পঞ্চায়েতে তালা দিলেন দিনমজুরেরা

১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের মজুরি কম দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে পঞ্চায়েতে তালা লাগিয়ে দিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। বৃহস্পতিবার তৃণমূল পরিচালিত মহম্মদবাজারের গণপুর পঞ্চায়েতের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:১২
Share:

পঞ্চায়েতে চলছে বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের মজুরি কম দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে পঞ্চায়েতে তালা লাগিয়ে দিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। বৃহস্পতিবার তৃণমূল পরিচালিত মহম্মদবাজারের গণপুর পঞ্চায়েতের ঘটনা। মজুরদের দাবি, এ দিন সকালে সুপারভাইজার রাস্তায় মোরাম ছড়ানোর মজুরি কম দেওয়ার কথা জানান। তাতেই লোকজন খেপে ওঠেন। পরে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ায় ক্ষুব্ধ মজুরেরা শান্ত হন। প্রায় আধ ঘণ্টা পরে বন্ধ তালা খুলে দেওয়া হয়। মহমম্দবাজারের বিডিও তারাশঙ্কর ঘোষের দাবি, ‘‘একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। আমার কাছে খবর আসার আগেই সমস্যা মিটে যায়।’’

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, ১০০ দিন প্রকল্পে গণপুর মৌবেলিয়া সংসদের গোপালনগর গ্রামের রাস্তায় দেড় লক্ষ টাকা ব্যয়ে মোরাম পড়ার কথা। সেই মতো গত মঙ্গলবার থেকে গ্রামের রাস্তায় মোরাম পড়া শুরু হয়। এ দিন সকাল থেকে রাস্তায় মোরাম ছড়ানোর জন্য দিনমজুরেরা কোদাল, ফাওড়া, ঝুড়ি ইত্যাদি সরঞ্জাম নিয়ে হাজির হন। দিনমজুরদের অভিযোগ, এ দিন কাজে যোগ দেওয়ার আগেই সুপারভাইজার মোরাম ছড়ানোর মজুরি কমিয়ে ৩০ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। তা থেকেই সুপারভাইজারের সঙ্গে গন্ডগোল বাধে কাজে যোগ দিতে আসা মজুরদের। এর পরেই ন্যায্য মজুরির দাবিতে ওই সব সরঞ্জাম হাতে পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। সকাল সোয়া ১০টা নাগাদ পঞ্চায়েত কার্যালয়ে তালাও লাগিয়ে দেন। কার্তিক বাগদি, ছবিলাল বাগদি, রবিলাল বাগদি, পবন বাগদিদের ক্ষোভ, ‘‘সামনেই পুজো। কোথায় বেশি দেবে, উল্টে মজুরি কম দেওয়ার কথা বলেন সুপারভাইজার। তাঁকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু উনি কিছুতেই তা মানতে চাননি। তাই বাধ্য হয়ে আমাদের কিছু সহযোগী পঞ্চায়েত কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেন।’’

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছি, মোরাম ছড়ানোর ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী ৪.২ এমকিউ মোরাম ছড়ালে একটি শ্রম দিবস ধরা হয়। যার মজুরি ১৭৬ টাকা। যে যত এমকিউ মোরাম ছড়ায়, মাস্টাররোল অনুযায়ী তাঁর পাসবইয়ে ১৭৬ টাকা অনুপাতে জমা পড়ে। সাধারণত দেখা যায়, গড়ে এক জন দিনমজুর আধ বেলায় যা মোরাম ছড়ান, তাতে তাঁর ৬০-৮০ টাকা মতো প্রাপ্য হয়। তা জমা পড়ে তাঁর পাসবইয়ে। এ দিন মজুরদের ক্ষোভ দেখে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ দাবি করে, সুপারভাইজার ভুলবশত কম মজুরির কথা বলেছেন। পরে তা শুধরে নেওয়া হয়। তৃণমূলের যুগ্ম ব্লক সভাপতি তথা ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গৌতম মণ্ডল বলেন, ‘‘মোরাম ছড়ানোর হিসেব সুপারভাইজার ঠিক করে জানতেন না। তা থেকেই সমস্যা হয়েছিল। তা বুঝতে পেরেই ক্ষুব্ধ দিনমজুরেরা পঞ্চায়েতের তালা খুলে দেন।’’ তাঁর আশ্বাস, মোরাম ছড়ানোর মাপ অনুযায়ী যাঁর যা প্রাপ্য হবে, তাঁর পাসবইয়ে তেমনই টাকা জমা দেওয়া হবে। সুপারভাইজার বাবন হালদারের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন