কাশীপুর

শিক্ষক কম, ধুঁকছে প্রাথমিক

কোথাও এক জন শিক্ষক একা হাতে স্কুল সামলান। কোথাও স্থানীয় যুবকেরা ক্লাস নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। শিক্ষকের অভাবে এ ভাবেই ধুঁকছে পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের গৌরাঙ্গডি পঞ্চায়েতের বেশ কিছু প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্কুল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আদ্রা শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৪২
Share:

কোথাও এক জন শিক্ষক একা হাতে স্কুল সামলান। কোথাও স্থানীয় যুবকেরা ক্লাস নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। শিক্ষকের অভাবে এ ভাবেই ধুঁকছে পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের গৌরাঙ্গডি পঞ্চায়েতের বেশ কিছু প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্কুল। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই। সংগঠনের নেতা সোমনাথ দুবে জানান, অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকে স্মারকলিপি দিয়ে ওই স্কুলগুলিতে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়েছে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(প্রাথমিক) সঙ্ঘমিত্র মাকুড় জানান, যে সমস্ত স্কুলে এক জন শিক্ষক রয়েছেন টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগে সেগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

Advertisement

জেলা শিক্ষা দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌরাঙ্গডি পঞ্চায়েত এলাকায় ১৪টি প্রাথমিক ও তিনটি উচ্চ প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। প্রতিটিতেই কমবেশি শিক্ষকের সঙ্কট রয়েছে। তবে মাজরামুড়া, সিহিকা ও বস্তারডি— এই তিনটি প্রাথমিক স্কুলে সমস্যা গুরুতর। ওই স্কুলগুলির গড় ছাত্র সংখ্যা পঞ্চাশ-ষাট হলেও শিক্ষক রয়েছে মাত্র এক জন করে। সুতাবই উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে প্রায় দু’শো পড়ুয়ার জন্য রয়েছেন মাত্র তিন জন শিক্ষক।

যে সমস্ত স্কুলে এক জন শিক্ষক রয়েছে সেগুলিতে কার্যত পড়াশোনাই হয় না বলে অভিবাবকদের একাংশের অভিযোগ। রামমোহন মুর্মু, দুলাল বাউড়ি, সমর বাউড়ি, তুলসী গরাইদের মতো কয়েকজন অভিভাবক বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরেই স্কুলগুলিতে পড়াশোনা হয় না বললেই চলে।’’ স্থানীয় সূত্রের খবর, মাজরামুড়া স্কুলের একমাত্র শিক্ষক অবসর নেওয়ার পরে জানুয়ারি মাস জুড়ে পাশের তালাজুড়ি স্কুল থেকে শিক্ষক পাঠিয়ে স্কুলটি চালু রাখতে হয়েছে। অন্যদিকে সুতাবই উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় স্থানীয় কিছু যুবক মাঝেমধ্যে স্কুলে গিয়ে পড়ানোর কাজ চালান। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পিন্টু ঘোষ জানান, স্কুলে প্রায় দু’শো পড়ুয়া রয়েছে। দু’জন স্থায়ী ও এক জন অতিথি শিক্ষক রয়েছেন। তাঁরা সমস্ত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হিমসিম খান বলে অনেক বার জেলা শিক্ষা দফতরে অতিথি শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান। পিন্টুবাবু জানান, কোন শিক্ষক অনুপস্থিত থাকলে স্থানীয় যুবকেরা সাহায্য করেন বটে, কিন্তু সে ভাবে সমস্যা পুরোপুরি মেটার নয়।

Advertisement

বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনগুলির দাবি, প্রাথমিক স্কুলে মিড-ডে মিলের কাজ সামলে এক জন শিক্ষকের পক্ষে পড়ানোর কাজ এক প্রকার অসম্ভব। তাঁদের দাবি, মি-ডে মিলের দায়িত্ব সামলাতেই এক জন শিক্ষককে প্রায় পুরো সময় দিয়ে দিতে হয়। তার পরে পঠনপাঠনের জন্য সময় দেওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে। গৌরাঙ্গডি পঞ্চায়েত এলাকায় শিক্ষকের অভাবের কথা মেনে নিয়েছেন তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন শিক্ষা সেল-এর স্থানীয় নেতা সিদ্ধার্থ পাল। তিনি বলেন, ‘‘জেলা জুড়েই শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে। অন্য স্কুল থেকে শিক্ষক পাঠিয়ে অনেক জায়গায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন