তারা মায়ের রথযাত্রা আভিজাত্যে অমলিন

এলাকায় আগেই বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা রাস্তার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন। কেন না, এই পথ দিয়েই যে মা তারা রাজবেশে রাজ-রাজেশ্বরী সাজে রথে চেপে বের হবেন। যদি রথের চুড়ো ঠেকে কোথাও!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তারাপীঠ শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৬ ০১:৩১
Share:

মা তারার রথকে ঘিরে ভক্তের ঢল। নিজস্ব চিত্র।

এলাকায় আগেই বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা রাস্তার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন। কেন না, এই পথ দিয়েই যে মা তারা রাজবেশে রাজ-রাজেশ্বরী সাজে রথে চেপে বের হবেন। যদি রথের চুড়ো ঠেকে কোথাও!

Advertisement

রথে তারাপীঠের মা তারার রথযাত্রা বহুকালের প্রথা। ঘড়ির কাঁটা দুপুর তিনটে ছুঁতেই চিঁড়ে, পাঁচ রকম মিষ্টি, ফল দিয়ে ভোগ নিবেদনের পরে বিশেষ পুজো। রথ উপলক্ষে দেবীকে জিলিপির ভোগও নিবেদন করা হয়। রথ বের করানোর আগে বেনারসি কাপড় পরানো হয়। প্রাচীন প্রথা মেনে মা তারাকে অপরাজিতা, জবা, রজনীগন্ধা ফুলের বড় বড় মালা দিয়ে সাজানো হয়। তারপরে মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে মাকে বের করে মন্দিরের মূল প্রবেশ দ্বারের নীচে দাঁড়িয়ে থাকা সুসজ্জিত রথে চাপানো হয়। শুরু হয় যাত্রা।

প্রথমে প্রথা মেনে মা তারাকে মূল প্রবেশ দ্বার থেকে উত্তরমুখে নিয়ে যাওয়া হয়। উত্তর মুখে রথে চেপে দ্বারকা সেতু সংলগ্ন রামপুরহাট-সাঁইথিয়া রাস্তা ধরে রথ তারাপীঠের তিন মাথা মোড় হয়ে এগিয়ে যায়। এবং মা তারাকে রথে চাপিয়ে আবারও মন্দিরের মূল প্রবেশ দ্বারেই নিয়ে আসা হয়। কতো

Advertisement

তারা মাতা সেবাইত সমিতির সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাপ-ঠাকুরদার আমল থেকে এই রথযাত্রা চালু। বিশেষ পুজো শেষে মাকে রাজবেশে তারাপীঠ এলাকায় ঘোরানো হয়। রথের দড়ি টানার জন্য বাইরে থেকে আসা দর্শনার্থীদের ভিড়ও হয়। এছাড়া রথযাত্রা উপলক্ষে তারাপীঠ-সহ সংলগ্ন এলাকার মানুষজনও ভিড় করে। রথের দড়ি টানার জন্য তাঁদের মধ্যেই কাড়াকাড়ি হয়।’’ বুধবার দুপুরে তারাপীঠ এলাকায় গিয়ে দেখা গেল তারকেশ্বরের তেঁতুল তলার বাসিন্দা সঞ্জয় গোস্বামী মন্দিরের প্রধান ফটকের নীচে রথ সাজাতে ব্যস্ত। সঞ্জয় গোস্বামী এক দশক ধরে রথের দিন মা তারার রথ সাজাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘আজ থেকে দশ বছর আগে আকস্মিক ভাবে মা তারাকে রথের দু’দিন সাজানোর দায়িত্ব পেয়েছিলাম। এখনও চালিয়ে যাচ্ছি।’’ তাঁর সঙ্গে তারকেশ্বরের দুধকুমার হাজরা, শম্ভুনাথ হাজরা, সুমন হাজরা, সন্তোষ কর্মকাররা ফুল দিয়ে প্রায় ১২ ফুট উচ্চতার রথ সাজাচ্ছেন। বর্ধমানের মেমারি থেকে আসা এক দর্শনার্থী বললেন, ‘‘এ বারই প্রথম রথের দিন তারাপীঠে এসেছি। এসেই যখন পড়েছি তখন মায়ের রাজবেশে নগর প্রদক্ষিণ করা দেখেই যাব।’’ একই বক্তব্য কলকাতার বালিগঞ্জ থেকে আসা কল্লোল ভট্টাচার্য, কমলা ভট্টাচার্যদের। তারাপীঠে রথ উপলক্ষে এলাকায় সিউড়ি থেকে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রথকে ঘিরে অন্যবারের মতোই মানুষের উন্মাদনা ছিল এ বারও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন