দুবরাজপুরের শাল নদীর উপরে তৈরি হচ্ছে নতুন সেতু। —দয়াল সেনগুপ্ত
দুবরাজপুর শহরে জল সরবরাহের পাইপলাইন সরানোয় জটিলতা। বিলম্বিত হচ্ছে সেতু নির্মাণের কাজ। মোদ্দা কথা, পাইপ না সরানো গেলে পুরোমাত্রায় কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়— এমনটাই দাবি ঠিকাদার সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এই সমস্যা তৈরি হয়েছে রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে থাকা শাল নদীর উপরে সেতু নির্মাণকে কেন্দ্র করে।
ওই জাতীয় সড়কের মধ্যে থাকা খয়রাশোলের শাল ও হিংলো নদীর সঙ্কীর্ণ কজওয়ের পরিবর্তে দু’টি সেতু অনুমোদিত হয়েছে বছর দেড়েক আগে। বরাত পেয়েছে কলকাতার একটি ঠিকাদার সংস্থা। গত বছর অক্টোবরে কাজ শুরু হয়েছে। সময়সীমা ৩০ মাস। ইতিমধ্যেই সঙ্কীর্ণ দু’টি কজওয়ের পাশ দিয়ে বিকল্প সেতু ও সংযোগকারী রাস্তা তৈরি হচ্ছে। এ বার কজওয়েগুলি ভেঙে সেখানে মূল সেতু তৈরির কাজে হাত পড়েছে। হিংলো নদীর উপর সেতু গড়ায় বাধা না থাকলেও সমস্যা বাড়িয়েছে শাল সেতুর পাশ দিয়ে যাওয়া পুরসভার পানীয় জলের পাইপলাইন।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এবং পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শাল নদীর উপর পিলার তৈরি করে পানীয় জলের যে পাইপলাইন বসেছে, সেটিই কমপক্ষে দশ মিটার সরাতে হবে। কিন্তু এখনও তা সরেনি। ঠিকাদর সংস্থার বক্তব্য, ‘‘যতক্ষণ না পাইপলাইন সরছে, পুরোদমে কাজ করা অসম্ভব। ইতিমধ্যেই ১৪ মাস অতিক্রান্ত। হাতে মাত্র ১৬ মাস সময়। তার উপর বর্ষা আছে।’’
জাতীয় সড়কের ডিভিশন ১২-এর এগজিকিউটিভ ইঞ্চিনিয়ার নিশিকান্ত সিংহ জানিয়েছেন, তাঁরা ইতিমধ্যেই পুরসভাকে পাইপলাইন সারানোর জন্য টাকা দিয়ে দিয়েছেন। তা অস্বীকার করছে না পুরসভাও। পুরপ্রধান পীষূষ পাণ্ডে বলছেন, ‘‘জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ আমাদের ৩ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা দিয়েছে।’’ তা হলে অসুবিধা কোথায়? পুরসভার দাবি, নদীর যে অংশ দিয়ে পাইপ গিয়েছিল, তা সরানোর কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু, নদীবক্ষ থেকে তুলে যেখানে পাইপ জুড়বে, সেখানে কোনও জায়গা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এখনও অধিগ্রহণ করেনি। নদী উঠেই যে জায়গায় পাইপলাইন জুড়তে হবে, ওই জায়গায় একটি নার্সারি রয়েছে। যতক্ষণ না জমি নেওয়া হচ্ছে, শহরের জল বন্ধ করে পাইপলাইন সরানো সম্ভব নয়।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, নার্সারির যে জমিটি নেওয়া হবে, তা দু’টি মৌজায় বিভক্ত। একটি রয়েছে খয়রাশোলে, অন্যটি দুবরাজপুরে। ইতিমধ্যেই জমি নেওয়ার জন্য নোটিস করা হয়েছে। পুরপ্রধান বলছেন, ‘‘আগে ওরা নোটিস দেখাক। তার পর কাজ হবে।’’