Anubrata Mandal

অনুব্রত নেই, জেলার বিজয়া সম্মিলনী কবে

দলের কর্মীদের একাংশের দাবি, এর থেকেই পরিষ্কার, অনুব্রত এক বছরের বেশি সময় ধরে না-থাকলেও এখনও দলের ‘ছন্নছাড়া’ ভাবটা কাটেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:১০
Share:

অনুব্রত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।

জেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যানেদের নামের যে তালিকা সোমবার প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস, তাতে অনুব্রত মণ্ডলের নাম নেই। ফলে, তাঁকে ছেঁটে ফেলা হল বলেই মনে করছেন অনুবূ্রতের অনুগামীরা। একই সঙ্গে তাঁরা মনে করাচ্ছেন, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ থাকলেও জেলা স্তরে এখনও বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করতে পারেননি বর্তমান জেলা নেতৃত্ব। কবে হবে সেই আয়োজন, স্পষ্ট নয় সেটাও।

Advertisement

দলের কর্মীদের একাংশের দাবি, এর থেকেই পরিষ্কার, অনুব্রত এক বছরের বেশি সময় ধরে না-থাকলেও এখনও দলের ‘ছন্নছাড়া’ ভাবটা কাটেনি। জেলা তৃণমূলের এক অনুব্রত অনুগামী নেতার কথায়, ‘‘কেষ্টদা থাকাকালীন এমনটা চিন্তাই করা যেত না। গত বছর অগস্টে দাদা গ্রেফতার হওয়ার পরেও বিজয়া সম্মিলনী হয়েছে যথা সময়ে। ব্যতিক্রম এ বারই। কেন হবে এমনটা?’’ জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী যদিও বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল থাকাকালীন বিজয়া সম্মিলনী জেলা স্তরেই সীমাবদ্ধ ছিল। এ বার সেটা ব্লক ও অঞ্চল স্তরে নামানো হয়েছে। সেই জন্য দেরি হচ্ছে। আমরা শীঘ্রই বৈঠক করে এ ব্যাপারে দিনক্ষণ চূড়ান্ত করব।’’

দল সূত্রে খবর, অনুব্রত মণ্ডল প্রতি বছর বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহ ভাড়া করে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করতেন। জেলার সাংসদ, বিধায়ক, ব্লক সভাপতি, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহসভাপতি, প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং দলের শাখা সংগঠনের নেতারা থাকতেনই। উপস্থিত থাকতেন জেলার বাইরের নেতারাও। একাধিক ব্লক সভাপতি ও শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ মনে করাচ্ছেন, এলাহি আয়োজন থাকত। উত্তম টিফিনের ব্যবস্থা থেকে হই-হুল্লোড়, ত্রুটি থাকত না কোনও বিষয়েই। সকলের সঙ্গে মত বিনিময়, নেতৃত্বের সুবিধা-অসুবিধা জানতে চাইতেন কেষ্ট। তাঁর অনুপস্থিতিতে সেই জাঁক গতবার করা সম্ভব হয়নি। তবে, এ বছর দুর্গাপুজো শেষের এত পরেও এখনও কেন দলের কোর কমিটি বৈঠক করে জেলা স্তরের বিজয়া সম্মিলনীর দিন স্থির করতে পারল না, কর্মীদের একাংশের প্রশ্ন সেটা নিয়েই। তাঁদের কটাক্ষ, ‘‘কে দায়িত্ব নেবেন, সেটাই তো ধন্দে।’’

Advertisement

কোর কমিটির আহ্বায়ক হিসাবে বিকাশ রায়চৌধুরী কোর কমিটির কোনও বৈঠক ডাকবেন, নাকি পরবর্তীতে অন্য কোনও সিদ্ধান্ত হবে, ধোঁয়াশায় অনেকে। বিকাশ যদিও বলছেন, ‘‘দলের নির্দেশ তো আছেই। দলের মুখপত্র মঙ্গলবার স্পষ্ট করেছে, বীরভূমের দায়িত্বে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষিত কমিটি। এখানে ধোঁয়াশার কিছু নেই। নির্দিষ্ট সময়েই কোর কমিটির বৈঠক ডাকা হবে।’’

জানা গিয়েছে, শুধু বিজয়া সম্মিলনী নয়, নিজেদের মধ্যে সমন্বয়, বোঝাপড়ার অভাব, জেলার বিভিন্ন সাংগঠনিক সমস্যা নিয়ে আলোচনাও বকেয়া। সেই জন্য আগামী ২৩ তারিখ বৈঠক হতে পারে কোর কমিটির। তার পরেই সিদ্ধান্ত সামনে আসার সম্ভাবনা। কোর কমিটিতে জেলার দায়িত্ব দেওয়ার ঘটনাকে কটাক্ষ করে মঙ্গলবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতা, হার্মাদ, মস্তানদের একটাই কথা বলব, অনুব্রতকে দেখে শিক্ষা নাও। এটাই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এই কেষ্টা দিদির জন্য প্রাণপাত করেছে। কিন্তু, তাঁর যখন ঢোল ফেটে গেল দিদি বলছে আমি আর নেই। আমি আর তাঁকে চিনি না। কাজের সময় কাজী, কাজ ফুরালে পাজি!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন