গৌর-নিতাইয়ের কানও ভেঙেছে দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ। — নিজস্ব চিত্র।
উল্টোরথের শোভাযাত্রা শেষে এক দল দুষ্কৃতীর তাণ্ডবে সোমবার সকালে উত্তাল হয়ে উঠল বিষ্ণুপুর শহরের কৃষ্ণগঞ্জ রথতলা চত্বর। অভিযোগ, শোভাযাত্রায় থাকা নিতাই-গৌরের বিগ্রহ ভাঙচুর করে দুষ্কৃতীরা। বাধা দিতে গেলে মারধর করা হয় পূজারি পরেশনাথ গোস্বামী ও কুণাল গোস্বামীকে। পরে কৃষ্ণগঞ্জ আটপাড়া ষোলআনা কমিটির অফিস ঘরে ঢুকে টিভি, চেয়ার, টেবিল, আলমারি, রথের বাদ্যযন্ত্রও ভাঙচুর করে দুষ্কৃতীদল। ক্যাশবাক্স ভেঙে লুঠ করা হয় টাকা।
স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই দুষ্কৃতীদের অনেকেই মদ্যপ অবস্থায় ছিল। হাতে ছিল লাঠি। তাদের মধ্যে অনেকেই কাছকাছি এলাকায় থাকে। ঘটনাস্থল থেকেই পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। ঝামেলার খবর পেয়েই রথতলায় আসেন বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান তথা মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। এ দিকে, রথতলা চত্বরে ঝামেলার সময়ে খবর আসে, এলাকার যমুনাবাঁধে একটি দেহ ভাসতে দেখা যাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে বহু মানুষ ভিড় জমান ওই বাঁধের পাড়ে। পুলিশ গিয়ে জল থেকে মাঝবয়সী এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করে। আইসি (বিষ্ণুপুর থানা) স্বপন দত্ত বলেন, “রথে ঝামেলার ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। জলে ভেসে ওঠা দেহটি অজ্ঞাতপরিচয়। মৃতের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।’’
কিন্তু, এ ভাবে উল্টোরথের শোভাযাত্রায় দুষ্কৃতী হামলায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকায়। কৃষ্ণগঞ্জ আটপাড়া ষোলআনা কমিটির অন্যতম সম্পাদক সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দুষ্কৃতীদের মধ্যে আমরা ৯ জনকে চিহ্নিত করতে পেরেছি। তাদের নামে পুলিসের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’’ ক্যাশবাক্স থেকে লক্ষাধিক টাকা দুষ্কৃতীরা লুঠ করেছে বলেও তাঁর দাবি। এলাকার বাসিন্দারাও এই ঘটনার দোষীদের ধরার দাবিতে বিষ্ণুপুর থানায় একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। শ্যামবাবু বলেন, “বিগ্রহের গায়েও হাত পড়ল! পূজারি মার খেলেন! এ সব মেনে নেওয়া যায় না। আমি আইসিকে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি।’’