লাইনে দাঁড়িয়েই চলল ফর্ম পূরণ

প্রাথমিকের টেটের ফর্ম তোলার শেষ দিনে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলা যে ব্যবস্থাপনা দেখাল, প্রথম থেকে তা গ্রহণ করা হলে হয়রানি অনেকটাই কমত বলে মনে করছেন আবেদনকারীরা। শনিবার ফর্ম তোলার শেষ দিনে পুরুলিয়ায় সকাল থেকে আবেদনকারীদের ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। তবে এ দিন ফর্ম বিলির সময় কিছুটা এগিয়ে এনে আরও কয়েকটি কাউন্টার খোলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৫ ০০:৪১
Share:

শেষদিনে। বাঁকুড়ায় জেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে অভিজিৎ সিংহের তোলা ছবি।

প্রাথমিকের টেটের ফর্ম তোলার শেষ দিনে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলা যে ব্যবস্থাপনা দেখাল, প্রথম থেকে তা গ্রহণ করা হলে হয়রানি অনেকটাই কমত বলে মনে করছেন আবেদনকারীরা।

Advertisement

শনিবার ফর্ম তোলার শেষ দিনে পুরুলিয়ায় সকাল থেকে আবেদনকারীদের ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। তবে এ দিন ফর্ম বিলির সময় কিছুটা এগিয়ে এনে আরও কয়েকটি কাউন্টার খোলে। আবার বাঁকুড়ায় ফর্ম জমা নেওয়ার জন্য আলাদা করে জেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে কাউন্টার খোলা হল। সেখানে আবার ফর্ম অ্যাটেস্টেড-এর জন্য বেশ কয়েকজন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে (সাব-ইনস্পেক্টর) রাখা হয়েছিল। সব দেখে দুই জেলারই আবেদনকারীর মুখে শোনা গিয়েছে, এ সব ব্যবস্থা প্রথম দিন থেকে নিলে আমারা এতটা হয়রানির শিকার হতাম না।’’

গত কয়েকদিন ধরে ফর্ম অ্যাটেস্টেশন করাতে স্কুলে স্কুলে দৌড়তে হয়েছিল বাঁকুড়ার আবেদনকারীরা। এ দিন অবশ্য তাঁরা জমা দেওয়ার সময়েই কাউন্টারের কাছে চেয়ার-টেবিল সাজিয়ে বসে থাকা স্কুল শিক্ষা দফতরের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের দিয়ে অ্যাটেস্টেড করিয়ে নেন। বাঁকুড়ায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি রিঙ্কু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আবেদনকারীদের সুবিধার্থেই এসআই-দের এ দিন অ্যাটেস্টেশনের জন্য থাকতে বলা হয়েছিল।’’ এখানে অবশ্য মেডিক্যাল টিম দেখা যায়নি। পাশের জেলা পুরুলিয়ায় ফর্ম জমা নেওয়ার জায়গায় আবার মেডিক্যাল টিম ছিল। আবেদনকারীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁদের সুশ্রূষা করেন।

Advertisement

শেষের দিনে অবশ্য নির্ধারিত সময়ের আগে কাউন্টার খোলার ব্যবস্থা করেছিল পুরুলিয়ার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। এ দিন সাতটি কাউন্টারের পরিবর্তে তিনটি বাড়িয়ে মোট ১০টি কাউন্টার চালু করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদের সভাপতি হেমন্ত রজক। এ দিন পর্যন্ত পুরুলিয়ায় প্রায় ১৮ হাজার জন আবেদনকারী ফর্ম তুলেছেন বলে জানা গিয়েছে। বাঁকুড়ায় শনিবার বিকেল পর্যন্ত টেটে ফর্ম তুলছে প্রায় ২১ হাজার। তার মধ্যে জমা পড়েছে সাড়ে ১৮ হাজার ফর্ম। যদিও ২০১৩ সালে বাঁকুড়ায় প্রাথমিকের টেটে বসেছিলেন প্রায় ৯০ হাজার।

আগে ঘোষণা করা হয়েছিল, এ দিনই ফর্ম জমা দেওয়ারও শেষ দিন। তাই ফর্ম তুলতে আসা ছেলেমেয়েদের মধ্যে ফর্ম পেলেও সময়ের মধ্যে জমা দিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল। বাঁকুড়ায় অনেককে ফর্ম জমা দেওয়ার লাইনে দাঁড়িয়েই তা পূরণ করতে দেখা যায়। তবে বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, যাঁরা এ দিন জমা দিতে পারেননি, তাঁরা ৬ ও ৭ জুলাই বিদ্যাভবনে ফর্ম জমা দিতে পারবেন। পুরুলিয়াতেও দিন বাড়ানো হয়েছে। জানানো হয়েছে, পুরুলিয়ায় ফর্ম জমা নেওয়া হবে ৬ থেকে ৮ জুলাই।

দিনের শেষে বাঁকুড়ায় আবেদনকারী শুভজিৎ দত্ত, শ্রাবণী মহাপাত্র বলেন, ‘‘এ দিন ফর্ম জমা দিতে এসে অনেক কম হ্যাপা পোহাতে হয়েছে। আগে থেকে এই রকম ব্যবস্থা নেওয়া হলে সবার ভাল হতো।’’ শুক্রবার দিনভর লাইনে দাঁড়িয়েও ফর্ম তুলতে পারেননি মানবাজার ২ ব্লক এলাকার বাসিন্দা বুধন মুর্মু ও জালিম হাঁসদারা। এ দিন তাঁরা আশা নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে এ দিন বিকেল পাঁচটার পরেও প্রতিটি কাউন্টারে আবেদনকারীদের ভিড় থাকায় যতক্ষণ লাইন থাকবে ততক্ষণই ফর্ম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পুরুলিয়ার সংসদ। ফলে ফর্ম না পাওয়ার কোনও অভিযোগ মেলেনি বলে পুরুলিয়ার সংসদ সূত্রে জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন