আলো দেখাচ্ছে ‘নতুন সকাল’

মাধ্যমিক কিংবা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর ওই পরিবারের ছেলেমেয়েদের পড়তে হয় দুঃশ্চিন্তায়। কুড়িয়ে বাড়িয়ে ভর্তির টাকা জোগাড় হলেও বই জুটবে কী করে, সেই চিন্তায় মুখ কালো করে ঘুরে বেড়ায় পুজা টুডু, সুব্রত মণ্ডলরা। ওই সব পরিবারের ছেলেমেয়েদের আশার আলো দেখাচ্ছে ‘নতুন সকাল’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৭ ১৫:০০
Share:

—প্রতীকী ছবি

কারও বাবা দিনমজুর। কারও বাবা ভাগচাষি। ঘরে নিত্য অভাব। মাধ্যমিক কিংবা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর ওই পরিবারের ছেলেমেয়েদের পড়তে হয় দুঃশ্চিন্তায়। কুড়িয়ে বাড়িয়ে ভর্তির টাকা জোগাড় হলেও বই জুটবে কী করে, সেই চিন্তায় মুখ কালো করে ঘুরে বেড়ায় পুজা টুডু, সুব্রত মণ্ডলরা। ওই সব পরিবারের ছেলেমেয়েদের আশার আলো দেখাচ্ছে ‘নতুন সকাল’।

Advertisement

২০১১ সালে কিছু ব্যবসায়ী এবং শিক্ষকদের নিয়ে শুরু হয় পথ চলা। প্রথম দিকে নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে অষ্টম থেকে স্নাতকোত্তর এমনকি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কিছু ছাত্রছাত্রীকে বই-সহ অন্য শিক্ষা সামগ্রী দিত ওই সংস্থা। এখন জেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সংস্থার শাখা। হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বহু শিক্ষানুরাগীও। এ বারও বিভিন্ন স্কুলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ফর্ম। সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ফর্মপূরণ করে জমা দিতে হবে। সেই আবেদন খতিয়ে দেখার পর ২ জুলাই আমোদপুর জয়দুর্গা হাইস্কুলে তাদের হাতে বই তুলে দেওয়া হবে। পরে অন্য ছাত্রছাত্রীদেরও বই দেওয়া হবে। এ পর্যন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে ১৬০০ ছাত্রছাত্রীকে পাঠ্যপুস্তক দেওয়া হয়েছে।

বই পেয়েছে যারা, তাদের অন্যতম নানুরের হাটসেরান্দি গ্রামের পুজা টুডু। এ বার ৭২ শতাংশ নম্বর নিয়ে হাটসেরান্দি হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছে সে। বাবা সনাতন টুডু দিনমজুর। অর্থাভাবে অষ্টম শ্রেণির পর পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল পুজার। তখন তার পাশে দাঁড়ায় নতুন সকাল। বই, টিউশানি তো বটেই মনোবলও জুগিয়েছিল ওই সংস্থা। একই পরিস্থিতি হয়েছিল নলহাটির বাণীওর গ্রামের সুব্রত মণ্ডলেরও। ২০১২ এবং ২০১৪ সালে সে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকে রাজ্যে দশম হয়। সুব্রত এখন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে স্নাতকস্তরে তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সুব্রতকে সমস্ত বই দেয় নতুন সকাল।

Advertisement

কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই পুজা, সুব্রতদের। তারা বলছে, ‘‘নতুন সকাল পাশে না দাঁড়ালে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যেত।’’ এখন শুধু বইপত্র নয়, বেশ কিছু প্রতিবন্ধী পড়ুয়াকে শিক্ষা-সহায়ক যন্ত্রও দেওয়া হয়েছে। সংস্থার সভাপতি অম্বিকানন্দন মণ্ডল এবং সম্পাদক মানিক দাস জানাচ্ছেন, আগামী দিনেও তাঁরা এ ভাবেই পড়ুয়াদের পাশে থাকবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন