ডায়েরিয়া মোকাবিলা করতে ট্যাঙ্ক পরিষ্কারের নিদান দিয়েছিল ব্লক প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতর। আর সেই কাজ করতে গিয়ে মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত নির্জলা হয়ে থাকল পুরো মানবাজার। শনিবার দুপুর থেকে জল সরবরাহ ফের চালু হলেও পরিষেবা পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। রবিবার থেকে ফের ব্লকের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা নিয়মিত ভাবে জল পাবেন বলে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
মানবাজার থানার বলুডি-সহ চারটি গ্রামে সম্প্রতি ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। সেই সময় বালুডি গ্রামের রিজার্ভারটি পরিষ্কার করার কথা ওঠে। বলুডি, ভেলাইগোড়া, মধুপুর, পাথরমহড়া গ্রামের বাসিন্দাদের সরবরাহের জল খেতে নিষেধ করে প্রশাসন। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের কর্মীরা বলুডি গ্রামের রিজার্ভার পরিষ্কার করার কাজ শুরু করেন। হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের কাছে কংসাবতী নদী থেকে পাম্পের মাধ্যে জল তুলে মানবাজারে সরবরাহ করা হয়। সেই পাম্প হাউসের মূল রিজার্ভারটি পরিষ্কারের কাজও শুরু হয়। এর ফলে পুরো মানবাজারে জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে।
কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আগে থেকে তাঁদের না জানিয়ে হঠাৎ জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া সমস্যায় পড়েন তাঁরা। প্রায় পাঁচশো কল থেকে শহরের প্রায় তিরিশ হাজার বাসিন্দা সরবরাহের জল নেন। মানবাজার নামোপাড়ার বাসিন্দা চণ্ডীচরণ চক্রবর্তী, বাউরিপাড়ার মণি বাউরি, পুতুল বাউরিরা বলেন, ‘‘কী হচ্ছে কিছু বুঝতে পারছি না। কিছু জল জমানো ছিল। সেটা দিয়ে এক দিন চলেছে। কিন্তু তার পর থেকেই খুব সমস্যায় পড়েছি।’’ এই প্রসঙ্গে ব্লক প্রশাসন এবং জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।
বিডিও (মানবাজার ১) সত্যজিৎ বিশ্বাসের দাবি, বলুডি গ্রামের রিজার্ভার পরিষ্কার করার কথা বলা হলেও একই সঙ্গে যে হরেকৃষ্ণপুরের রিজার্ভারটিও পরিষ্কার করা হবে সেই বিষয়ে ব্লক প্রশাসনের কাছে কোনও খবর ছিল না। বিএমওএইচ (মানবাজার ১) কালীপদ সোরেন অবশ্য জানিয়েছেন, জলের জন্য নিজস্ব বন্দোবস্ত থাকায় হাসপাতালে কোনও সমস্যা হয়নি।
জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সৌহার্দ ঘোষ বলেন, ‘‘দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে মাটির নীচে থাকা রিজার্ভার দু’টির শোধন হয়নি। হরেকৃষ্ণপুর এবং বলুডির রিজার্ভার দু’টিরও প্রাথমিক শোধন হয়েছে। তবে বলুডির রিজার্ভারটির বিশেষ ধরনের শোধনের প্রয়োজন রয়েছে। এই ধরনের শোধনের জন্য পুরুলিয়ায় কর্মী নেই। খুব শীঘ্রই কলকাতা থেকে কর্মীরা এসে শোধন করে দিয়ে যাবেন। তাই এই ক’টা দিন ওই রিজার্ভার থেকে জল সরবরাহ করা যাবে না।