দেউচায় ড্রাগনের ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’

গভীর রাত। আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত সেনার দল হেলিকপ্টার থেকে শত্রুর মাটিতে নেমে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে জঙ্গি শিবির নিকেশ করল। এ বারের কালীপুজোয় ভারতীয় সেনার তথাকথিত সেই ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ই থিম মহম্মদবাজারের দেউচা ড্রাগন ক্লাবের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৬ ০১:২৯
Share:

এই পুতুল-মুর্তি দিয়েই সেজেছে মণ্ডপ। —নিজস্ব চিত্র

গভীর রাত। আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত সেনার দল হেলিকপ্টার থেকে শত্রুর মাটিতে নেমে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে জঙ্গি শিবির নিকেশ করল।

Advertisement

এ বারের কালীপুজোয় ভারতীয় সেনার তথাকথিত সেই ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ই থিম মহম্মদবাজারের দেউচা ড্রাগন ক্লাবের। উদ্যোক্তাদের দাবি, ভারতীয় সেনা বাহিনীকে সম্মান জানাতেই এমন আয়োজন। শুক্রবার বিকেলেই ওই পুজোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এলাকার বিধায়ক নীলাবতী সাহা এবং জেলার সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। সঙ্গে ছিলেন বহু বিশিষ্ট মানুষজনও।

বিগত কয়েক বছর ধরেই কালীপুজোয় থিম পুজোর আয়োজন করে আসছে ড্রাগন ক্লাব। যে পুজোর সূচনা হয়েছিল চল্লিশের দশকে গ্রামের কয়েক জন মানুষের উদ্যোগে। তাঁদের অনেকেই আজ আর বেঁচে নেই। কিন্তু ক্লাবের হাত ধরে ওই পুজো ক্রমে এলাকার অন্যতম সেরা পুজো হয়ে উঠেছে। এ বার মুল মন্দিরের পিছনের ফাঁকা জমি জুড়ে মাটির পুতুল মূর্তি বসিয়ে তৈরি করা হয়েছে ভারতীয় সেনার সার্জিকাল ষ্ট্রাইকের দৃশ্য। তা ফুটিয়ে তুলতে জঙ্গিদের ছাউনি, কার্ডবোর্ডের হেলিকপ্টার ছাড়াও চার জঙ্গী ও সাত ভারতীয় জওয়ান মিলিয়ে মোট ১২টি মাটির পুতুল ব্যবহার করা হয়েছে।

Advertisement

পুজো কমিটির সভাপতি সীতেশ ঘোষ এবং সম্পাদক কৌশিক সালুইরা বলেন, ‘‘এলাকার লোকজনকে সচেতন করতে প্রতি বছরই কোনও না কোনও থিম বেছে নেওয়া হয়। ভারতীয় সেনারা যে বীরত্বের সঙ্গে শত্রু দেশের মাটিতে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালিয়েছে, তা এলাকার মানুষের কাছে তুলে ধরাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’’ আট দিন পরে আগামী শনিবার ওই কালীপ্রতিমার বিসর্জন হবে। এ ক’দিন পুজো উদ্যোক্তাদের অধিকাংশ পরিবার কার্যত একান্নবর্তী পরিবারে পরিণত হয়। এমনকী, যাঁরা দূর-দূরান্তে থাকেন, তাঁদের অনেকেই দুর্গাপুজোতে না এলেও এই কালীপুজো উপলক্ষেই পরিজনদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফেরেন। পুজোর ক’দিন নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি স্বাস্থ্যশিবির, দুঃস্থদের বস্ত্রদান ও এক দিনের পঙ্‌ক্তি ভোজেরও আয়োজন করা হয়।

ভিন্ রাজ্যে সেনায় কর্মরত হরিশ্যামল কর্মকার, বেঙ্গালুরুতে কর্মরত রাজীব পাল, জামশেদপুরে কর্মরত বিপিন ঘোষরা বলেন, ‘‘গ্রামের ওই কালীপুজোর আনন্দই আলাদা। তাই প্রতি বছর নিয়ম করে কালীপুজোয় বাড়ি আসি।’’ গ্রামের বধূ চুমকি সালুই, রুবি দাস, পলি ঘোষ, রিঙ্কি কর্মকার, সাবিত্র দাসদের কথায়, ‘‘ড্রাগন ক্লাবের কালীপুজো মানেই চমক। তাই এই পুজোর সময় বাপের বাড়ি বা বাইরে কোথায় ঘুরতে যাই না। নতুন জামাকাপড় পরে গ্রামেই সপরিবারে চুটিয়ে আড্ডা মারি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন