লাফিয়ে নামল পারদ

পুরুলিয়া জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও ৬ ডিগ্রি নেমে যায়। তাপমাত্রা এ ভাবে এক ধাক্কায় এতটা নেমে যাওয়ায় শৈত্য প্রবাহ চলছে গোটা জেলা জুড়ে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:১৪
Share:

n ওম: নিভে যাওয়া বনভোজনের উনুনে উষ্ণতার খোঁজ। বান্দোয়ানের দুয়ারসিনিতে। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো

পশ্চিমি ঝঞ্ঝা সরতেই ঝুপ করে নেমে গেল পারদ। শনিবার পুরুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নামল ৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, বাঁকুড়ায় ৮.৫ ডিগ্রিতে। ঠান্ডা হাওয়ার দাপটে কার্যত জবুথবু অবস্থা দুই জেলার বাসিন্দাদের। এরই মধ্যে ঝালদা ২ ব্লকের অযোধ্যা পাহাড় সংলগ্ন বেগুনকোদর ও ঝালদা ১ ব্লকের বেশ কিছু গ্রাম থেকে ‘বরফ’ পড়েছে বলে দাবি করেন স্থানীয়েরা। যদিও তা বরফ বলে মানতে নারাজ পুরুলিয়া জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্র।

Advertisement

পুরুলিয়া জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও ৬ ডিগ্রি নেমে যায়। তাপমাত্রা এ ভাবে এক ধাক্কায় এতটা নেমে যাওয়ায় শৈত্য প্রবাহ চলছে গোটা জেলা জুড়ে।

তবে চলতি বছরে পুরুলিয়া জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছিল গত ২০ ডিসেম্বর। সে দিন পারদ ঠেকেছিল ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বাঁকুড়ায় অবশ্য এ দিনই ছিল মরসুমের শীতলতম দিন। শুক্রবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩.৩। কিন্তু আকাশ মেঘমুক্ত থাকায় পারদ নেমে যায় আরও। শনিবার দিনভর ঠান্ডা ও উত্তুরে হাওয়ার দাপট ছিল সর্বত্র। শরীর থেকে শীতবস্ত্র খোলাই যায়নি।

Advertisement

বড়দিনের পরের দিন ঘুর্ণাবর্তের জেরে দুই জেলায় বৃষ্টি হলেও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা বেশিই ছিল। পরের দিনও মেঘ কাটেনি। বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হয় বিভিন্ন এলাকায়। তারপর থেকে মেঘ সরতেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পারদ নামতে শুরু করে। শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই বোঝা যাচ্ছিল ঠান্ডা হাওয়ার দাপট।

কনকনে ঠান্ডায় যেখানে আগুন জ্বালানো হচ্ছে, সেখানেই জড়ো হচ্ছেন মানুষজন। চায়ের দোকানে থিকথিকে ভিড়। ঠান্ডার দাপটে সকাল ন’টার আগে ঘর থেকে অনেকেই বেরোতে চাইছেন না। আনাজ বিক্রেতা আড়শার জামবাদ গ্রামের বাসিন্দা সুরজিৎ মাজি, পুরুলিয়া ১ ব্লকের কাঁটাবেড়া গ্রামের বাসিন্দা পঙ্কজ মাহাতোদের কথায়, ‘‘আমরা সকালে আনাজ তুলে বাজারে নিয়ে যাই। কিন্তু এত ঠান্ডা যে সকালে গাছে হাত দিতেই পারছি না।’’

এমন আবহাওয়ায় আজ, রবিবার পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে পিকনিকের ভিড় উপচে পড়বে বলে মনে করছেন পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা। মেঘ কাটিয়ে শীত ফিরতেই বাঁকুড়ার অন্যতম পর্যটন স্থল মুকুটমণিপুরে পিকনিক করতে আসা মানুষজনের ভিড় শুরু হয়েছে। এ দিন অনেকেই মুকুটমণিপুরে বেড়াতে গিয়েছিলেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিমত, আজ, রবিবার শীতের দাপট একই রকম থাকলে ভিড় আরও বাড়বে।

শুশুনিয়া পর্যটনকেন্দ্রেও দল বেঁধে বেড়াতে যাওয়া মানুষের ভিড় ছিল ভালই। এ দিন শুশুনিয়া পাহাড়ে সপরিবারে বেড়াতে গিয়েছিলেন ওন্দার বাসিন্দা অমিত চৌধুরী। তিনি বলেন, “গত কয়েকদিন মেঘ ও বৃষ্টির জন্য বেরোতেই পারিনি। এ দিন সকাল থেকেই আকাশ পরিষ্কার ও শীত ফিরে আসায় আমরা খুশি। পরিবার নিয়ে তাই শুশুনিয়ায় চলে এলাম।”

তবে এ সবের মধ্যেই নতুন বছরের শুরুর দিনে বৃষ্টির পূর্বাভাস মনে আশঙ্কা ধরিয়েছে শীতপ্রেমীদের। বছরের প্রথম ও শেষ দিন পিকনিকের ঢল নামে জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে। বৃষ্টিতে সব পণ্ড হলে পর্যটনকেন্দ্রের ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। তবে আপাতত বছরের শেষ ক’টা দিন আবহাওয়া ঠিক থাকুক, এটাই চাইছেন জেলাবাসী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন