school dropouts

স্কুলছুট রুখছে দুই বধূর পাঠশালা

স্কুল ছুট হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। খুদেদের লেখাপড়ার জগতে ধরে রাখতে গ্রামে অবৈতনিক পাঠশালা তৈরি হয়েছে।

Advertisement

অভিজিৎ অধিকারী

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৩ ০৯:০৯
Share:

পাঠ: খড়িগাড়া আদিবাসী গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

গ্রামে নেই স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। আলপথ পেরিয়ে জঙ্গলের পথ ধরে তিন কিলোমিটার দূরে প্রাথমিক স্কুলে যেতে হয় বিষ্ণুপুরের মড়ার পঞ্চায়েতের খড়িগাড়া গ্রামের পড়ুয়াদের। জঙ্গলে হাতি ও বন্য শুয়োরের উপদ্রব থাকায় খুদে পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে দিতে যান অভিভাবকেরা। তাঁরা যে দিন কাজে ব্যস্ত থাকেন, সে দিন স্কুলে যাওয়া হয় না খুদেদের। ফলে ব্যাঘাত ঘটে পড়াশোনার। স্কুল ছুট হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। খুদেদের লেখাপড়ার জগতে ধরে রাখতে গ্রামে অবৈতনিক পাঠশালা তৈরি হয়েছে। সেখানে পড়ান গ্রামেরই উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ দুই বধূ কাপুরমণি সরেন ওশুকুমণি মুর্মু।

Advertisement

বিকেল হলেই বিভিন্ন ক্লাসের প্রায় ১৮ জন পড়ুয়া স্থানীয় একটি ক্লাবের প্রাঙ্গণে পাঠশালায় আসে। এই উদ্যোগের কথা কানে আসায় মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত পড়ুয়াদের বই, খাতা ও শিক্ষা সরঞ্জাম দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। পড়ুয়াদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করেছেএকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

কাপুরমণি বলেন, “আমি কষ্ট করে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছি। এই এলাকার ছাত্রছাত্রীরা হেঁটে বনজঙ্গল পেরিয়ে স্কুলে যেতে চাইছে না। আমরা লোকের জমিতে কাজ করতে চলে গেলে সে দিন কচিকাঁচারা খেলাধুলো করেই সময় কাটিয়ে দেয়। একবার স্কুলছুট হলে তাদের স্কুলে ফেরানো কঠিন হয়ে যাবে। তাই আমরা ওদের পড়াশোনার জগতে ধরেরাখার চেষ্টা করছি।”

Advertisement

গ্রামের পাঠশালায় পড়তে পেরে খুশি ষষ্ঠ শ্রেণির পায়েল মুর্মু, তৃতীয় শ্রেণির সুমন মুর্মু, জিত মুর্মু, দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সনৎ মুর্মু, শিশির সরেন, সীমা সরেন, সরমা মুর্মুর মতো অনেকেই।

তারা জানায়, অভিভাবকেরা কাজে ব্যস্ত থাকলে তাদের স্কুলে যাওয়া হয় না। কারণ পথে হাতি-শুয়োরের হামলার আশঙ্কা রয়েছে।

কাঁদন সরেন, গোলাপী মুর্মুর মত গ্রামের অনেকের দাবি, ‘‘প্রাথমিক স্কুল যদি না-ও হয়, তবে গ্রামে অন্তত একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র করা হোক।’’ মহকুমা শাসক বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিয়েছেন। অবৈতনিক ওই পাঠশালায় পড়ানোর জন্য বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা মাঝে মধ্যে গ্রামে যাওয়ার চেষ্টা করবেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন