মা-শিশুর ভাস্কর্যের সাজ প্রশাসন ভবনে

যন্ত্র ব্যবহার করে বড় গাছ ১০-১২ ফুট নীচ থেকে শিকড় সমেত উঠিয়ে এখানে বসানো হবে জুলাই মাসে। ভবনের ঠিক সামনেই একটি গোলাকার ঘাসে ঘেরা অংশে রাখা হবে মা ও শিশু ভাষ্কর্যটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৮ ০২:০৩
Share:

সাজ: সিউড়ি প্রশাসন ভবনে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

সিমেন্ট-বালির বিমূর্ত ভাস্কর্যটির সামনে দাঁড়ালে মনে হয়, একটি ক্ষয়িষ্ণু গাছের গুঁড়ি থেকে মূর্ত হয়ে উঠছে মা-শিশু। বুঝতে আরও সুবিধা করে দেয় পাশেই রাখা একই বিষয়ের একটি ভাস্কর্য।

Advertisement

কোনও ‘আর্ট ওয়ার্কশপ’ নয়। শিল্প নিয়ে এমন কর্মকাণ্ডের দেখা মিলবে সিউড়ি জেলা প্রশাসন ভবন চত্বরে। সবুজ ও শিল্পের ছোঁয়ায় ধীরে ধীরে সাজছে জেলা প্রশাসন ভবন চত্বর। তারই চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। জেলাশাসকের ইচ্ছেয় সৌন্দর্যায়নে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে অসমের শিল্পীর তৈরি মা-শিশুর ভাস্কর্যগুলি।

জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলছেন, ‘‘মা ও শিশুর থেকে পবিত্র আর কিছু হতে পারে না। এখানে যাঁরা প্রতিনিয়ত আসছেন, তাঁদের ভাল লাগবে। থাকবে সবুজের ছোঁয়া। প্রশাসন ভবন ছাড়াও শহরের অন্য এলাকায় কিছু সৌন্দর্যায়নের কাজ হবে। সেটা হবে গ্রিন সিটি প্রকল্পে।’’

Advertisement

ভবনের সামনেই দাঁড় করানো সার সার চার চাকা গাড়ি। একটু তফাতে মোটরবাইক ও সাইকেল স্ট্যান্ড আর দিনের ব্যস্ত সময়ে বিভিন্ন কাজে আসা মানুষের ভিড়। জেলাশাসকের ইচ্ছেয় এই চেনা ছবিটাই বদলাতে শুরু করেছিল গত কয়েক মাস আগে থেকে। প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে গাড়ি, সাইকেল, বাইক পার্ক করার জায়গা সরিয়ে ভবনের সামনের ফাঁকা জায়গায় শুরু হয়েছিল সৌন্দর্যায়নের কাজ। প্রথমেই চারদিকে গ্রিল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় এলাকাটি। সাদা কালো কোয়ার্টজ পাথর বসিয়ে তৈরি হয়েছে পায়ে চলা পথ। বাকি এলাকাকে কয়েকটি জোনে ভাগ করে সেখানে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ভাবনা নেওয়া হয়েছে গাছের বাইরে মাটি ঢেকে দেওয়া হবে গালিচার মতো সবুজ ঘাসে।

জেলাশাসক জানাচ্ছেন, গাছ বসানোর ক্ষেত্রেও উন্নত ভাবনা নেওয়া হয়েছে। যন্ত্র ব্যবহার করে বড় গাছ ১০-১২ ফুট নীচ থেকে শিকড় সমেত উঠিয়ে এখানে বসানো হবে জুলাই মাসে। ভবনের ঠিক সামনেই একটি গোলাকার ঘাসে ঘেরা অংশে রাখা হবে মা ও শিশু ভাষ্কর্যটি।

কলকাতার একটি সংস্থা কাজের দায়িত্ব নিয়েছে। সংস্থার পক্ষে সুজিত সিংহচৌধুরী বলছেন, ‘‘প্রশাসন চেয়েছিল প্রশাসন ভবন ও শহরের বেশ কয়েকটি সৌন্দর্যায়িত এলাকা করা হোক। সেখানে বেশ কিছু বাস্তবসম্মত (রিয়ালিস্টিক) ও বিমূর্ত ভাস্কর্য তৈরি করার কথা। শিলচরের বাসিন্দা, শিল্পী স্বপন পাল সেই কাজটা করছেন।

বিষয় মা ও শিশু কেন?

শিল্পী স্বপন পাল বলছেন, ‘‘মানুষের বাঁচার রসদ দেয় গাছ। সন্তানের সবটুকু খারাপ নিয়ে তাকে মানুষ করার দায়িত্ব নেন মা। গাছের গুঁড়ির আদলে তৈরি মা ও শিশু ভাষ্কর্যটি গ্রিন সিটির ভাবনার সঙ্গে মিল রেখে তৈরি হয়েছিল।’’ তবে সাধারণ মানুষ যাতে বুঝতে পারেন তাই প্রশাসনিক কর্তাদের ইচ্ছেয় বিমূর্ত ভাস্কর্যটি নয়, স্টোন কার্ভিংয়ে তৈরি মা-শিশু ভাস্কর্যই এখানে রাখা হবে। অন্যটি সরে যাবে সার্কিট হাউসে প্রাঙ্গণে। যেখানে বিশিষ্ট মানুষদের আনাগোনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন