সভায়: পুরুলিয়ায় সূর্যকান্ত মিশ্র। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল ও বিজেপিকে এক সারিতে রেখে পুরুলিয়ার জনসভায় নিশানা করলেন সূর্যকান্ত মিশ্র। ডাক দিলেন নবান্ন অভিযানের।
সোমবার বিকেলে পুরুলিয়া শহরের ভিক্টোরিয়া স্কুল ময়দানে সিপিএমের জনসভা ছিল। সেই সভায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা পলিটব্যুরোর সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র ২২ মে বামেদের পক্ষ থেকে নবান্ন অভিযানের ডাক দেন।
এ দিনের সভায় নারদ কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীদের প্রসঙ্গ টেনে সূর্যকান্ত বলেন, ‘‘৩৪ বছরে আমাদের নামে এ রকম অভিযোগ ওঠেনি। একবার এক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিম এথিক্স কমিটির সভায় সেই অভিযুক্তকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আর কলকাতার একটি সভায় আমরা দেখলাম অভিযুক্তদের দাঁড় করিয়ে অভয় দিয়ে বলা হচ্ছে, কারও কিচ্ছু হবে না।’’
এই প্রসঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘আপনার তো ৫৬ ইঞ্চি ছাতি। তাহলে এখনও অভিযুক্তরা গ্রেফতার হয়নি কেন?’’
সভায় বিজেপি ও আরএসএস-এরও সমালোচনা করেন সূর্যকান্ত। তিনি বলেন, ‘‘স্বাধীনতা আন্দোলনে আরও অনেকের সঙ্গে বামপন্থীরাও রক্ত দিয়েছে। কিন্তু বিজেপি দেয়নি। আরএসএস বলেছিল, বৃটিশ সরকারের বিরোধিতা করবে না। দেশদ্রোহী আরএসএস এক ফোঁটা রক্ত তো দেয়ইনি, উল্টে মহাত্মা গাঁধীকে গুলি করে মেরেছে। আর ওরা রাম সাজছে।’’
তাঁর অভিযোগ, শিশুদের হাতে মিছিলে অস্ত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু রাজ্য সরকার তা নিয়ে কিছু করতে পারছে না।
এ দিনের সভায় প্রায় ৯ হাজার লোক হয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। ময়দান ভরে গিয়েছিল। বাইরেও কিছু মানুষ দাঁড়িয়েছিলেন। ভিড় দেখে উজ্জীবিত বামেরা। সূর্যকান্ত সভায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, বামেদের নাকি অ্যানিমিয়া হয়েছে। সভার ভিড় দেখে যান উনি।’’
এ দিনের সভায় বক্তব্য পেশ করেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাসুদেব আচারিয়া। তিনি রাজ্যে বেআইনি খাদানের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘রাজ্যের কয়লা অঞ্চলে বেআইনি খাদান থেকে প্রতিদিন ৬৫ লক্ষ টাকা আসে। এই টাকা কোথায় যায়? মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, রঘুনাথপুরে ইন্ডস্ট্রিয়াল পার্ক হবে। কোথায় শিল্প?’’ সভায় বক্তৃতা দেন দলের জেলা সম্পাদক মণীন্দ্র গোপও।
তবে দীর্ঘদিন পরে সিপিএমের জেলাস্তরের প্রকাশ্য সভায় অনুপস্থিত থাকলেন দলের বর্ষীয়ান নেতা নকুল মাহাতো। কর্মীদের অনেকে নেতাদের কাছে জানতেও চান, ‘‘নকুলদা নেই কেন?’’
দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, নকুলবাবুর কন্যা সাম্যপ্যারী মাহাতো বলেন, ‘‘বাবা আগের দিনই জেলায় কর্মসূচিতে ছিলেন। সেখানেই সারা দিন ছিলেন। এখন বয়স হয়েছে। তবু এ দিন সভায় আসতে চাইছিলেন। আমরাই বারণ করলাম। বাড়িতে বসেই বারবার ফোন করছেন। জানতে চাইছেন, কত লোক হয়েছে, কে কে এসেছে।’’