পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনায় তদন্তে নেমে তিনজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মহম্মদ মানেক আনসারি, আলিউল্লা আনসারি ও চিরঞ্জিত মুখোপাধ্যায়। তিনজনেরই বাড়ি পুরুলিয়া সদর থানা এলাকায়। প্রথম দু’জন কাটিনপাড়া এলাকার বাসিন্দা, অন্যজন শহরের দেশবন্ধু রোডের বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই এঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, শারীরিক নিগ্রহ ও ডাক্তারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা কর্মীকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এক সপ্তাহ আগে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে এই চিকিৎসক নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে। হাসপাতালের চিকিৎসক শুভেন্দু বিশ্বাসের কাছে কয়েকজন এসে ফিমেল মেডিক্যাল বিভাগে ভর্তি এক রোগিণীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। তাঁদের একজন ফোনে কাউকে ধরে চিকিৎসককে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বলেন। চিকিৎসক রাজি হননি। অভিযোগ তারপরেই ওই চিকিৎসক নিগৃহীত হন। চিকিৎসক হাসপাতাল সুপারের কাছে ঘটনাটি লিখিত ভাবে জানিয়ে ছুটিতে চলে গিয়েছেন। অভিযোগপত্রে তিনি একটি নাম উল্লেখ করলেও সেই নামের কোনও পদবি নেই। একটি অংশ থেকে ওই ঘটনায় কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চিকিৎসককে নিগ্রহের অভিযোগ তোলা হয়। যদিও তিনি হাসপাতালে গেলেও নিগ্রহ করার অভিযোগ মানতে চাননি। উল্টে চিকিৎসকের বিরুদ্ধেই গাফিলতির অভিযোগ তোলেন।
আসরে নামে তৃণমূল। চিকিৎসক নিগ্রহে অভিযুক্তদের নামে কেন সরাসরি অভিযোগ জানানো হচ্ছে না, এই প্রশ্ন তুলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে দাবিও জানান শাসক দলের কিছু নেতা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য তার আগেই অজ্ঞাত পরিচয়ের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে।
চিকিৎসক যে অভিযোগটি হাসপাতালের সুপারের কাছে জমা করে গিয়েছিলেন, সেখানে তিনি ওয়ার্ড মাস্টারের অফিসের কাছে ঘটনাটি ঘটেছে বলে উল্লেখ করেন। আরও জানিয়েছিলেন, ওই এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে যে কারা এই ঘটনায় জড়িত। পুলিশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সেই ফুটেজ চাইলেও, তা তারা পায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সিসিটিভি খারাপ থাকায় ফুটেজ পাওয়া যায়নি। সিসিটিভি সারানো হয়নি কেন? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনও বক্তব্য মেলেনি। হাসপাতাল সুপার শিবাশিস দাসের ফোন বেজে গিয়েছে।