প্রতীকী ছবি।
স্যার, একটি ল্যুজশিট পাব?
মঙ্গলবার মাধ্যমিকের ইংরেজি পরীক্ষা চলছিল পাড়ুইয়ের ইউনিয়ন আমজাদ উচ্চবিদ্যালয়ে। পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকের কাছে এক পরীক্ষার্থী এমন আবদার করতেই, আরও কয়েক জন একই আর্জি জানায়। পাশের একটি স্কুল থেকে ল্যুজশিট আনিয়ে দেওয়া হয় পরীক্ষার্থীদের। প্রধান শিক্ষক তথা ইংরেজি শিক্ষক চিন্ময় চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘ইংরেজি পরীক্ষায় ভীতি যতই থাকুক, লেখার বিষয় যদি প্রিয় ক্রিকেটার কোহালি হয়, পড়ুয়ারা তো লিখবেই।’’
পরীক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের থেকে জানা গিয়েছে, অতিরিক্ত পাতা নেওয়ার হিড়িক শুধু পাড়ুইয়ে আটকে নেই। জেলার অধিকাংশ পরীক্ষাকেন্দ্রে একই ছবি। দুবরাজপুর শ্রী শ্রী সারদা বিদ্যাপীঠের সেন্টার ইনচার্জ ভবানীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়, ইংরেজির শিক্ষক অন্নদাশঙ্কর মণ্ডলরা বলছেন, ‘‘সোমবার বাংলা পরীক্ষার সব উত্তরপত্র দু’টি বস্তায় ভরা গিয়েছিল। ইংরেজির দিন তিনটি বস্তা লেগেছে।’’ পরীক্ষার্থীদের লেখার দক্ষতা যাচাই করতে লেটার, প্রবন্ধ, রিপোর্টিংয়ের মতো আবশ্যিক প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। এ বারও ছিল। তার মধ্যে মোবাইল হারানোর জন্য থানার আইসিকে চিঠি, একটি অগ্নিকাণ্ডের রিপোর্টিং-এর পাশাপাশি প্রশ্নপত্রের ১৩ নম্বর পাতায় ১০০ শব্দের কোহালির জীবনী লিখতে বলা হয়েছিল। নম্বর ছিল ১০। সঙ্গে বেশ কিছু তথ্য অবশ্য দেওয়া ছিল। তবে ল্যুজশিটের অন্য রহস্যও রয়েছে। পরীক্ষার্থীরা জানাচ্ছে, যেখানে লেটার ও রিপোর্টিং-এর জন্য প্রায় দেড় পাতা বরাদ্দ ছিল সেখানে বিরাটের জন্য বরাদ্দ ছিল একটি পাতার ৭০ শতাংশ মাত্র। খয়রাশোলের নাকড়াকোন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক বিদ্যুৎ সেনগুপ্ত বলছেন, ‘‘জায়গাটা কম ছিল সন্দেহ নেই। তবে ১০০-১২০ শব্দ লেখা যেত। কিন্তু, বিরাট আবেগেই উত্তরপত্র ভারী হয়েছে।’’