লক্ষণহীন করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ‘সেফ হোম’ গড়বে প্রশাসন

নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজ়িটিভ এলেও শরীরে কোনও করোনা উপসর্গ নেই— এমন রোগীদের চিকিৎসার জন্য এ বার বীরভূমের প্রতিটি ব্লকে ‘সেফ হোম’ গড়ে তোলার নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য দফতর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ব্যাপারে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে জেলা প্রশাসন এবং জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের ভিডিয়ো কনফারেন্সে কথা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২০ ০৫:২৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজ়িটিভ এলেও শরীরে কোনও করোনা উপসর্গ নেই— এমন রোগীদের চিকিৎসার জন্য এ বার বীরভূমের প্রতিটি ব্লকে ‘সেফ হোম’ গড়ে তোলার নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য দফতর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ব্যাপারে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে জেলা প্রশাসন এবং জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের ভিডিয়ো কনফারেন্সে কথা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

সূত্রের খবর, এ দিনের কনফারেন্সে বীরভূম প্রশাসন রাজ্যকে জানিয়েছে, প্রতিটি ব্লকে ‘সেফ হোম’ গড়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী জেলায় নেই। চিকিৎসক এবং কর্মী অভাবের কথা মাথায় রেখে উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য রামপুরহাট এবং বীরভূম স্বাস্থ্য জেলায় দু’টি জায়গা ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসন চিহ্নিত করে রেখেছে। ওই তিন জায়গাতেই রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতো ‘সেফ হোম’ গড়ে তোলা হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু এ দিন বলেন, ‘‘উপসর্গহীন করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য আমরা কিছু দিন আগেই দু’টি স্বাস্থ্য জেলায় দু’টি জায়গা চিহ্নিত করে রেখেছি। তার মধ্যে তারাপীঠ ঢোকার আগে একটি লজে ১৫০ জনের চিকিৎসা করা হবে। আর বোলপুরে লোকালয় থেকে দূরে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের নির্মীয়মাণ ভবনে ১০০ জনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘প্রতিটি ব্লকে চিকিৎসকের অভাবের কথা মাথায় রেখে আপাতত দু’টি জায়গাকে সেফ হোম হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। ভবিষ্যতে প্রয়োজন পড়লে দুবরাজপুরের নিরাময় যক্ষ্মা হাসপাতালেও উপসর্গহীন ১০০ জনের চিকিৎসার জন্য ‘সেফ হোম’ গড়ে তোলার কথা জেলা প্রশাসন চিন্তা ভাবনা করছে।’’

Advertisement

আক্রান্ত যত বাড়ছে, ততই তাঁদের চিকিৎসা নিয়ে চাপও বাড়ছে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের উপরে। রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার এক চিকিৎসক জানাচ্ছেন, রামপুরহাটের কোভিড হাসপাতালে ব্লক হাসপাতাল এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকদের ডিউটি করতে হয়। আবার ওই সমস্ত চিকিৎসককেই ব্লক স্তরে সরকারি নিভৃতবাসগুলিতে ডিউটি করতে হয়। এখন তারাপীঠের লজে নতুন করে উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য সেই ব্লক ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকদের ডিউটি করতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্লকে যদি ‘সেফ হোম’ করা হয়, তা হলে চিকিৎসকদের আরো বেশি চাপ পড়বে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বীরভূমে করোনা পজ়িটিভদের অধিকাংশই উপসর্গবিহীন। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য রামপুরহাট ও বীরভূম স্বাস্থ্য জেলায় একটি করে কোভিড লেভেল ফোর হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়েছে। ৪০টি করে দু’টি কোভিড হাসপাতালে মোট ৮০টি শয্যা আছে। বর্তমানে দু’টি হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হচ্ছে। শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৪০। এঁদের মধ্যে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার আক্রান্ত ১৫০ জন। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলায় সংখ্যাটি ৯০। শুক্রবার পর্যন্ত রামপুরহাটের কোভিড হাসপাতালে ১২ জন করোনা আক্রান্ত ভর্তি আছে। বোলপুরের কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৭ জন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন