শিক্ষক দিবসে জাতীয় শিক্ষকের পুরস্কার আসছে জেলায়। আজ, মঙ্গলবার নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ পুরুলিয়ার হুড়া ব্লকের অর্জুনজোড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো ও পুরুলিয়া ১ ব্লকের ডুড়কু শ্রী অরবিন্দ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক শুভাশিস গুহনিয়োগীর হাতে এই সম্মান তুলে দেবেন।
হুড়া ব্লকের জঙ্গল ঘেরা এলাকা অর্জুনজোড়ার বাসিন্দা শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো অর্জুনজোড়া হাইস্কুলে যোগ দিয়েছিলেন ১৯৮৫ সালে। শিক্ষকতার পাশাপাশি এলাকার ছেলেমেয়েদের তাঁর জহুরির চোখ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কোথাও কোনও ছেলে ভাল খেলছে নজরে পড়লে শঙ্করবাবু খুঁজে নিয়ে এসে তাঁর ইস্কুলে ভর্তি করান। তাঁর কথায়, ‘‘যদি কোনও ছেলের প্রতিভা বিকাশে অনন্ত কিছুটা সহায়তা করতে পারি সেটাই আমার কাছে অনেক।’’ শুধু স্কুল নয়, এলাকাকেও সবুজ করে গড়ে তুলতে শিক্ষক হিসেবে ভূমিকা নিয়েছেন তিনি।
নিতুড়িয়ার ভামুরিয়া শশীমুখী বিদ্যাপীঠ থেকে ২০০৪ সালে যখন ডুড়কু শ্রী অরবিন্দ বিদ্যাপীঠে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন শুভাশিসবাবু, তখন ওই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ২৬৪ জন। এখন সেই সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে প্রায় ১২০০। তখন ক্লাসঘরের সংখ্যা ছিল ৫টি। এখন ২২টি। স্কুলে ২২টি কম্পিউটার রয়েছে। চলতি বছরে কম্পিউটার কর্মশালা করেছেন।
পুরুলিয়া শহর ছাড়িয়ে মফস্সলেও পড়ুয়াদের প্রথাগত লেখাপড়ার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষার পাঠ দেওয়ারও নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। চেষ্টা করছেন কমিউনিটি স্কুল হিসেবে অরবিন্দ বিদ্যাপীঠকে গড়ে তুলতে। তাঁর ভাবনা বরাবর অন্য রকমের। স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সামিল করেন মিড-ডে মিল রান্নার সঙ্গে যুক্ত স্বনির্ভর দলের মহিলাদের। তিনি বলেন, ‘‘এই পুরস্কার দায়িত্বটা অনেক বাড়িয়ে দিল।’’ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অলোক মহাপাত্র বলেন, ‘‘পুরুলিয়ার জন্য এবার জোড়া সম্মান। এমনটা শেষ কবে হয়েছিল মনে পড়ছে না।’’
অন্য দিকে, রাজ্য সরকারের শিক্ষাদফতর শিক্ষক দিবসে বাঁকুড়ার জয়পুর ব্লকের রাজগ্রাম শশিভূষণ রাহা ইন্সটিটিউশনের প্রধান শিক্ষক অশোক সামন্তকে শিক্ষারত্ন পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। অশোকবাবু জানান, তাঁর স্কুল পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলাতেও বরাবর এগিয়ে থাকে।