যূথ: হাতির আতঙ্ক ফিরল এ বার রামপুরহাটে। নিজস্ব চিত্র
রাত ন’টা। রামপুরহাট ও ঝাড়খণ্ড সীমানায়, ঝাড়খণ্ডের শিকারিপাড়া থানার দেবদোহা গ্রামের মাঠে হাতির দল দেখতে পান এলাকাবাসী। ঝাড়খণ্ড থেকে রামপুরহাটকে আলাদ করেছে ছোট্ট একটি নদী। ১৮টি হাতির পাল দেখে আতঙ্ক ছড়ায় নদীর এ-পারে রামপুরহাটের ঠাকুরপুরা, শুলুঙ্গা, শালবাদরা, তারাচুয়া গ্রামগুলিতে। যে কোনও সময় হাতির দল ঢুকে হামলা করতে পারে—এই আশঙ্কায় রাতেই গ্রামবাসীরা হাতে তুলে নেন মশাল। পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে গ্রামের চারদিকে রাত পাহারা দিতে থাকেন। শেষ অবধি হাতির দল এ-পারে না আসায় স্বস্তি ফেরে এলাকায়।
রবিবার সকালেই খবর আসে, নদীর ওপারে হাতির দল টি রাতের মধ্যেই শিকারিপাড়া থানার বেনাগড়িয়া, সারাসডাঙ্গা দিয়ে রাতে লোটাপাহাড়ি গ্রামে ঢুকে পড়েছিল। সেখানে এক মহিলা হাতির পায়ের তলায় পিষ্ট হয়ে মারা যান। মহিলার স্বামীকেও শুঁড়ে করে তুলে আছাড় মারে একটি হাতি। গুরুতর জখম ওই ব্যক্তি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। ঠাকুরপুরা গ্রামের বাসিন্দা দেবনাথ সাউ, শুলুঙ্গার কনক হাঁসদা এ দিন বলেন, ‘‘টায়ার, খড় জ্বালিয়ে হাতে লাঠি নিয়ে শনিবার সারা রাত আমরা জেগেছি। হাতিরাও আমাদের গ্রামের দিকে আসেনি।’’ তবে, আতঙ্ক কাটেনি গ্রামবাসীদের। রবিবার বিকেল পর্যন্ত হাতির দলটি শিকারিপাড়ার সারাসডাঙ্গা এলাকা থেকে কিছুটা দূরে রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। গত ক’দিনে বীরভূমের রাজনগর ও মহম্মদবাজারে হাতির পাল ঢুকেছে। দু’জায়গা থেকেই তাদের খেদানো সম্ভব হয়েছে। বন দফতরের জেলা সহকারী আধিকারিক (এডিএফও) বিজন কুমার নাথ জানান, শিকারিপাড়া থানা এলাকায় হাতির দল এখন অবস্থান করছে। এর জন্য বন দফতরের কর্তারাও রামপুরহাটের তুম্বনি রেঞ্জে রবিবার সন্ধ্যা থেকে পৌঁছে গিয়েছেন। সঙ্গে হাতি তাড়ানোর অভিজ্ঞতা আছে, এমন ১৫ জন স্থানীয় গ্রামবাসীকেও সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। বীরভূমে ঢুকলে হাতিগুলিকে তাড়ানোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া আছে বলে বন দফতরের দাবি।