Magh Mela

মাঘ মেলা হল না, ব্যাখ্যা উপাচার্যের

মাঘ মেলা দেখতে না পাওয়ায় সোমবার কিছুটা আক্ষেপ প্রকাশ করতে দেখা যায় মেলার প্রধান অতিথি, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন ডিরেক্টর পদ্মশ্রী শঙ্করকুমার পালকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:২৯
Share:

শ্রীনিকেতনের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র।

এ বছর প্রথম থেকেই শ্রীনিকেতনে মাঘ মেলা হবে কি না তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল অনিশ্চয়তা। তবে মেলা না হলেও শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উৎসব প্রতি বছরের মতো পালন করা বলে জানিয়েছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত হলও ঠিক তাই। মেলার পরিবর্তে এ বারও প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উৎসব পালন করল বিশ্বভারতী।

Advertisement

মাঘ মেলা দেখতে না পাওয়ায় সোমবার কিছুটা আক্ষেপ প্রকাশ করতে দেখা যায় মেলার প্রধান অতিথি, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন ডিরেক্টর পদ্মশ্রী শঙ্করকুমার পালকে। মেলা কেন করতে পারা গেল না তা নিয়ে সরব হন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীও। এ দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, অন্ধ্রপ্রদেশের উপাচার্য টি ভি কাট্টিমানি। বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক, অধ্যাপিকা, কর্মী ও পড়ুয়ারাও ছিলেন।

এ দিন উপাচার্য বলেন, “প্রধান অতিথি বললেন উনি এসেছিলেন মেলা দেখতে। এতে আমি কিছুটা দুঃখ পেলাম, আবার আনন্দিতও হলাম।’’ এরপরই উপাচার্য বলেন, ‘‘যাঁদের সাহায্য বিনা এই মেলা করা সম্ভব নয়, তাঁরা কিন্তু কোনও ভাবেই এগিয়ে এলেন না। তার হয়তো অনেক রকম কারণ আছে। এই মেলার ইতিহাস অনেক পুরনো আমি জানি। অনেকে এর জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, বিশেষত আমার বিরুদ্ধে।’’ তার পরে উপাচার্যের দাবি, ‘‘যাঁরা ভিতরের ব্যাপার জানেন, তারা জানেন মেলা করতে হলে কী ধরনের খেসারত আমাদের দিতে হয়। পৌষ মেলার ক্ষেত্রেও আপনারা দেখেছেন হাইকোর্টের একটা রায় ছিল, সেই রায় যদি আপনার পড়েন তাহলে বুঝতে পারবেন কেন আমরা মেলা করতে সাহস পেলাম না। আমার আশা হয়তো বা আগামী বছর যারা আমাদের সাহায্য করতে পিছপা হলেন তাঁদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।’’

Advertisement

মেলা না হওয়ায় বিশ্বভারতীর পড়ুয়া, অধ্যাপক, প্রাক্তনী থেকে শুরু করে আশ্রমিকদের একটা বড় অংশ হতাশ। মেলায় যোগ দিতে না পেরে হতাশ গ্রামীণ হস্তশিল্পী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরাও। হস্তশিল্পী আমিনুল হুদা, তাপস সরকার, সুদর্শন দাসরা বলেন, “মেলা না হওয়ায় আবারও আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলাম।”

১৯২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কুঠিবাড়িতে শুরু হয়েছিল কবিগুরুর প্রথম গ্রামোন্নয়ন কর্মসূচি। তারপর তৈরি হয় শ্রীনিকেতন। এর পরের বছর ১৯২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শ্রীনিকেতন বার্ষিক উৎসব শুরু হয়। সেই থেকেই শ্রীনিকেতনের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে প্রতি বছর ৬ ফেব্রুয়ারি শ্রীনিকেতনে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উৎসব হয়ে আসছে। স্থানীয়দের কাছে যা শ্রীনিকেতন মেলা বা মাঘ মেলা নামেও পরিচিত। ২০১২ সাল থেকে এই মেলার ব্যয় বহনের ভার নেয় শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট।

করোনা সংক্রমণের কারণে গত দু’বছর এই মেলার আয়োজন করা যায়নি, তার পরিবর্তে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উৎসব পালন করেছে বিশ্বভারতী। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় এ বার অনেকেই ভেবেছিলেন হয়তো মেলার আয়োজন হবে। কিন্তু এ বারও মেলা না হওয়ায় চিরাচরিত প্রথা মেনে শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উৎসব পালন করা হল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন