JMB

নাজিবুল্লা নির্দোষ, দাবি স্ত্রী-ছেলের

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তি পাইকরের হিয়াতনগর মোড়ে তাঁর ভাইয়ের দোকানের পাশে একটি ছাপাখানা চালান। এলাকার বাসিন্দারা নিরীহ সাদাসিধে হিসেবেই নাজিবুল্লাকে চেনেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে নাজিবুল্লাকে গ্রেফতার করা হয়েছে জেনে স্থানীয়রা অবাক।

Advertisement

তন্ময় দত্ত ও  অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:৩২
Share:

বাড়ির সামনে এলাকাবাসীর ভিড় (বাঁ দিকে), ধৃতের স্ত্রী ও ছেলে। নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফের দাবি, তিনি এ রাজ্যে জঙ্গি সংগঠন জেএমবি-র (নব্য জেএমবি-আইএস) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। কিন্তু, সেই অভিযোগ মানতে নারাজ পাইকর থানার কাশিমনগর গ্রামের নাজিবুল্লার পরিবার। তিনি কোনও জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন, মানতে পারছেন না গ্রামের বাসিন্দারাও।

Advertisement

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কাশিমনগর গ্রামের ক্যানালপাড়া এলাকা থেকে বছর বাহান্নর নাজিবুল্লাকে গ্রেফতার করেছে এসটিএফ। সঙ্গে ছিল পাইকর থানার পুলিশ। রাত দেড়টা থেকে ভোর চারটে পর্যন্ত নাজিবুল্লার বাড়ি ও ছাপাখানায় তল্লাশি চালিয়েছে এসটিএফ। বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ শুক্রবার বলেন, ‘‘কলকাতা এসটিএফ গ্রেফতার করেছে। যা বলার, এসটিএফ-ই বলবে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তি পাইকরের হিয়াতনগর মোড়ে তাঁর ভাইয়ের দোকানের পাশে একটি ছাপাখানা চালান। এলাকার বাসিন্দারা নিরীহ সাদাসিধে হিসেবেই নাজিবুল্লাকে চেনেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে নাজিবুল্লাকে গ্রেফতার করা হয়েছে জেনে স্থানীয়রা অবাক। শুক্রবার সকালে কাশিমনগরের ক্যানালপাড়ে নাজিবুল্লার বাড়িতে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের দেখে অনেকেই অবাক হয়ে যান। নাজিবুল্লার বাড়ি যেখানে, সেই এলাকা বেশ ফাঁকা ফাঁকা। নাজিবুল্লা ভাইদের সঙ্গে টিনের ছাউনি দেওয়া বাড়িতে থাকেন। তাঁর সাত ছেলেমেয়ে।

Advertisement

নাজিবুল্লার স্ত্রী হাসিনা মমতাজ এ দিন বলেন, ‘‘স্বামী ছাপাখানা চালাত। অন্য কোনও কাজে লিপ্ত থাকত না। বাইরে থেকে কোনও লোকও আমাদের বাড়িতে আসত না। প্রেসের কাজে সপ্তাহে দু’দিন রামপুরহাট যেত।’’ ধৃতের ছেলে সাকিব আলি জানায়, ছাপাখানা চালানোর পাশাপাশি তার বাবা কবিরাজি চিকিৎসাও করতেন। মুরারইয়ের ভাদিশ্বরে তিনি সপ্তাহে চার দিন কবিরাজি করতে যেতেন। নাজিবুল্লার ছাপাখানায় বেশ কিছু কবিরাজি ওযুধ রাখা দেখতে পাওয়া যায় এ দিন। হাসিনা ও সাকিব দু’জনেই এ দিন দাবি করেন, নাজিবুল্লা সম্পূর্ণ নির্দোষ।

নাজিবুল্লার প্রতিবেশী আশিক শেখ বলেন, ‘‘নিরীহ প্রকৃতির লোক নাজিবুল্লা। তাঁর সঙ্গে কোনও অচেনা লোকের মেলামেশাও আমরা কখনও দেখতে পাইনি। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনার পরে এখন অনেক রকম শুনতে পাচ্ছি। তবে, সঠিক তদন্ত করা উচিত।’’ কাশিমনগর গ্রাম পাইকর ১ পঞ্চায়েতের অধীন।

পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল গনি বলেন, ‘‘স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে জানি, ধৃত ব্যক্তির পরিবার দিন আনি দিন খাওয়া। কী কারণে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেটা আমরা বিশদে জানি না। তবে, অভিযোগ যাই থাকুক, সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন