আধিকারিককে উত্ত্যক্ত করে গ্রেফতার তিন

পর্যটন ক্ষেত্রে ইভিটিজিংয়ের শিকার হওয়ার অভিযোগ তুললেন এক সরকারি আধিকারিক। ঘটনাস্থল বিষ্ণুপুরের লালবাঁধ এলাকা। রবিবার বিকেলে আত্মীয়দের নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন পাত্রসায়রের ব্লক সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের আধিকারিক সৌমিলী দাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৪৪
Share:

বিষ্ণুপুর আদালতে ধৃতেরা।—শুভ্র মিত্র

পর্যটন ক্ষেত্রে ইভিটিজিংয়ের শিকার হওয়ার অভিযোগ তুললেন এক সরকারি আধিকারিক। ঘটনাস্থল বিষ্ণুপুরের লালবাঁধ এলাকা। রবিবার বিকেলে আত্মীয়দের নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন পাত্রসায়রের ব্লক সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের আধিকারিক সৌমিলী দাস। তাঁর অভিযোগ, তিন যুবক তাঁদের ক্রমাগত উত্ত্যক্ত করছিল। শেষে তিনি পুলিশকে ফোনে সমস্ত ঘটনাটি জানালে তারা পালায়। বিষ্ণুপুরের মনসাতলা বিশ্বাসপাড়ার বাসিন্দার সৌমিলীর অভিযোগে ওই রাতেই পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। এক জন আধিকারিকের সঙ্গেই যদি এই আচরণ করা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়, সে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

Advertisement

সৌমিলীর অভিযোগ, আত্মীয়দের নিয়ে তিনি লালবাঁধের পাড়ে বিকেলে ঘুরছিলেন। সেই সময় তিন যুবক ক্রমাগত তাঁদের উত্ত্যক্ত করতে থাকে। প্রতিবাদ করায় তাঁদের গালিগালাজও করা হয়। তিনি থানায় ফোন করবেন বলে সতর্ক করায় ছেলেগুলি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা ফোন করে আরও সঙ্গীদের ডাকে। কিছুক্ষণ পরেই একটি চার চাকার গাড়িতে আরও কয়েকটি ছেলে জুটে যায়। প্রত্যেকেই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল। তারা সবাই আমাদের ঘিরে গালিগালাজ শুরু করে। আমার এক আত্মীয় ঘটনাটি মোবাইলে রেকর্ডিং করছিলেন। ওই ছেলেগুলি তাঁর মোবাইলটি কেড়ে নিয়ে ছুড়ে ভেঙে দেয়।’’ এরপরেই তিনি বিষ্ণুপুরের এসডিপিও অফিসে গিয়ে তাঁকে পুরো ঘটনাটি জানান। বিষ্ণুপুর থানার আইসি-র কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন এবং ভাঙা মোবাইল জমা দেন।

বিষ্ণুপুরের এসডিপিও লাল্টু হালদার বলেন, ‘‘ওই মহিলা রীতিমতো আতঙ্কিত অবস্থায় আমার কাছে আসেন। সব শুনে আমি থানার আধিকারিকদের নিয়ে যখন ঘটনাস্থলে যাই, ততক্ষণে ছেলেগুলি পালিয়ে গিয়েছিল। পরে খোঁজখবর নিয়ে তল্লাশি চালিয়ে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা হল বিষ্ণুপুরে শেখ পাড়ার বাসিন্দা শেখ মহম্মদ আরিফ, বিষ্ণুপুরের চকবাজারের বাসিন্দা ঈশান রজক, বিষ্ণুপুরে ছোট লালবাঁধের বাসিন্দা শঙ্খ চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

কিন্তু লালবাঁধ এলাকায় বহু পর্যটক বেড়াতে আসেন। সেইরকম একটি জায়গায় মহিলাদের নিরাপত্তা অবহেলিত হবে কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিষ্ণুপুরের বাসিন্দারা। এসডিপিও বলেন, ‘‘আমি লালবাঁধের পাড়ে আরও টহলদারি বাড়ানোর চেষ্টা করছি।’’ বিষ্ণুপুর আদালতে অভিযুক্তদের আইনজীবা মহাদেব দে-র দাবি করেছেন, ‘‘আমার মক্কেলরা প্রত্যেকেই ছাত্র। তাঁরা এই কাজ করতেই পারেন না। ওঁদেরকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ফাঁসানো হয়েছে।’’ সরকারি আইনজীবী সৈয়দ সিউর রহমান জানান, বিচারক অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন খারিজ করে তিন জনকে ১৪ দিনের জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। সৌমিলী বলেন, ‘‘আমরা সরকারের আধিকারিক হিসাবে যদি প্রতিবাদ না করি তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবেন? আমি অভিযুক্তদের চরম শাস্তি চাইছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন