সূর্যের আলোয় পাখা ঘুরবে স্কুলে

বিডিও (মানবাজার ১) নীলাদ্রি সরকার জানান, স্বনির্ভর দলের সভাঘরে আলো আর পাখা চালানোর জন্য সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প চেয়ে দুর্গাপুরের সিএমইআরআই-এর কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল।

Advertisement

সমীর দত্ত

মানবাজার শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:৪৯
Share:

নাচ: স্কুলে পড়ুয়াদের অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র

লোডশেডিং হলেও ক্লাসে মন বসাতে আর মুশকিল হবে না খুদে পড়ুয়াদের। ঘুরবে পাখা। জ্বলবে আলো। রবিবার মানবাজারের গোবিন্দপুর প্রাথমিক স্কুলে এল সৌর বিদ্যুৎ। একই দিনে মিড-ডে মিল রান্নার জন্য কাঠ বাতিল হয়ে শুরু হল জ্বালানি গ্যাসের ব্যবহার।

Advertisement

রবিবার ওই স্কুলে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের জেলা সভাপতি হেমন্ত রজক, সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক বিকাশ মজুমদার এবং জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) অলোক মহাপাত্র। উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা দফতরের একাধিক কর্তা। অলোকবাবু বলেন, ‘‘জেলায় আর কোনও প্রাথমিক স্কুলে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার হয় বলে আমার জানা নেই।’’

বিডিও (মানবাজার ১) নীলাদ্রি সরকার জানান, স্বনির্ভর দলের সভাঘরে আলো আর পাখা চালানোর জন্য সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প চেয়ে দুর্গাপুরের সিএমইআরআই-এর কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। সেই সময়ে ওই স্কুলের তরফেও আবেদন জানানো হয়। গোবিন্দপুর স্কুল এর আগেও বিভিন্ন সাফল্যের জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছে। জেলার দু’টি প্রাথমিক স্কুল নিয়ে সম্প্রতি তথ্যচিত্রের শ্যুটিং করে গিয়েছে ইউনিসেফ। তার মধ্যে একটি গোবিন্দপুর। আবেদনের প্রেক্ষিতে সমীক্ষা করে ওই স্কুলের জন্য একটি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প মঞ্জুর করা হয়।

Advertisement

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যুতের মাসুল বাবদ প্রতি মাসে প্রায় ২৪০০ টাকা খরচ হয়। প্রধান শিক্ষক অমিতাভ মিশ্র বলেন, ‘‘এখন ওই টাকার অনেকটাই বাঁচবে। সেটা দিয়ে অন্য কাজ করা যাবে।’’ প্রাক্ প্রাথমিক-স্তর মিলিয়ে ওই প্রাথমিক স্কুলে ৫টি ক্লাসঘর রয়েছে। সেখানে আলো, পাখা চলবে সৌর বিদ্যুতে। এর জন্য আলাদা করে তার টানা হয়েছে। শুধু পাম্প এবং ফ্রিজ চলবে প্রচলিত বিদ্যুতে।

বিভিন্ন স্কুলে রান্নায় ধীরে ধীরে কাঠের পরিবর্তে গ্যাস ব্যবহারের নির্দেশ রয়েছে। তারই সূচনা হিসেবে গোবিন্দপুর প্রাথমিক স্কুলে রবিবার দুপুর থেকে গ্যাসে রান্না শুরু হয়েছে। মানবাজার ১ ব্লক অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি মাসে জ্বালানি গ্যাসের চারটি সিলিন্ডার ওই স্কুলের রান্নার জন্যে বরাদ্দ হয়েছে। প্রাথমিক খরচ ব্লক অফিসের পক্ষ থেকে জোগান দেওয়া হচ্ছে। এ দিন অনুষ্ঠানে মানবাজার মহকুমার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট তারকনাথ দাস উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘কাঠের ধোঁয়ায় দূষণ ছড়াতো। আর সেই ভয় রইল না।’’

গোবিন্দপুর প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির সাহেব মুর্মু, তৃতীয় শ্রেণির সাগর হাঁসদা, দ্বিতীয় শ্রেণির সুনীতা মাঝিরা বলে, ‘‘আমাদের স্কুলে পড়াশোনার অনেক জিনিসপত্র রয়েছে। বাগান আছে। শুধু বিদ্যুৎ চলে গেলে ক্লাসঘর অন্ধকার হয়ে যেত। এ বার থেকে আর সেটাও হবে না।’’

এ দিন ওই স্কুলের ১১৮ জন পড়ুয়াকে একটি সংস্থার পক্ষ থেকে শীতের পোশাক দেওয়া হয়। সংস্থার অন্যতম পরিচালক শৈলেন মিত্র বলেন, ‘‘আরও কিছু স্কুলে আমরা শীত-পোশাক দিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন