লাল-সবুজ-হলুদে শহর সচলের আশা

বোলপুরে বসবে ট্রাফিক সিগন্যাল

অবশেষে স্বয়ংক্রিয় ‘ট্রাফিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা’ চালু হচ্ছে পুরশহর বোলপুরেও। পুজোর আগেই এই পরিষেবা চালু হবে বলে আশাবাদী পুরপ্রধান সুশান্ত ভকত। শহরের চিত্রা মোড়, টুরিস্ট লজ মোড় এবং চৌরাস্তায় পরীক্ষামূলক ভাবে জেলা পুলিশের উদ্যোগে ওই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে।

Advertisement

মহেন্দ্র জেনা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:২৭
Share:

এই জট থেকে মুক্তি মিলবে তো? প্রশ্ন বোলপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

অবশেষে স্বয়ংক্রিয় ‘ট্রাফিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা’ চালু হচ্ছে পুরশহর বোলপুরেও। পুজোর আগেই এই পরিষেবা চালু হবে বলে আশাবাদী পুরপ্রধান সুশান্ত ভকত।

Advertisement

শহরের চিত্রা মোড়, টুরিস্ট লজ মোড় এবং চৌরাস্তায় পরীক্ষামূলক ভাবে জেলা পুলিশের উদ্যোগে ওই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। পুরপ্রধান জানাচ্ছেন, পুলিশের সহায়তায় ওই সমস্ত জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসানো নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

বোলপুরের জনসংখ্যা ও পরিধি দিনকে দিন বাড়লেও সার্বিক পরিকল্পনা সেই সাবেক। শহরের প্রধান রাস্তা কোথাও সঙ্কীর্ণ, তো আবার কোথাও রয়েছে বিপজ্জনক বাঁক। সমস্যা বাড়ছে যানবাহনের চাপ বাড়ার ফলেও। সাম্প্রতিক অতীতে বেশ কিছু দুর্ঘটনায় প্রাণহানি এবং তাকে ঘিরে সাময়িক ভাবে অশান্ত হয়েছে এই শহর। সে সবের জন্যে আঙুল উঠেছে পরিকল্পনা ও উপযুক্ত নজরদারির দিকেই। রয়েছে যানজট সমস্যাও। শহরের ব্যস্ত মোড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তাতে স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রী, বাসিন্দাদের ভোগান্তি প্রতি দিনের ছবি। সেই দুর্ভোগ থেকে বাদ যায় না পৌষ মেলা কিংবা বসন্ত উৎসবের মতো অনুষ্ঠানও।

Advertisement

এই আবহে যানজট থেকে রেহাই পেতে অতীতে বিভিন্ন সংগঠনের তরফে আর্জি গিয়েছিল প্রশাসন, পুলিশের কাছে। কিন্তু, স্থায়ী সুরাহা হয়নি। স্থানীয় পুর কর্তৃপক্ষ এবং সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে চালানো বয়েছে কাজ। শহরবাসী চাইছিলেন স্থায়ী সমাধান। সম্প্রতি পুরসভা, এলাকার বণিক সঙ্ঘ, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, নাগরিক প্রতিনিধি-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন বোলপুরের এসডিপিও অম্লানকুসুম ঘোষ ও মহকুমাশাসক শম্পা হাজরা। ওই বৈঠকে শহরের যানজট রোধে ফুটপাথ দখলমুক্ত করা ও দিনের বেলায় স্বাভাবিক চলাফেরার জন্যে শহরের বেশ কিছু জায়গায় মালবাহী গাড়ির জন্য ‘নো-এন্ট্রি’ ব্যবস্থা চালু এবং স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু করা নিয়ে আলোচনা হয়। সিদ্ধান্তের প্রথম দু’টি চালু থাকলেও ট্রাফিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা বোলপুরের জন্যে নতুন। প্রসঙ্গত, জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে এই বিষয়গুলি নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়। তার অঙ্গ হিসেবে মাসখানেক আগেই বোলপুরের তৎকালীন আইসি প্রবীরকুমার দত্ত, শান্তিনিকেতনের ওসি পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে বৈঠক করেন বোলপুরের এসডিপিও।

জেলা পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, ‘বেল’ নামে কলকাতার এক সংস্থাকে (এরাই কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা করেছেন) দিয়ে প্রাথমিক ভাবে শহরের তিনটি জায়গায় পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরে সাহেবগঞ্জ লুপ লাইনের উপরের লালপুল, শ্রীনিকেতন ট্রাফিক স্ট্যান্ড এবং জামবনি বাসস্ট্যান্ড মোড়ে ট্রাফিক সিগনালিং ব্যবস্থা চালু হওয়ার কথা। শহরের রবীন্দ্রবিথি বাইপাস এলাকা-সহ আরও কিছু জায়গায় ‘ব্লিঙ্কার’ বসানো নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ সব চালু হলে শহরের গতি ফিরবে বলে আশা সকলেরই।

শহরে বাড়তে থাকা চুরি-ছিনতাইয়ের কথা মাথায় রেখে ওই সব ট্রাফিক পোস্টে সিসি ক্যামেরা বসাতেও উদ্যোগী হয়েছে জেলা পুলিশ। সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক পোস্ট থেকেই ওই ক্যামেরাগুলি নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ। এমন উদ্যোগে স্বাভবিক ভাবেই খুশি শহরের বিভিন্ন মহল। বোলপুর নাগরিক কমিটির সভাপতি, পেশায় আইনজীবী তমাল চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। স্বাগত জানিয়েছেন বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিংহ, বোলপুর নাগরিক সমিতির সম্পাদক মোহিত সাহারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন