যুব আবাস, মোটেল, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল— রঘুনাথপুরে চালু হওয়া নতুন তিনটি প্রকল্পই হোঁচট খাচ্ছে জলের অভাবে। সেই সমস্যা মেটাতে এ বারে উদ্যোগী হল প্রশাসন। রঘুনাথপুর মহকুমাশাসক দেবময় চট্টোপাধ্যায় জানান, সেপ্টেম্বরের গোড়ায় বিভিন্ন দফতরকে নিয়ে বৈঠক করার পরে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। শীতের আগেই যুব আবাস ও মোটেলের জলের সমস্যা মিটিয়ে ফেলার বিষয়ে তাঁরা যথেষ্ট আশাবাদী। সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের জন্য আলাদা ভাবে জলের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
যুব আবাস, মোটেল এবং সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ক্ষেত্রে প্রশাসন প্রাথমিক ভাবে গভীর নলকূপ খুঁড়ে জলের ব্যবস্থা করার কথা ভেবেছিল। কিন্তু যুব আবাসে কাছে দু’টি জায়গায় পূর্ত দফতর প্রায় হাজার ফুট মাটি খুঁড়েও জলস্তর পায়নি। দফতরের হাউজিং বোর্ড সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের কাছে দু’টি জায়গায় মাটি খুঁড়েছিল। একটিতে জল মিললেও অন্যটিতে মেলেনি। আপাতত ওই হাসপাতালে বহির্বিভাগ চালু হয়েছে। একটি নলকূপ থেকেই জল যাচ্ছে সেখানে। কিন্তু তাতে প্রয়োজন মিটছে না। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘তিনশো শয্যার ইনডোর কবে চালু হবে এই মুহূর্তে আমাদের কাছে তার কোনও খবর নেই। তবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চাইছে আগে থেকে জলের ব্যবস্থাটা করে রাখতে।’’
কী ভাবে হবে সেই ব্যবস্থা? প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে পুরুলিয়াতে জেলা শাসকের কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হয়। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ), অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন), মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর)-সহ বৈঠকে ছিলেন জনস্বাস্থ্য ও করিগরি দফতর, পূর্ত দফতরের কর্তারা। প্রশাসন সূত্রের খবর, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, রঘুনাথপুর পুরসভা যে নিজস্ব জলপ্রকল্প গড়ছে, তার দ্বিতীয় পর্যায়ের রিজার্ভার থেকে জল সরবারহ করা হবে যুব আবাসে। পুরসভা এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জলের সঙ্কট হয় গরম কালে। আর পর্যটকেরা পুজোর আগে থেকে শীতের শেষ পর্যন্ত মূলত আসেন। আশা করছি সমস্যা হবে না।’’
সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের জল আনার ব্যবস্থা করা হবে রঘুনাথপুর শহরে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের জামসোল প্রকল্প থেকে। জামসোল প্রকল্পে একটি গভীর নলকূপ রয়েছে। তার থেকে আপাতত শুধু হাসপাতালেই জল যাবে। পরে আরও দু’টি গভীর নলকূপ খোঁড়া হবে ওই প্রকল্পে। তার থেকে মহকুমাশাসকের বাংলো সংলগ্ন কর্মী আবাসনেও জল দেওয়া হবে।
মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর) দেবময় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলাশাসকের কার্যালয়ে বৈঠকের পরে জল সরবরাহের রূপরেখা স্থির হয়ে গিয়েছে। পরের ধাপে সমস্ত দফতর ও পুরসভাকে নিয়ে প্রাথমিক সমীক্ষা হয়েছে। বিশদে সমীক্ষা করে দ্রুত রিপোর্ট দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে পিএইচইকে।’’ তিনি জানান, সমীক্ষার জন্য তিন লক্ষ টাকা জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরকে দেওয়া হবে। মহকুমা থেকে সেই প্রস্তাব জেলা স্তরে পাঠানো হচ্ছে। শীঘ্রই রিজার্ভার থেকে ওই এলাকাগুলি পর্যন্ত পাইপ লাইন পাতার কাজ শুরু করবে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। মহকুমাশাসক জানান, সম্প্রতি যুব আবাসে জলের ব্যবস্থা করার জন্য সমীক্ষা শুরু করে দিয়েছে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর।