ভর্তুকির টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে দুই আধিকারিককে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল আগেই। এ বার ওই একই অভিযোগে ৭৫ জন কৃষককে থানায় ডেকে পাঠাল পুলিশ। সাঁইথিয়ার কুনুরি সমবায়ের শনিবারের ঘটনা।
সাঁইথিয়া ব্লক কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, কৃষিতে ব্যবহৃত পাম্পসেটের জন্য সরকার ১০ হাজার টাকা করে ভর্তুকি দেয়। তার জন্য কৃষি দফতরে কেসিসি (কিসান ক্রেডিট কার্ড) ও সংশ্লিষ্ট পাম্প বিক্রেতার কোটেশন জমা দিতে হয়। কুনুরি এলাকার ৭৫ জন কৃষক স্থানীয় সমবায় থেকে কেসিসি এবং সিউড়ির এক সংস্থার থেকে কোটেশন নেয়। তা ব্লক কৃষি দফতরে জমাও দেন। সেই মতো দফতর কৃষকদের ভর্তুকির ১০ হাজার টাকার চেক দিয়ে দেয়। নিয়ম হল, এরপরে কৃষকরা ভর্তুকির চেক-সহ বাকি টাকা সমবায়ে জমা দেবেন। তারপর সমবায় কোটেশন দেওয়া সংস্থাকে সংশ্লিষ্ট চাষিদের নামে ডিও (ডেলিভারি অর্ডার) দেবে। এবং ওই সংস্থা চাষিদের কৃষি সামগ্রী ডেলিভারি দেওয়ার পর সমবায়ের থেকে টাকা বা চেক পাবে। কিন্তু এক্ষেত্রে নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ।
কেমন?
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যে সব কৃষকরা কৃষি দফতর থেকে ভর্তুকির ১০ হাজার টাকার চেক পেয়েছিলেন, তাঁরা সমবায়ে সেই চেক জমা দিয়ে টাকা নিয়ে নিয়েছেন। অর্থাৎ, বরাত পাওয়া সংস্থার পরিবর্তে ভর্তুকির টাকা নিয়ে নিয়েছেন কৃষকেরা। এরপরে গোটা ঘটনা পুলিশকে জানায় বরাত পাওয়া সংস্থা। কৃষি দফতরের এক কর্তার দাবি, ‘‘সমবায় কর্তাদের যোগসাজস ছাড়া এমনটা হতে পারে না।’’ এরপরেই গ্রেফতার করা হয় সমবায় সমিতির দুই আধিকারিক অশোক সাহা ও দেবাশিস ভট্টাচার্যকে। অশোকবাবু সমবায়ের সম্পাদক আর দেবাশিসবাবু ম্যানেজার।
এ দিকে, মামলার কথা শুনে আতান্তরে বহু কৃষক। এঁদের দাবি, ‘‘আমরা নিয়মের অত কচকচানি জানি না। ভর্তুকির চেক পেয়ে সমবায়ে জমা দিই। সমবায় টাকা দিয়ে দেয়।’’ কৃষকদের পক্ষে সলফার আবদুল হালিম, আবদুল রফিক, কুনুরির গনেশ গড়াই, অজয় গড়াই, রবীন্দ্রনাথ সাহারা দাবি করেছেন, ‘‘আমরা সমবায় থেকে টাকা নিয়ে অন্য জায়গা থেকে পাম্পসেট কিনেছি। ওই সংস্থা থেকেই পাম্পসেট কিনতে বা হতো তা জানা ছিল না!’’