মুক্তি না শাস্তি, দু’ভাগ বাণীওড়

পকসো আইনে গ্রেফতার হওয়া প্রধান শিক্ষকের মুক্তির দাবিতে দু’দিনের মাথায় বুধবার ফের তালা ঝুলল নলহাটির অশ্বিনীকুমার হাইস্কুলে! আন্দোলনরত অভিভাবক ও পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, প্রধান শিক্ষককে ফাঁসানো হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। তাই বিক্ষোভ। তার ফলে স্কুল আধ ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয়। পড়ুয়াদের উপস্থিতিও কম ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নলহাটি শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৫৯
Share:

প্রতিবাদ: প্রধান শিক্ষকের মুক্তির দাবিতে তালা স্কুলের গেটে। (ইনসেট) বিক্ষোভ থানার সামনেও। বুধবার নলহাটিতে। নিজস্ব চিত্র

পকসো আইনে গ্রেফতার হওয়া প্রধান শিক্ষকের মুক্তির দাবিতে দু’দিনের মাথায় বুধবার ফের তালা ঝুলল নলহাটির অশ্বিনীকুমার হাইস্কুলে! আন্দোলনরত অভিভাবক ও পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, প্রধান শিক্ষককে ফাঁসানো হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। তাই বিক্ষোভ। তার ফলে স্কুল আধ ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয়। পড়ুয়াদের উপস্থিতিও কম ছিল।

Advertisement

স্কুলের একটি সূত্রে দাবি, সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর শ্লীলতাহানিতে প্রধান শিক্ষকের জড়িত থাকার অভিযোগ ঘিরে কার্যত দু’টি শিবিরে বিভক্ত হয়ে গিয়েছেন অভিভাবক, পড়ুয়ারা। একটি অংশের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক ছাত্রীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। সব কিছু ছাপিয়ে গত বৃহস্পতিবার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর এক শ্লীলতাহানিও করেছেন। শনিবার সে কথা প্রকাশ্যে আসে। তার পরেই অভিভাবকদের এই অংশটি প্রধান শিক্ষকের ঘরের একাংশ এবং অফিসের সামনের চেয়ার, বেঞ্চ ভাঙচুর করে। বন্ধ হয়ে যায় পঠনপাঠন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নির্যাতিতা ছাত্রীর থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরে পুলিশ প্রধান শিক্ষককে পকসো আইনে গ্রেফতার করে।

তার পরেই পথে নামে অভিভাবক, পড়ুয়াদারে অন্য একটি শিবির। তাঁদের দাবি, প্রধান শিক্ষক শিক্ষক, শিক্ষিকাদের সময় মতো স্কুলে আসা-যাওয়া, নিয়মিত স্কুলে উপস্থিতির ব্যাপারে কঠোর ছিলেন। স্কুলের পঠনপাঠন থেকে নতুন ক্লাসে পড়ুয়াদের ভর্তি সমস্ত কিছুই দক্ষতার সঙ্গে দুর্নীতিমুক্ত করেছিলেন। অভিযোগ, সে কারণেই কিছু লোক তাঁকে ফাঁসিয়েছেন। প্রকৃত কারণ যাই হোক, প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে স্কুল পরিচালনায় সমস্যা হচ্ছে সে কথা মেনে নিয়েছেন অনেকেই। শিক্ষকদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের ক্লাস বণ্টন নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। পড়ুয়াদের শংসাপত্র, কন্যাশ্রীর টাকা বিলি, মেধাবী পড়ুয়াদের বৃত্তির ব্যবস্থা করা নিয়ে জট তৈরি হয়েছে।

Advertisement

বাণীওড় গ্রামের ওই স্কুল পরিচালন কমিটির তৃণমূল সভাপতি অশোক রায় জানাচ্ছেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির ব্যাপারে তাঁদের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা চাই স্কুল নিয়মিত খোলা থাকুক। পড়ুয়ারাও যথারীতি পঠনপাঠনে ফিরে আসুক।’’ স্কুল পরিদর্শককে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছেন তিনি। পরিস্থিতির খোঁজ রাখছে জেলা শিক্ষা দফতরও। জেলার ভারপ্রাপ্ত স্কুল পরিদর্শক সঙ্ঘমিত্র মাকুড় বলেন, ‘‘পরিস্থিতির নজর রাখছি। কোনও অবস্থাতেই যেন স্কুলের পঠনপাঠন বন্ধ না হয়, সেই নির্দেশ স্কুলের পরিচালন কমিটি এবং অন্য শিক্ষকদের বলা হয়েছে।’’ স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে পরিচালন কমিটি স্থানীয় প্রশাসন এবং বিডিওর সাহায্য নিতে পারেন বলেও ভারপ্রাপ্ত জেলা স্কুল পরিদর্শক জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন