সেলিমের কটাক্ষে মেজাজ হারালেন সাংসদ শতাব্দী

রোজ ভ্যালি কাণ্ডে শাসকদলের পরিচিত নেতা সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হতেই নলহাটিতে কৃষকসভার সম্মেলনে এসে তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়কে কটাক্ষ করেছিলেন সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তারাপীঠ শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:০১
Share:

তারাপীঠে শতাব্দী। —নিজস্ব চিত্র।

রোজ ভ্যালি কাণ্ডে শাসকদলের পরিচিত নেতা সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হতেই নলহাটিতে কৃষকসভার সম্মেলনে এসে তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়কে কটাক্ষ করেছিলেন সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম। আগত কর্মীদের উদ্দেশে সেলিমের প্রশ্ন ছিল, ‘‘আপনারা বাইরে তাপস–শতাব্দী জুটি দেখেছিলেন। জেলের ভিতরে সেই জুটিকে দেখতে চান না? কী বলেন?’’

Advertisement

সেলিমের ওই কটাক্ষের জবাব দিতে গিয়ে মেজাজ হারালেন শতাব্দী। মঙ্গলবার তারাপীঠের কাছে চিলার মাঠে দলীয় কর্মী সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে শতাব্দী বলেন, ‘‘এই সব নোংরা রাজনীতিবিদ, যাঁদের জনসমর্থন নেই, এক হাজার ভোটে জেতে— তাঁদের কথার জবাব দেওয়ার চেয়ে আমার বাড়ির ডগিদের (কুকুর) নিয়ে আদর করে সময় কাটানো অনেক ভাল।” বীরভূমের সাংসদের ওই বক্তব্যের নিন্দা করেছে সিপিএম। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম বলছেন, ‘‘উনি সংস্কৃতি জগতের মানুষ হয়ে এমন ভাষায় কথা বলছেন, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তৃণমূলের সংস্কৃতি অবশ্য এমনই।’’

ঘটনা হল, সারদা, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রোজ ভ্যালির মতো বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার দুর্নীতি নিয়ে ২০১৪ সালে তদন্ত শুরু করেছিল সিবিআই। তবে শুরুতে কিছু দিন তৎপরতা দেখানোর পরে গত প্রায় দেড় বছর ধরে কার্যত হাত গুটিয়ে ছিল তারা। ইদানীং সেই ফাইল ফের খুলেছে সিবিআই। রোজ ভ্যালি-কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যেই তৃণমূল সাংসদ তাপস পাল এবং তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। যদিও গোটা বিষয়টিকে নরেন্দ্র মোদীর নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করায় ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’র শিকার বলেই দাবি করেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

বিজেপি-র ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’তে তাঁরা ভীত নন— এই বার্তা দিতেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিবিআই ডাকলে তিনি ‘বীরের মতো’ যাবেন। সুদীপবাবু সিবিআই দফতরে গেলে সে দিনই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ দিন সেই প্রসঙ্গ তুলে সাংবাদিকেরা শতাব্দীকে জিজ্ঞাসা করেন সিবিআই ডাকলে তিনি ‘বীরের মতো’ যাবেন কিনা। শতাব্দী অবশ্য ওই প্রশ্নের জবাব না দিয়ে দ্রুত গাড়িতে উঠে চলে যান।

এ দিকে, পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি হিসাবে এ দিন রামপুরহাট ২ ব্লকের সাহাপুর পঞ্চায়েত এলাকার দলীয় কর্মী সম্মেলনে যোগ দেন শতাব্দী। ছিলেন তৃণমূলের বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায়, দলের রামপুরহাট মহকুমা পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। সেই পঞ্চায়েত ভোটের বহু আগেই জেলার কলেজ ভোট, কৃষি উন্নয়ন ব্যাঙ্ক থেকে স্কুল পরিচালন সমিতির ভোটগুলিতে গায়ের জোরে বিরোধীদের মনোনয়নই তুলতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। ভোট হতে না দেওয়াটা কি গণতন্ত্রের পক্ষে ভাল বার্তা দিচ্ছে? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শতব্দী দাবি করেন, ‘‘বিরোধীদের আর কোনও সংগঠন নেই। ওদের বলার কিছু আছে? বলতে হয়, তাই বলছে। মনোনয়ন করতে না পারলে যেখানে আপত্তি বা রিপোর্ট করার, সেটা তো করেনি।’’

সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলের প্রত্যেক নেতাই এ দিন দাবি করেন, আগামী ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে বীরভূমকে তাঁরা বিরোধী-শূন্য করেই ছাড়বেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন