কায় উপাচার্যের বাসভবনের নিরাপত্তা আরও জোরালো করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিশ্বভারতী সূত্রে জানা যাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন