অভিযুক্ত নেত্রীর ছেলে

চালে কারচুপি, থানায় নালিশ

বরাবাজার ব্লকের বেশ কয়েকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে খাদ্য সামগ্রী লোপাট করার অভিযোগে মামলা করল জেলা শিশু বিকাশ প্রকল্প দফতর। একই সঙ্গে ওই খাদ্য সামগ্রী সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারের নাম প্রশাসন কালোতালিকা ভুক্ত করতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বরাবাজার শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৬ ০২:৫৭
Share:

বরাবাজার ব্লকের বেশ কয়েকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে খাদ্য সামগ্রী লোপাট করার অভিযোগে মামলা করল জেলা শিশু বিকাশ প্রকল্প দফতর। একই সঙ্গে ওই খাদ্য সামগ্রী সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারের নাম প্রশাসন কালোতালিকা ভুক্ত করতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

পুরুলিয়ার জেলা শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক নীলিমা দাস চৌধুরী বুধবার বলেন, ‘‘বরাবাজারে শিশু খাদ্য লোপাটের অভিযোগে খাদ্য মজুত ও সরবরাহকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বরাবাজারের সিডিপিও শিমসন মুর্মু থানায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। দফতরের পক্ষ থেকে প্রাথমিক তদন্তের পর তাঁর বিরুদ্ধে বেনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। এ কারণে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কালোতালিকা ভুক্ত করায় তিনি আর কোনও দিন এই দায়িত্ব পাবেন না।’’

ওই খাদ্য সরবরাহকারী বরাবাজারের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ সিংহ মল্ল। তাঁর মা শাসকদলের জেলা পরিষদ সদস্যা। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তি বরাবাজারের ১৩৫টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশু খাদ্য মজুত এবং সরবরাহকারীর দায়িত্বে ছিলেন।

Advertisement

বরাবাজারে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে চালের অভাবে প্রায় দু’মাস রান্না বন্ধ ছিল। এর ফলে শিশু ও প্রসূতিরা পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বরাবাজারের বাসিন্দা সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণীন্দ্র গোপ জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে এই মর্মে লিখিত অভিযোগ জানান। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে গুদামে চাবি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

শিশু বিকাশ প্রকল্পের দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, ৬০০ কুইন্ট্যালের বেশি চাল এবং মুসুর ডাল, সর্ষের তেল এবং আয়োডাইজড নুন পাওয়া যাচ্ছে না। এতে বরাবাজারের সাড়ে ১১ হাজার শিশু ও মা কয়েকমাস পুষ্টিকর খাদ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ। বর্তমানে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ওই কেন্দ্রগুলিতে ফের রান্না চালু হয়েছে। তদন্তে নেমে সরকারি আধিকারিকরা নথিপত্র আটক করেন। এক আধিকারিক জানান, এই সমস্ত মাল তোলা হলেও তা গুদামে পৌঁছয়নি। মাঝপথেই লোপাট হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

তবে চেষ্টা করেও এ দিন প্রসেনজিতের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর মা অবশ্য প্রথমে সিপিএমের চক্রান্ত বলে দাবি করেছিলেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘দুর্নীতি প্রমাণ হলে আমার ছেলে হলেও ও রেহাই পাবে না।’’

তবে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণীন্দ্র গোপের অভিযোগ, ‘‘দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তৃণমূলের ওই নেত্রী ছেলের কাজে মদত জুগিয়েছেন।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো আশ্বাস দিয়েছেন, ‘‘দুর্নীতি প্রমাণিত হলে তিনি যেই হন, শাস্তি পাবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন