বিষ্ণুপুর পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়িতে জয়া রজক। ছবি: শুভ্র মিত্র
জমি নিয়ে দুই পরিবারের বিবাদে আটকে গেল এক প্রতিবন্ধী মহিলার গৃহ নির্মাণ।
জন্মের পরই বাবাকে হারিয়েছিলেন বিষ্ণুপুর পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জয়া রজক। প্রতিবন্ধী জয়া ভাইয়ের সংসারেই বাস করেন। স্থানীয় কাউন্সিলরের উদ্যোগে সরকারি প্রকল্পে তাঁর জন্য একটি গৃহ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
বাড়ি পুরনো হওয়ায় সেটি ভেঙেই নতুন গৃহ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জয়ার পরিবার। এরপরই বিপত্তির সূত্রপাত। জয়ার ভাই শঙ্কর রজকের অভিযোগ, পুরনো বাড়ি ভাঙার পরই জমিরক দখল নিতে ছুটে আসে প্রতিবেশী সুশান্ত রক্ষিতের পরিবার। এরপর জেলাশাসক, মহকুমাশাসক এবং থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শঙ্কর। তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘২৮ জানুয়ারি সুশান্ত জনা দশেক জন লোক নিয়ে এসে আমার নির্মীয়মান শৌচালয় ভেঙে, গাছপালা কেটে, দিদির গলা টিপে ধরে। পরের দিন বাড়িতে এসে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়।’’ শঙ্কর বলেন, ‘‘আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ঘটনার কথা প্রশাসনের কাছে জানিয়েও প্রতিকার হয়নি।”
অন্যদিকে, সুশান্তের দাবি, শঙ্করের বাবা প্রায় দু’কাঠা জমি তাঁদের বিক্রি করেছিলেন। বিক্রির রেকর্ড না হলেও জমির দলিল তাঁদের কাছে রয়েছে। সুশান্ত বলেন, ‘‘আমরা পুরসভায় অভিযোগ জমা দিয়েছি। বিবাদ মেটানোর আগে নির্মাণ শুরুর করায় আমরা আপত্তি করেছি”। এদিকে শঙ্করের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘দলিল থাকলেও ৫০ বছর পরেও কেন রেকর্ড করতে পারেনি রক্ষিত পরিবার।”
দুই পরিবারের বিবাদের জেরে জয়ার জন্য বাড়ি নির্মাণের কাজ বন্ধ করেছে পুরসভা। ১০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলার রবিলোচন দে বলেন, “প্রতিবন্ধী মহিলা বলেই বাড়িটি তাড়াতাড়ি তৈরি করা প্রয়োজন ছিল। আমি ঠিকাদার নিয়ে বাড়ি নির্মাণের জন্য রজকদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। রক্ষিতরা বাধা দেওয়ায় ফিরে আসি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পুরসভা নোটিস ধরালেও ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে রক্ষিতরা আসেননি। পুরপ্রধানকে জানানো হয়েছে।” মহকুমা শাসক (বিষ্ণুপুর), মানস মণ্ডল বলেন, “জায়গার বিবাদ দ্রুত নিষ্পত্তি করতে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে জানানো হচ্ছে। আশা করি উপভোক্তা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন না।’’
পুরপ্রধান শ্যামাপদ মুখোপাধ্যায় বলেন, “জমি নিয়ে বাধা এলে বাড়ি নির্মাণ করা যায় না। বিবাদ মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। প্রতিবন্ধী মহিলার বাড়ি নিশ্চয় হবে।”