Purulia

পাহাড় বাঁচাতে পথে নামলেন আদিবাসীরা

এ দিন ধনারডি গ্রাম থেকে ওই কমিটির নেতৃত্বে দুশোর বেশি পুরুষ-মহিলা মিছিল করে প্রকল্পস্থলে যান। সেখানে তখন পাহাড়ের একাংশ কেটে পাথর বার করার কাজ চলছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাশীপুর শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৪
Share:

খাদানে নেমে কাজ বন্ধ করছেন গ্রামবাসী। কাশীপুরের ধনারডি গ্রামে। —নিজস্ব চিত্র।

Advertisement

পাহাড় রক্ষার ডাক দিয়ে আন্দোলনে নামলেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন। পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের বড়রা পঞ্চায়েতের ধনারডি গ্রামের ঘটনা। শনিবার সকালে মিছিল করে স্থানীয় ধনারডি মাচান পাহাড়ে গিয়ে পাহাড় কাটার কাজ বন্ধ করে দেন তাঁরা। ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানায় ব্লক প্রশাসন।

বছর আটেক আগে বড়রা পঞ্চায়েতের ওই এলাকাতেই পাহাড় রক্ষার দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন স্থানীয় আদিবাসী মানুষজন। সে সময়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে বন্ধ করে দেওয়া হয় রাঙ্গুনিগোড়া পাহাড় কাটার কাজ।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রের খবর, রাঙ্গুনিগোড়ার অদূরে বড়রা পঞ্চায়েতের পলসড়া মৌজার ৩৫৪২ নম্বর প্লটে অবস্থিত ধনারডি মাচান পাহাড় কাটার অনুমতি একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়েছে রাজ্যের সংস্থা, মাইনস্ অ্যান্ড মিনারেল ডেভেলপমেন্ট ট্রেডিং কর্পোরেশন লিমিটেড। তার প্রতিবাদেই পাহাড় রক্ষার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন স্থানীয় জনজাতিভুক্ত বাসিন্দাদের একাংশ। গড়ে উঠেছে ‘পলসড়া (ধনারডি) পাহাড় বাঁচাও কমিটি’।

এ দিন ধনারডি গ্রাম থেকে ওই কমিটির নেতৃত্বে দুশোর বেশি পুরুষ-মহিলা মিছিল করে প্রকল্পস্থলে যান। সেখানে তখন পাহাড়ের একাংশ কেটে পাথর বার করার কাজ চলছিল। কমিটির লোকজন কাজ বন্ধ করে মাটি কাটার যন্ত্র-সহ অন্য গাড়িগুলিকে ফেরত পাঠিয়ে দেন। কমিটির সম্পাদক সত্যজিৎ মুর্মু বলেন, “এই পাহাড়ের সঙ্গে আদিবাসী সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ভাবাবেগ জড়িত। এ ছাড়া, পাহাড় কেটে ফেললে এলাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্যও নষ্ট হবে। উন্নয়নের নামে পাহাড় ধ্বংসের চেষ্টা আমরা মানব না।”

কমিটির সভাপতি জয়ধন মান্ডিরও দাবি, আট বছর আগে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আদিবাসী সম্প্রদায়ের আপত্তি থাকলে পাহাড় কাটা যাবে না। তার পরে রাঙ্গুনিগোড়া পাহাড় কাটার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর প্রশ্ন, ফের কী ভাবে আবার পাহাড় কাটার অনুমতি দেওয়া হল। কমিটির লোকজনের আরও অভিযোগ, পাহাড় কেটে পাথর বার করতে বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে। তাতে ধনারডি গ্রামের চার জন অসুস্থ হয়েছে।

সংস্থাটির কাশীপুরের ওই প্রকল্পের সাইট ইনচার্জ সৌমেন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “অনুমতি েমলার পরে কাজ শুরু হয়েছিল। সরকারি নিয়ম মেনে কাজ চলছিল। তবে স্থানীয় কিছু লোকজনের বাধায় কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গোটা ঘটনা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।” কাশীপুরের বিডিও সুপ্রীম দাস জানান, কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন