আজ জনসভা আমোদপুরে

তিন দিনের সফর শুরু মুখ্যমন্ত্রীর

 তিন দিনের জেলা সফরে মঙ্গলবার বীরভূমে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ধমানে মাটি উৎসবে যোগ দিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে বোলপুরে পৌঁছন তিনি। নেমেই সতীপীঠের এক পীঠ কঙ্কালিতলায় পুজো দিয়ে বোলপুরের রাঙাবিতানে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৪৪
Share:

কঙ্কালীতলায় মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

তিন দিনের জেলা সফরে মঙ্গলবার বীরভূমে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ধমানে মাটি উৎসবে যোগ দিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে বোলপুরে পৌঁছন তিনি। নেমেই সতীপীঠের এক পীঠ কঙ্কালিতলায় পুজো দিয়ে বোলপুরের রাঙাবিতানে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, বুধবার দুপুরে সাঁইথিয়ার আমোদপুরে এবং কাল বৃহস্পতিবার জয়দেব-কেঁদুলি ঘেঁষা টিকরবেতা গ্রাম সংলগ্ন মাঠে দু’টি সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। দুটি জায়গাতেই প্রস্তুতি পর্ব চূড়ান্ত। তবে জয়দেব নয়, মুখ্যমন্ত্রীর আমোদপুরের সভাই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, এই মঞ্চ থেকে একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস ও পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান হবে।

জয়দেব কেঁদুলি মেলার আগে, পরে এই নিয়ে পরপর তিনবার মুখ্যমন্ত্রী এই জায়গায় আসছেন। কিন্তু, আমোদপুরে অতীতে তেমন বড় কোনও অনুষ্ঠান হয়নি। তা ছাড়া এই জনপদ বেছে নেওয়ার পিছনে অন্য তাৎপর্য রয়েছে বলে মানছেন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশও। মণিরুল ইসলামের অসুস্থতার সুযোগে লাভপুরে তৃণমূলের সংগঠন দুর্বল হয়েছে বলে অনেকের মত। সাঁইথিয়ার আমোদপুরে আবার বিজেপি বাড়ছে বলে অনেকে মনে করেছন। আমোদপুরে তৃণমূল-বিজেপির মারপিঠও হয়েছে একাধিকবার। রয়েছে মুকুল কাঁটাও। কেননা, সাঁইথিয়া থেকেই মুকুল শিবিরে যোগ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সংগঠন ঢেলে সাজছে নেমেছে বিজেপিও।

Advertisement

এই পরিস্থিতিকে একবার ‘দিদি’কে আনা গেলে সব দিক সামলানো যাবে, জেলায় দলের শীর্ষ নেতাদের এমন ইচ্ছেয় শেষ পর্যন্ত সিলমোহর পড়ে। তৃণমূলের একটি সূত্রেরই খবর, প্রাথমিক ভাবে আমোদপুরে সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর সূচিতে না থাকলেও, জেলা নেতাদের অনুরোধ মেনে নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুজো দেন কঙ্কালিতলার মন্দিরেও।

প্রস্তুতি: আমোদপুরের এই মঞ্চে বক্তব্য রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রীর সভা ঘিরে সমান ব্যস্ততা প্রশাসনিক কর্তা থেকে দলের নেতা— সকলের মধ্যেই। প্রস্তুত প্রশাসনের কর্তারা। প্রচুর জমায়েত করতে হবে, সেই লক্ষ্য পূরণের সব ব্যবস্থাও পাকা। মঙ্গলবার আমোদপুরে গিয়ে দেখা গেল, আমোদপুর স্টেশন থেকে রাস্তার দু’দিকে হাজার হাজার দলীয় পতাকা, ফেস্টুনে মুড়ে গিয়েছে এলাকা। তৈরি হয়েছে বড় বড় গেট। রাস্তার দু’দিকে ব্যারিকেড। সাঁইথিয়া ব্লক কার্যালয় ঘেঁষা মাঠে জনসভার জন্য বিশাল মঞ্চ, হ্যালিপ্যাড, পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তাদের নজরদারি— সব মিলিয়ে সাজো সাজো রব।

তবে মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আভাস পেতেই দু’তরফে অনেক আগেই ব্যস্ততা শুরু হয়েছিল। ব্লকে ব্লকে বৈঠক করে উন্নয়নের বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে অগ্রগতি কী অবস্থায় রয়েছে, তার হালহকিকত খতিয়ে দেখেছেন জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। একই ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৃণমূল সরকার কী করছে, সেটা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে এবং সংগঠন মজবুত করতে ব্লকে ব্লকে সভা করেছে দলের নেতারাও। হোমওয়ার্ক যথেষ্টই। প্রস্তুতিতে কোথাও ফাঁক ছিল কিনা সেটা সফর শেষেই সেটা জানা যাবে। প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, ২০০টির বেশি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস হবে আমোদপুর সভা থেকেই। ২৫টি সরকারি প্রকল্পের ৬৫ জন উপভোক্তাকে মঞ্চে তুলে পরিষেবা প্রদান করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। বুধবার ঝাড়গ্রামের কুমদকুমারী বালিকা বিদ্যালয়ে জঙ্গলমহল উৎসবের সূচনা হবে আমোদপুর মঞ্চ থেকেই।

বৃহস্পতিবার জয়দেবে মুখ্যমন্ত্রী বাউল ও লোকউৎসবের সূচনা করবেন। গতবারই লোক উৎসবে এসে জয়দেবে বাউল একাডেমি সহ একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস করে গিয়েছিলেন তিনি। এ বারও এক হাজার বাউলের গানে লোকউৎসবের সূচনা করার পাশাপাশি কুঁয়ে নদীর উপরে একটি এবং অজয় নদের উপরে ইলামবাজার ও জয়দেব দুটি সেতু মিলিয়ে তিনটি সেতুর শিলান্যাস করবেন। শুধু তাই নয়, বোলপুরে বাউলবিতানেরও শিলান্যাস করবেন। গত মে মাসে বোলপুর এসেই বাউল বিতানের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার শান্তিনিকেতনে কাটিয়ে শুক্রবার কলকাতা ফেরার কথা মুখ্যমন্ত্রীর।

ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন